ওবেসিটি কী?
ওবেসিটি হল একটি জটিল রোগ। যার ফলে দেহে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্যাট তৈরি হয়। আর এটা বডি মাস ইনডেক্স বা বিএমআই-এর ভিত্তিতে পরিমাপ করা হয়। সাধারণত কারওর বিএমআই যদি ২৫ থেকে ২৯.৮-এর মধ্যে থাকে, তাহলে তাঁর ওজন বেশি বলে ধরা হবে। আবার যাঁদের বিএমআই ৩০ অথবা তার বেশি, তাঁরা ওবেসিটিতে আক্রান্ত বলেই ধরে নেওয়া হবে।
advertisement
ওবেসিটির মাত্রা -
ক্যাটাগরি ১ ওবেসিটি: বিএমআই ৩০–৩৪.৯
ক্যাটাগরি ২ ওবেসিটি: বিএমআই ৩৫–৩৯.৯
ক্যাটাগরি ৩ ওবেসিটি: বিএমআই ৪০ অথবা তার বেশি
ওবেসিটি কীভাবে প্রেগনেন্সির উপর প্রভাব ফেলে?
হবু মায়েদের খুবই সাধারণ সমস্যা হল ওবেসিটি। এটা একাধিক জটিলতার ঝুঁকি অনেকাংশে বাড়িয়ে দিতে পারে।
আরও পড়ুন: বিরল রোগ নির্ণয়ে নতুন দিশা! লঞ্চ হল FSHD1 জেনেটিক স্ক্রিনিং টেস্ট
জেনারেল হাইপারটেনশন:
এটা মূলত উচ্চ রক্তচাপ। প্রেগনেন্সির দ্বিতীয় ট্রাইমেস্টারের সময় থেকে এই সমস্যা শুরু হতে থাকে। আর জটিলতাও বাড়িয়ে দেয়।
প্রি-এক্ল্যাম্পশিয়া:
এই ধরনের গুরুতর জেস্টেশনাল হাইপারটেনশন সাধারণত হয়ে থাকে প্রেগনেন্সির দ্বিতীয় ভাগে। কিংবা সন্তান প্রসবের পরেও এটা হতে পারে। এই সমস্যার জেরে ওবেসিটিতে আক্রান্ত মহিলার লিভার এবং কিডনি ফেলিওরের ঝুঁকি থাকে। ফলে কখনও কখনও খিঁচুনি, হার্ট অ্যাটাক এবং স্ট্রোকের মতো সমস্যাও হতে পারে। ভ্রূণের বাড়বৃদ্ধি এবং প্লাসেন্টার সমস্যার মতো ঝুঁকিও বাড়ে।
ম্যাক্রোসোমিয়া:
এই অবস্থায় ভ্রূণটি স্বাভাবিকের তুলনায় বড় থাকে। যার ফলে প্রসবের সময় আগত সন্তানের বার্থ ইনজুরি হতে পারে।
জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস:
প্রেগনেন্সির সময় ব্লাড সুগারের মাত্রা বেড়ে যায়। ফলে মাঝেমধ্যেই বাচ্চার অতিরিক্ত বাড়-বৃদ্ধি হয়। এর জেরে সিজারিয়ান ডেলিভারি করতে হয়। যাঁদের জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস হয়, তাঁদের পরবর্তী কালে ডায়াবেটিস মেলিটাসের ঝুঁকি তৈরি হয়। এমনকী সেটা সন্তানেরও হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া:
প্রেগনেন্সিতে ঘুমোনোর সময় রোগীর শ্বাসপ্রশ্বাস আচমকা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে হবু মা ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং প্রি-এক্ল্যাম্পশিয়া, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ও ফুসফুসের সমস্যার ঝুঁকি বাড়ে।
জন্মসংক্রান্ত ত্রুটি:
ওবেসিটিতে আক্রান্ত মহিলাদের সন্তানের জন্মসংক্রান্ত ত্রুটি দেখা দিতে পারে।
ডায়াগনস্টিক প্রক্রিয়ায় সমস্যা:
আল্ট্রাসাউন্ড পরীক্ষার সময় অতিরিক্ত ফ্যাটের কারণে ভ্রূণের শারীরবৃত্তীয় সমস্যাগুলি ধরা পড়ে না। এমনকী প্রসবের সময় ভ্রণের হৃদস্পন্দন পরীক্ষা করতেও অসুবিধা হয়।
সুস্থ-স্বাভাবিক প্রেগনেন্সির জন্য কী করণীয়?
ওজন কমানোর একটি ভাল প্ল্যান বাছতে হবে। সাঁতার কাটা এবং হাঁটার মতো এক্সারসাইজ নিয়মিত অন্তত ৩০ মিনিট করতে হবে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া উচিত। কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম এবং প্রোটিন-ফ্যাটের পরিমাণ থাকবে বেশি।
ভাত জাতীয় খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে লাগাম দিতে হবে।
চিনি এড়িয়ে চলতে হবে। তার বদলে এমন খাবার খেতে হবে, যার মধ্যে প্রাকৃতিক ভাবেই মিষ্টি উপস্থিত।