কোভিড ভীতির মধ্যেও জানা দরকার যে, শীতের মরশুমে সাধারণ সর্দি, ফ্লু এবং আরএসভির ঝুঁকি বেশি থাকে। দেখে নেওয়া যাক এই সবের লক্ষণগুলো।
সাধারণ সর্দি
সাধারণ সর্দি হল সাধারণত উপরের শ্বাসনালীর একটি সংক্রমণ।
বলাই বাহুল্য যে, সাধারণ সর্দি বেশির ভাগ সময় ভারতের প্রায় সব প্রদেশেই শীতের মরশুমে দেখা যায়। এটি আদতে নাক এবং গলার একটি ভাইরাল সংক্রমণ। মনে রাখা দরকার যে, সাধারণ সর্দি-কাশির সময় দেখা বেশিরভাগ উপসর্গ কোভিড-এর মতোই হয়।
advertisement
সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গগুলো হল কাশি, সর্দি, নাক বন্ধ, হাঁচি এবং গলা ব্যথা। সংক্রমণ মাত্রাতিরিক্ত হয়ে গেলে, শ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, জ্বর, মাথা ব্যথা, পেশি ব্যথা, শরীরের ব্যথা দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে বমি এবং ডায়রিয়া দেখা দিতে পারে। সাধারণ সর্দি-কাশির সময়, বিশেষ করে বাচ্চাদের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা যায়।
ফ্লু
শিশুদের ক্ষেত্রে ফ্লু-র সংক্রমণ সব চেয়ে বেশি হয়।
ইনফ্লুয়েঞ্জা বা ফ্লু, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস এ এবং বি দ্বারা শরীরে প্রভাব ফেলে। এই ভাইরাসগুলি পরবর্তী সময়ে শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার কারণে পরিণত হয়।
৫ থেকে ৯ বছর বয়সি বাচ্চাদের মধ্যে ফ্লুর তীব্রতা সবথেকে বেশি থাকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে যে, শিশুরা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের ট্রান্সমিটার। তারা এই ভাইরাসকে খুব দ্রুত ছড়িয়ে দেয়। যাদের বয়স ৫ থেকে ৯ বছর, তারা সাধারণত সংক্রমণ এবং অসুস্থতার সর্বোচ্চ হার প্রকাশ করে।
ফ্লুর লক্ষণগুলো হলো কাশি, ক্লান্তি, জ্বর, মাথা ব্যথা, পেশিতে ব্যথা এবং শরীরে ব্যথা। ফ্লুতে আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও নাক দিয়ে জল পড়া, হাঁচি, গলা ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়া হয়। মাঝে মাঝেই ফ্লুয়ে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গগুলো দেখা যায়।
আরও পড়ুন: পেঁপের বীজের ফেসমাস্ক! মসৃণ ও জেল্লাদার ত্বক পেতে আজ থেকেই ব্যবহার করুন এই উপাদান
আরও পড়ুন: অকালেই চুলে পাক ধরেছে? বাজারের নামী ব্র্যান্ডকে হার মানাবে এই হোমমেড হেয়ার কালার
আরএসভি
রেসপিরেটরি সিনসিসিয়াল ভাইরাস বা আরএসভি-তেও আক্রান্ত হতে পারেন অনেকে। এই কারণে বয়স্ক ব্যক্তিদের অনেক সময় দীর্ঘ দিন হাসপাতালে ভর্তি থাকতে হতে পারে।
রেসপিরেটরি সিনসিসিয়াল ভাইরাস সংক্রান্ত রোগ অল্পবয়সী শিশুদের জন্য এবং কম রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতার ব্যক্তিদের জন্য একটি প্রাণঘাতী রোগ৷
শিশুদের মধ্যে, প্রথম সংক্রমণ গুরুতর ব্রঙ্কিওলাইটিস হিসেবে দেখা দিতে পারে। কখনও কখনও সেটা মারাত্মক হতে পারে। শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে উপরের শ্বাসনালীর সংক্রমণ তীব্র পর্যায়ে দেখা যায়। স্বভাবগত ভাবে মারণ রোগ না হলেও শিশুদের এবং বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটা প্রাণঘাতী হতে পারে।
আরএসভি সংক্রমণের সাধারণ উপসর্গগুলি হল কাশি, সর্দি বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং অবশই শ্বাসকষ্ট। আরএসভি-তে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও হাঁচি, জ্বর এবং মাথা ব্যথা অনুভব করেন।
ভাইরাল ইনফেকশনে স্বাদ এবং গন্ধের ক্ষয়
যাঁরা ভাইরাল ইনফেকশনে আক্রান্ত হন, তাঁরা প্রায়ই স্বাদ এবং গন্ধের বোধ হারিয়ে ফেলে। অন্য দিকে, কোভিড-এর প্রাথমিক পর্যায়ে, লোকেদের অনেক সময়ের জন্য স্বাদ এবং গন্ধের বোধ হারিয়ে ফেলতে দেখা গিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসে আক্রান্ত নাক কোনও কিছুর স্বাদ বা গন্ধ নেওয়ার ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।সংক্রমণ সেরে গেলে ব্যক্তি আবার স্বাদ এবং গন্ধ অনুভব করতে পারেন।
সমস্ত ভাইরাল সংক্রমণের লক্ষণ
যদিও প্রতিটি ভাইরাল সংক্রমণের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বা ট্রেডমার্ক লক্ষণ রয়েছে, তবে কিছু লক্ষণ রয়েছে যা সাধারণত সমস্ত সংক্রমণ জুড়েই শরীরে দেখা যায়। ক্লান্তি, জ্বর, মাথা ব্যথা, পেশি ব্যথা এবং শরীরে ব্যথা, সর্দি, নাক বন্ধ এবং গলা ব্যথার মতো লক্ষণগুলো সাধারণত সমস্ত ভাইরাল সংক্রমণে দেখা যায়।
ফলে কোন ধরনের ভাইরাল সংক্রমণ হয়েছে, সেটা বোঝার একমাত্র উপায় হল ডাক্তারি পরীক্ষা।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)