মৃগীরোগ এবং হরমোনাল/ মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল:
মহিলাদের মধ্যে সব থেকে জরুরি হরমোন হল ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন। ইস্ট্রোজেন হল প্রো-কনভালস্যান্ট (খিঁচুনি ঝুঁকি বাড়ায়) এবং প্রোজেস্টেরন হল অ্যান্টি-কনভালস্যান্ট (খিঁচুনির ঝুঁকি কমায়)। মহিলাদের জীবনের বিভিন্ন সময়ে হরমোনের মাত্রা এবং ভারসাম্যে পরিবর্তন হয়। আর সেই সময়ে খিঁচুনির মতো উপসর্গের ঝুঁকি বাড়ে। আবার কিছু মহিলা মাসিক চক্র চলাকালীনই নির্দিষ্ট সময়ে বিশেষ করে পিরিয়ডসের ঠিক আগেই এই সমস্যার সম্মুখীন হন। যাকে ক্যাটামেনিয়াল এপিলেপ্সি বলা হয়।
advertisement
মৃগীরোগে আক্রান্ত মহিলার গর্ভনিরোধক:
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যান্টি-সিজার ড্রাগের কারণে হরমোনাল বার্থ কন্ট্রোল কম কার্যকরী হয়ে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার উল্টোটাও হয়ে থাকে। ফলে যাঁদের মৃগীরোগ রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে গর্ভনিরোধক হিসেবে কন্ডোম অথবা ডায়াফ্রাম কিংবা ইন্ট্রা-ইউটেরাইন ডিভাইস ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয়।
আরও পড়ুন: স্যানিটারি প্যাড বা ট্যাম্পন ব্যবহার করছেন? মারাত্মক বিপদ! শুনুন বিশেষজ্ঞের কথা
মহিলাদের মৃগীরোগ এবং ফার্টিলিটি:
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যাঁদের মৃগীরোগ আছে, তাঁদের সন্তানের সংখ্যা কম। এর সম্ভাব্য কারণ হল এঁদের মধ্যে সন্তানধারণ সংক্রান্ত ভয় কাজ করে। আবার সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, স্বাভাবিক মহিলাদের মতোই গর্ভাবস্থার হার দেখা যায় মৃগীরোগী মহিলাদের মধ্যে।
মৃগীরোগ এবং প্রেগনেন্সি:
অধিকাংশ মৃগীরোগী মহিলার ক্ষেত্রেই মাতৃত্বের সফরটা সুন্দর হয় না। অনিয়ন্ত্রিত খিঁচুনির কারণে অবস্থার অবনতি ঘটে। সেই সঙ্গে ওষুধের মাত্রার উপরেও নজর রাখতে হয়। গবেষণা বলছে, কিছু ওষুধ আবার সন্তানের অস্বাভাবিকতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: কোভিডে মাস্কের ব্যবহার, নয়া রোগের দাপট! ‘মাস্কনি’র শিকার নন তো? বলছেন বিশেষজ্ঞ
স্তনদুগ্ধদান এবং খিঁচুনির ওষুধ:
সদ্যোজাতকে স্তন্যপান করানোর অনেক উপকারিতা রয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অ্যান্টি-সিজার ওষুধের প্রভাব স্তনদুগ্ধের উপর খুবই নগণ্য। তবে শিশুর কিছু বিষয়ের উপর নজর রাখা বাঞ্ছনীয়।
মৃগীরোগ এবং সামাজিক কলঙ্ক
এই রোগে আক্রান্ত মহিলাদের নানা বাধা-বিপত্তির মুখে পড়তে হয়। পড়াশোনা, চাকরি, কাজকর্ম সব কিছুতেই প্রভাব পড়ে। এমনকী তাঁরা সমাজে তেমন মেলামেশাও করতে পারেন না। এমনও অনেক ঘটনা রয়েছে, যেখানে দেখা যায় মৃগীরোগে আক্রান্ত মহিলাকে নানা ভাবে বিদ্রুপ এবং অবহেলার মুখে পড়তে হয়। এই সমস্যা রুখতে এবং মৃগীরোগী মহিলাদের জীবনের মান উন্নত করতে এগিয়ে আসতে হবে স্বাস্থ্য এবং সমাজকর্মীদের।