ডিম্বাশয়ে সিস্ট থাকার সমস্যাকে PCOS বলা হয়। এতে মাসিকচক্র ব্যাহত হতে পারে, স্থূলতা, ব্রণর মতো সমস্যা তো থাকেই। পরবর্তীকালে সন্তান ধারণেও বাধা আসতে পারে।
advertisement
অন্যদিকে, ডায়াবেটিস হলে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। শরীরে ইনসুলিন প্রতিরোধ গড়ে ওঠে, যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করে। এতে PCOS-র ঝুঁকিও বাড়ে।
আরও পড়ুন- এক টাকাও খরচ হবে না, শিকড় থেকে দূর হবে ইউরিক অ্যাসিড! উপায় জানালেন চিকিৎসক
PCOS এবং ডায়াবেটিস উভয়ই মহিলাদের বন্ধ্যাত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত। ডায়াবেটিস, সন্তান ধারণের সুযোগ প্রায় ১৭ শতাংশ কমিয়ে দেয়। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মহিলারা প্রায়ই তাদের প্রজনন বছরগুলিতে মাসিক সমস্যার সম্মুখীন হন। অনিয়মিত মাসিক, মাসিক না হওয়া (সেকেন্ডারি অ্যামেনোরিয়া), এমনকী মাসিক বন্ধ (অলিগোমেনোরিয়া) হয়ে যাওয়ার সমস্যাও হতে পারে। তাছাড়া ডিমের গুণমান এবং পরিমাণ উভয়ই দ্রুত নষ্ট হতে পারে। এতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা হ্রাস পায়, গর্ভপাত বা মৃতপ্রসবের ঝুঁকি বাড়ায়।
ডায়াবেটিস এবং PCOS অনেক সময়ই একসঙ্গে দেখা দেয়। হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে অনিয়মিত মাসিক বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়। এতে টেসটোসটেরন, লুটেইনাইজিং হরমোন (LH) এবং ইস্ট্রোজেনের বে়ড়ে যেতে পারে। কমে যায় ফলিকল-স্টিমুলেটিং হরমোন (FSH)-এর মাত্রা। এমন হলে PCOS থাকলে ডিম্বস্ফোটন ঘটে না। তখন প্রাকৃতিক গর্ভধারণ অসম্ভব হয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন- ‘ব্লাউজ খুলে শুধু ব্রা পরতে হবে’, অমিতাভের সঙ্গে শ্যুটিংয়ে মেজাজ হারান মাধুরী, পরের ঘটনা আরও ভয়ঙ্কর
PCOS এবং ডায়াবেটিস থাকলে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি থাকে। ফলে কার্ডিওভাসকুলার রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং কিছু ক্ষেত্রে এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যানসারও হতে পারে। সেক্ষেত্রে ইনসুলিন প্রতিরোধের মোকাবিলা করা, স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখা দরকার। প্রয়োজনে চিকিৎসা করাতে হবে। একই সঙ্গে উর্বরতা পুনরুদ্ধার করা চিকিৎসাও করাতে হবে।
তবে চিকিৎসার চেয়ে বেশি কাজে দিতে পারে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। স্বাস্থ্যকর জীবনধারা মেনে চলতে হবে। নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে কম চর্বি এবং চিনিযুক্ত সুষম খাদ্য, গোটা শস্য, কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার, ফলমূল এবং শাকসবজি রাখতে হবে। ওজন হ্রাস করলে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়তে পারে, তাতে ডিম্বস্ফোটন আবার শুরু হতে পারে। নিয়মিত ব্যায়াম করাও প্রয়োজন।
তবে শুধু শরীর নয়। পেশাগত ও ব্যক্তিগত জীবনে বর্ধিত কাজের সময় এবং নানারকম চ্যালেঞ্জ থেকে মানসিক চাপ, উদ্বেগ তৈরি হতে পারে। নির্দিষ্ট সময়য় অন্তর বিরতি নিয়ে ভারসাম্য রাখতে হবে। প্রিয়জনের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলতে হবে। প্রয়োজনে অবশ্যই মনোবিদের সাহায্য নিতে হবে।
তবে এরপরেও সমস্যা থাকলে অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাকটিভ টেকনোলজি (ART) যেমন ইনভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (IVF)-এর সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। প্রথমেই লক্ষণ চিহ্নিত করা গেলে চিকিৎসায় সুফল মিলবে তাড়াতাড়ি। তাই ন্যূনতম উপসর্গ থাকলেই একজন গায়নোকোলজিস্ট, রিপ্রোডাক্টিভ এন্ডোক্রিনোলজিস্ট বা এন্ডোক্রিনোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে।