দুর্গাপুজো, লক্ষ্মীপুজো হয়ে সরস্বতী পুজো-শরৎ থেকে বসন্ত ঋতু অবধি উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে লাবড়ার ফোড়নের সুগন্ধ৷ যত বেশি তাজা শাকসব্জি দেবেন, তত বেশি সুস্বাদু হবে লাবড়া ৷ ফাইবার সমৃদ্ধ তরিতরকারি (Vegetables) এই ঋতু পরিবর্তনের সময় খাওয়া শরীর ও মন, দু’দিক দিয়েই উপাদেয় ৷
আপাতভাবে মনে হয়, লাবড়া রান্নার বুঝি কোনও ব্যাকরণ নেই ৷ তা কিন্তু নয় ৷ পরিবার ভেদে পাল্টে যায় লাবড়ার তরকারি ৷ যাঁরা পুরনো রীতি মেনে রাঁধেন, তাঁরা এতে থোড় দেবেনই ৷ আবার অনেক বাড়িতে মুলো ছাড়া লাবড়া ভাবাই যায় না ৷ সাবেক পূর্ববঙ্গীয় পরিবারে লাবড়ায় পড়বেই গাঁটি কচু, রাঙা আলু, চালকুমড়ো এবং সকলের শেষে নারকেল কোরা ৷ সুগন্ধ বাড়াতে যোগ করা হয় ঘি এবং ভাজা মশলা ৷ গোটা জিরে, মৌরি দানা, ধনেদানা এবং এলাচ পরিমাণমতো শুকনো খোলায় ভেজে মিক্সারে গুঁড়ো করে বা বেটে ভাজা মশলা তৈরি করুন ৷ লাবড়া ছাড়াও অনেক পদে ব্যবহার করতে পারবেন ৷
advertisement
বাঙালি হেঁসেলে নিরামিষ রান্নার বৈচিত্র্যের শেষ নেই৷ তবে চচ্চড়ি, বাটি চচ্চড়ি, পাঁচমিশালির তরকারির থেকে লাবড়ার স্বাদ ও রন্ধনপ্রণালী কিন্তু আলাদা ৷ মধ্যযুগীয় সময় থেকে বিভিন্ন সাহিত্যে উঠে আসে লাবড়ার বর্ণনা ৷ তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সব্জির সংযোজন অনেক পাল্টেছে ৷ বিদেশিদের হাত ধরে একে একে বাঙালির খাদ্যতালিকায় যা যা সব্জি যোগ হয়েছে, সেগুলি এসে পড়েছে লাবড়ার কড়াইয়েও ৷ এখন আলু, বিনস, সীম, ফুলকপি, বাধাকপির মতো সব্জির অবাধ বিচরণ এই পদে ৷
আরও পড়ুন : ভোগের খিচুড়ি ছাড়া পুজো হয় নাকি? শিখুন বনেদিবাড়ির আসল রেসিপি
অবশ্য কিছু রন্ধনপটিয়সীর মতে, ফুলকপি আর বাধাকপি একসঙ্গে লাবড়ায় না দেওয়াই ভাল ৷ বরং তাদের মধ্যে একটিকে দিন৷ অনেকে লাবড়ায় জল দেন না, দিলেও খুব সামান্য জলে রাঁধেন ৷ তরকারির জলীয় অংশেই হয়ে যায় রান্না ৷ যে তরকারি সিদ্ধ হতে বেশি সময় নেয়, সেগুলি আগে যোগ করা হয়৷ যেগুলি কম সময় নেয়, সেগুলি পরে৷
আরও পড়ুন : সিল্ক শাড়ির জেল্লা দীর্ঘদিন ধরে রাখতে জানুন তার যত্নের খুঁটিনাটি
তবে লাবড়ার স্বাদ অনেকাংশে নির্ভর করে কীভাবে তরকারি কাটা হয়েছে, তার উপরও ৷ লাবড়ায় ঘি, ভাজা মশলা মেশাতে ভুলবেন না ৷ নারকেল কোরার স্পর্শ এনে দেবে উৎসবের আমেজ ৷