তার মানে এই নয় যে খুব বেশি পরিশ্রম করতে হবে। এমনও নয় যে সকাল বিকেল জিমখানায় গিয়ে ঘাম ঝরাতে হবে! সামান্য ইচ্ছে থাকলে বাড়িতেই নিজের মতো করে তৈরি করে নেওয়া যায় সুস্থ থাকার কারখানা। যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম— কিচ্ছুটির দরকার নেই।
ইন্টারনেট দুনিয়ায় এমন বহু ভিডিও ভাইরাল হয়। যার মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয় মাত্র মিনিট ১৫ খালি হাতে ব্যায়াম করলেও নির্মেদ, ঝরঝরে শরীর পাওয়া সম্ভব। এগুলি মূলত উর্ধ্বাঙ্গের ব্যায়াম। বিশেষত হাতের। যার জন্য কোনও রকম সরঞ্জামের প্রয়োজন হয় না। কাঁধ, বাইসেপ, ট্রাইসেপ এবং পিঠের উপরের অংশের জন্য এধরনের শরীরচর্চা করা যেতে পারে। তবে নিয়মিত অভ্যাস করা দরকার।
advertisement
আরও পড়ুন: উত্তরবঙ্গের এই ইকো পার্কের একদিকে বিশাল পাইন বন, অন্যদিকে রোদ ঝলমলে কাঞ্চনজঙ্ঘা! মিস করবেন না
এগুলি বেশ খানিকটা সহজ। আর তেমনই মজাদার। দেখে নেওয়া যাক তেমনই কয়েকটি ব্যায়াম—
রুফ রেইজার—
নয় দশকে আদনান সামির সেই গানটা মনে আছে— ‘থোড়ি সি তু লিফ্ট করা দে’? দু’হাত তুলে ঠিক যে ভাবে আদনান ঈশ্বরকে বলছিলেন জীবনে খানিকটা উন্নতি করিয়ে দেওয়ার কথা, অনেকটা সেই ঢঙেই সেরে ফেলতে হবে ব্যায়াম।
পিঠ টান টান করে দাঁড়িয়ে মাথার উপর দু’হাত তুলে ধরতে হবে। মনে মনে ভেবে ফেলতে হবে, বাড়ির ছাদখানা ঠিক মাথার উপরই চেপে বসেছে। দু’হাতের পাতা দিয়ে ছাদটা ধরে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কিন্তু এমনটা পারা যাবে না। তাই হাত আবার নেমে আসবে। তখন আবার সর্বশক্তি দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে হাত নিচে নেমে আসার সময় দুই কনুই যেন কাঁধের সমান্তরালে থাকে। কখনই তা একেবারে বুক পা পেট অবধি নেমে আসবে না। তেমন ভুল হলে আর বাইসেপ, ট্রাইসেপ গড়া হবে না!
আরও পড়ুন: কোভিড কাটিয়ে বছরের প্রথম দিন হাজারদুয়ারিতে রেকর্ড ভিড়, দেখুন
শরীর চর্চায় একটু ছন্দ আনতে চাইলে অনায়াসে এর সঙ্গে একটু লাফালাফি করে নেওয়া যেতে পারে। চালিয়ে দেওয়া যেতে পারে পছন্দের গান। দরকার হলে আদনান সামিই বাজানো যেতে পারে। তবে খেয়াল রাখতে হবে হাত কখনই ঝুঁকে পড়বে না। তা সব সময় কাঁধের সমান্তরালে থাকবে।
ওয়ালনাট ক্রাশার—
হাত দিয়ে ভাঙতে হবে আখরোট।
সত্যি না। মনে মনে ভেবে নিতে হবে, দু’হাতের মুঠোয় রয়েছে দু’টি ওয়ালনাট। মুঠোর জোর বাড়িয়েই ভেঙে ফেলতে হবে তাকে। পিঠ টান টান করে দাঁড়িয়ে হাতের মুঠোর মানস-আখরোট নিয়ে দু’কাঁধ সমান্তরালে রেখে মুঠো মাথার উপর তুলে রাখতে হবে। এবার মুঠোয় এমন চাপ দিতে হবে যাতে টুকরো টুকরো হয়ে যায় আখরোট। সেই চাপের ফলেই কাঁধ থেকে কনুই পর্যন্ত অংশ বেশ খানিকটা কুঁকড়ে আসবে পিঠের দিকে। চাপ বজায় রাখতে হবে। একবার চাপ হালকা হবে। আবার সর্বশক্তি দিয়ে আখরোখ ভেঙে ফেলার চেষ্টা করে যেতে হবে।
অ্যাঞ্জেল আর্মস—
এবার একটু নিশ্চিন্তে শুয়ে পড়া যেতে পারে। তবে মাটিতে। অথবা, প্রায় শক্ত এবং সমান্তরাল কোনও জায়গায়। মাথা, পিঠ, পা একে বারে টান টান থাকবে। এ বার শরীরের দু’পাশে ছড়িয়ে দিতে হবে দু’টি হাত। আকাশের দিকে ফেরানো থাকবে হাতের তালু। যেন কোনও পরি মেলে রেখেছে তার ডানা। এ বার আস্তে আস্তে ওই ছড়ানো ডানা থুড়ি হাত দু’টিকে মাথার উপর নিয়ে যেতে হবে। আবার আস্তে আস্তে তা নামিয়ে আনতে হবে আগের অবস্থানে, কাঁধের সমান্তরালে। যেন ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে চলেছে কোনও অ্যাঞ্জেল।
ঠিক এই ভঙ্গিমা করা যেতে পারে যে কোনও প্রশস্ত জায়গায় দাঁড়িয়ে কিংবা উপযুক্ত জায়গায় বসেও। তবে হ্যাঁ, মনে রাখতে হবে, নিতম্ব, শিরদাঁড়া, মাথা যেন সোজা ও সমান্তরাল থাকে।
পাম পুশ—
এটাও অনেকটা রুফ রেইজারের মতো। তবে এখানে ভাবনা-চিন্তার জায়গা কম। কল্পনা করার দরকার নেই ছাদ ভেঙে পড়ছে মাথার উপর। বরং নিজের ঘরের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেই হবে। দরজার ফ্রেমের ভিতরে সোজা দাঁড়িয়ে পড়ে দু’হাত কাঁধের সমান্তরালে রেখে ধরে ফেলতে হবে দু’দিকের ফ্রেম। এবার প্রাণপণ চেষ্টা করে যেতে হবে দরজার ফ্রেম দু’টিকে একটু বড় করে দেওয়ার। মানে, দু’হাতে সমানে দু’দিকে ঠেলা দিয়ে যেতে হবে। নিজে নড়লে চলবে না।
এই সব কিছু করার আগে খানিকটা ওয়ার্ম-আপ করে নেওয়ার দরকার। আর মিনিট পনেরো ব্যায়ামের পর খানিক বিশ্রাম নেওয়াও উচিত।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)