সূক্ষ্ম সতর্কতার লক্ষণ
হাতে-পায়ে ব্যথা অনেক সময়েই গুরুতর হতে পারে। যার পিছনে সাধারণ থেকে জটিল কারণ থাকতে পারে। তবে সাধারণত আমরা শরীরে যতক্ষণ না তাৎপর্যপূর্ণ লক্ষণ বুঝতে পারি ততক্ষণ ব্যথা নিয়ে খুব একটা গুরুত্ব দিই না। সেক্ষেত্রে একটি রিপোর্ট অনুসারে পায়ে ব্যথা শরীরের উচ্চ কোলেস্টেরলের লক্ষণীয় ইঙ্গিত। এছাড়াও উরু, নিতম্ব এবং পায়ে ব্যথাও উচ্চ কোলেস্টেরলের সঙ্গে সম্পর্কিত।
advertisement
এই জায়গায় ব্যথা কেন হয়
উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে রক্তনালীতে প্লাক জমা হয়। যার ফলে ধমনী সংকুচিত হয় এবং রক্তের প্রবাহকে সীমাবদ্ধ হয়ে যায় বলে পায়ের পেশিতে ব্যথা হয়। রক্তের প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে সামান্য কাজ করলেই সাধারণত ব্যথা হয় এবং খানিকটা বিশ্রামে নিলেই সেই ব্যথা চলে যায়। এই ধরনের ব্যথা পেশির কাজ করার জন্য পর্যাপ্ত রক্ত না পাওয়ার ইঙ্গিত দেয়।
কোলেস্টেরলের কারণে ব্যথা কেমন হয়
সাধারণত উচ্চ কোলেস্টেরলের কারণে পায়ে ব্যথা কিংবা থাই, কাফ এবং নিতম্বের ব্যথা দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে। সামান্য কাজ করলে কিংবা এমনকী হাঁটলেও পায়ে ব্যথা হতে পারে। মাঝে মাঝেই ব্যথা, ক্র্যাম্পিং, পায়ে অসাড়তা এবং ক্লান্তি হতে পারে। আসলে শারীরিক সচলতায় পেশির বেশি রক্তের প্রয়োজন হয় যা রক্তনালী সংকীর্ণ হয়ে গেলে সমস্যা হয়। যার ফলে পায়ে ধীরে ধীরে ব্যথা হতে থাকে। বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে এই ধরনের ব্যথা চলে যায় এবং কাজ করলে ফের ব্যথা শুরু হতে পারে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় একেই ইন্টারমিটেন্ট ক্লডিকেশন বলে।
পা এবং পায়ের পাতায় অন্যান্য লক্ষণ
বেশি কোলেস্টেরলের কারণে পায়ে জ্বালাপোড়া, পায়ের ত্বকের রঙ পরিবর্তন, পায়ের আঙুল বা পায়ে ঘা, পায়ে ঘন ঘন ত্বকের সংক্রমণের মতো লক্ষণগুলি হতে পারে। তাই এই ধরনের লক্ষণ খেয়াল করলে কোলেস্টেরল পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
কোলেস্টেরলের আদর্শ মাত্রা কত হওয়া উচিত
সাধারণত কোলেস্টেরল প্রোফাইল টেস্টে থাকে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল) কিংবা খারাপ কোলেস্টেরল, হাই ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) কিংবা ভাল কোলেস্টেরল, ট্রাইগ্লিসারাইড। যদি মোট কোলেস্টেরল ২০০ এমজি/ডিএল-এর কম থাকে তাহলে সেটি স্বাভাবিক বলে ধরা হয়৷ ২০০ থেকে ২৩৯ এমজি/ডিএল-এর মধ্যে কোলেস্টেরল থাকলে কোলেস্টেরল বর্ডারলাইনে রয়েছে এবং ২৪০ এমজি/ডিএল-এর উপরে থাকলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি রয়েছে বলে মনে করা হয়। ডায়াবেটিস এবং হার্টের রোগ থাকলে এলডিএলের মাত্রা ১০০ এমজি/ডিএল থাকা উচিত।
হাই কোলেস্টেরল কেন হয়
অনেক সময়েই অস্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইলের কারণে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যায়। সেক্ষেত্রে ফ্যাটি খাবার এবং প্রসেসড খাবার খাওয়া, স্থূলতা, ধূমপান, মদ্যপানের মতো লাইফস্টাইল সম্পর্কিত বিষয়গুলি শরীরে কোলেস্টেরল বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়াও পারিবারিক ইতিহাস থেকেও কোলেস্টেরল হতে পারে। তাই পরিবারে কারও কোলেস্টেরল বেশি থাকলে কোলেস্টেরল বাড়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
উচ্চ কোলেস্টেরল কীভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়
কোলেস্টেরল সব সময়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কারণ উচ্চ কোলেস্টেরল থেকে হার্ট অ্যাটাক, কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট এবং স্ট্রোকের মতো জীবনহানির অসুখ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে৷ যদিও প্রয়োজনে ওষুধ খাওয়া উচিত, তবে লাইফস্টাইল অভ্যাসে পরিবর্তন করাও গুরুত্বপূর্ণ। শারীরিকভাবে বেশি সচল থাকা, প্রসেসড খাবার কম খাওয়া এবং মরশুমি ফল ও সবজি বেশি খাওয়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)