যেখানে উপরে বইছে কংসাবতী ক্যানেলের জল আর নীচে দিয়ে ছুটছে ভারতীয় রেল। এমন দৃশ্য সারাদেশের মধ্যে মাত্র দুটি জায়গাতে রয়েছে বলে দাবি রেল কর্তাদের। যার মধ্যে ঝাড়গ্রামের ঝাড়াগেড়িয়া অন্যতম। আমরা সচরাচর দেখে থাকি রেলের আন্ডার পাশ, যেখানে পারাপার করেন সাধারণ মানুষ। আর ঝাড়গ্রামের ঝাড়াগেড়িয়ায় ঠিক উল্টো আন্ডারপাসে পার হচ্ছে ট্রেন, উপরে সেতুতে পাশ হয় জল যা বিরল দৃশ্য।
advertisement
দক্ষিণ-পূর্ব রেলে একটি মাত্র জায়গাতে এ ধরনের ক্যানেল রয়েছে। যেখানে উপর দিয়ে জল এবং নীচ দিয়ে ট্রেন লাইন গিয়েছে। ঝাড়গ্রাম থেকে গিন্ধনি যাওয়ার রেলপথে ঝাড়াগেড়িয়ায় সৌন্দর্যায়ন নজর কাড়ছে সকলের। পর্যটন মানচিত্রে ঝাড়গ্রাম জেলাকে তুলে ধরতে উদ্যোগী হয় রেল। সেখানে শুধুমাত্র নির্মাণ নয়, স্থানীয় ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে দেওয়াল চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
ঝাড়গ্রামের ঐতিহ্যবাহী রাজবাড়ির আদলে তৈরি করা হয়েছে নতুন স্টেশন ম্যানেজারের বিল্ডিং। ঝাড়গ্রাম যেহেতু পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের তরফে ঝাড়গ্রামের ঐতিহ্য ও লোকসংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটিয়ে ছবি গুলি আঁকা হয়। ইতিমধ্যেই স্থানটি সাধারণ মানুষের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। শীতের সময় নানা জায়গা থেকে পর্যটকেরা আসে পিকনিক করতে জমে ভিড়। স্থানীয়দের দাবি, পুনরায় একে সাজিয়ে তোলা হোক, প্রয়োজনে বাগান গড়া হোক, প্রতিদিনই লোকেরা ভিড় জমায়। কারণ, জেলার মধ্যে এখানেই শুধু নীচ দিয়ে ট্রেন লাইন আর উপর দিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে জল বয়ে যাচ্ছে। সাধারণত যা দেখা যায় না।
ঝাড়াগেড়িয়া জলসেতুতে পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে আঁকা হয় ছবি, রেল লাইনের দুই পাশে বসান হয় সবুজ কার্পেটের মত নরম ঘাস। পাশাপাশি ক্যানেলের দুই ধারকে মজবুত রাখার জন্য মাটি, বস্তা ও দড়ির সাহায্যে সিঁড়ির মতো ধাপ তৈরি করা হয়। রেলের ফাঁকা জমিতে রোপন করা হয় নানা ফুল-ফলের গাছ। বর্তমানে সেগুলি ফিকে হয়েছে। নব রূপে সাজিয়ে তোলা হলে যেমন সৌন্দর্য বাড়বে ঠিক তেমনই পর্যটকের সংখ্যাও বাড়বে।