রমাপ্রশন্ন মুখোপাধ্যায় ও সুধাংশু মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে দীর্ঘ প্রাচীন রঘুনাথগঞ্জের বাড়ালা গ্রামের মুখোপাধ্যায় বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো চলে আসছে সাড়ম্বরে। প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ বছরের পুরনো এই পুজোকে ঘিরে একাধিক গল্প কাহিনী আছে।
মুখোপাধ্যায় বাড়ির দালানে জগদ্ধাত্রী মায়ের পুজোর আয়োজন করা হয়। নবমীর দিনে সপ্তমী, অষ্টমী, এবং নবমীর পুজো সম্পন্ন হয় একদিনেই। মায়ের ভোগের আয়োজনে থাকে সাত থেকে নয় ভাজা-সহ অন্নের ভোগ, মাছের ভোগও দেওয়া হয় মাকে। বলিদান প্রথাও চলে আসছে, সেই সময় থেকে মাংসের ভোগ নিবেদন করা হয় মাকে। এই পুজোয় কয়েকশো মানুষ মুখোপাধ্যায় বাড়িতে পার পেড়ে বসে প্রসাদ খান।
advertisement
মুর্শিদাবাদের বাড়ালা গ্রামে মোট চারটি জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। তবে মুখোপাধ্যায় বাড়ির জগদ্ধাত্রী পুজো অতি প্রাচীন এবং অন্যতম। পরিবারের সদস্য দ্বারকা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্রায় ২৭০ বছর আগে মুখোপাধ্যায় পরিবারের দুই সদস্য রমাপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং সুধাংশু মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরেই জগদ্ধাত্রী পুজোর শুভ সূচনা হয় মুখোপাধ্যায় বাড়িতে। এই পুজো উপলক্ষে পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য, যে প্রান্তেই থাকুন না কেন, দুটো দিনের জন্য উপস্থিত হন মুখোপাধ্যায় বাড়িতে। তবে এখন পুজোটি বাড়ির পুজো হলেও, তা সার্বজনীন রূপ ধারণ করেছে। গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষ মায়ের দর্শন করতে মুখোপাধ্যায় বাড়ির মন্দির প্রাঙ্গনে উপস্থিত হন। জগদ্ধাত্রী পূজা ঘিরে বাড়ালা গ্রামে একটি বিশেষ মেলাও বসে। এই মায়ের পুজোর নিরঞ্জনের একটি বিশেষত্ব আছে। মাকে নিয়ে সারা গ্রাম প্রদক্ষিণ করার পর পরিবারের পুকুরপাড়ে নিয়ে আসা হয় মায়ের মূর্তি নিরঞ্জনের উদ্দেশ্যে। সেখানেই গ্রামের প্রত্যেকটি মানুষ বাতাসা-সহ মিষ্টি, ফলের হরিলুট দেয়। পুকুর পাড়ের প্রত্যেকটি বাড়ির মহিলারা মায়ের উদ্দেশ্যে নিজের বাড়ির সামনে প্রদীপ হাতে গোল করে দাঁড়িয়ে থাকে পুরো পুকুর ঘিরে। সে এক মনোরম দৃশ্য। সেই আলোয় একটা সময় আলোকিত হয়ে উঠতো পুকুরপাড় ।





