হার্ট অ্যাটাক সাধারণত জীবনযাত্রাজনিত রোগ। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের কারণে বাড়ে রোগের আশঙ্কা। রক্তবাহী নালীতে ফ্যাট জমা হওয়ার ফলে হৃদযন্ত্রের পেশীতে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়। এর মূলে রয়েছে জীবনযাত্রা সংক্রান্ত সমস্যা। এই কারণে প্রথম থেকেই হার্টের যত্ন নেওয়া আবশ্যক।
advertisement
কার্ডিওভাস্কুলার রোগের মূল ঝুঁকির বিষয়গুলিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। যথা- পরিবর্তনযোগ্য এবং অপরিবর্তনযোগ্য। অপরিবর্তনযোগ্য রিস্ক ফ্যাক্টরের তালিকায় পড়ে বয়স, লিঙ্গ, জিনগত বিষয় অথবা পারিবারিক রোগের ইতিহাস। আর পরিবর্তনযোগ্য রিস্ক ফ্যাক্টরের আওতায় পড়ে হাইপারটেনশন, ডায়াবেটিস মেলিটাস, ধূমপান, উচ্চ কোলেস্টেরল, ওবেসিটি, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ভুলভাল খাবার খাওয়ার অভ্যাস।
আরও পড়ুন: উপসর্গ না থাকলেও প্রস্টেট ক্যানসার? যৌনজীবন বিপন্ন? ভুল ধারণা ভাঙলেন বিশেষজ্ঞ
হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর এবং ব্যালেন্স ডায়েট অভ্যাস করা আবশ্যক। উচ্চ ফাইবার এবং কম ফ্যাটযুক্ত খাবার ডায়েটে যোগ করতে হবে। শাকসবজি, ফল, বিনস, মাছ, লো ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার, হোল গ্রেন খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। এমনকী অলিভ অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাওয়া উচিত। এর পাশাপাশি লবণ, চিনি, অ্যালকোহল, রেড মিট, ফুল ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার এবং ভাজাভুজিতে রাশ টানতে হবে। আর একটি ঝুঁকির বিষয় হল ধূমপান। এটা রক্তচাপ এবং প্রদাহ বাড়িয়ে দেয়। যার ফলে আর্টারিতে ফ্যাট জমে। এমনকী পরোক্ষ ধূমপানও কিন্তু যথেষ্ট ক্ষতিকর।
আরও পড়ুন: আকাশছোঁয়া দাম! টমেটোর বিরহ ভুলে হেঁসেলে ব্যবহার করুন এই ৭ উপাদান, স্বাদে টেক্কা দেবে
এমনকী এ-ও দেখা গিয়েছে যে, বেশির ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হল ধূমপান। আর এই অভ্যাস ত্যাগ করার সঙ্গে সঙ্গেই এই ঝুঁকিও কমে যায়। এমনকী তা ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত শারীরিক কসরত না করাটাও একটা ঝুঁকির বিষয়। আসলে নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে ওজন, কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমনকী ডায়াবেটিসের সম্ভাবনাও অনেকাংশে কমে। নির্দেশিকাতে বলা হয়েছে যে, প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট মতো মাঝারি তীব্রতার এক্সারসাইজ করা উচিত। তবে অতিরিক্ত তীব্রতার এক্সারসাইজ করার প্রয়োজন নেই। সঠিক ওজন এবং বিএমআই বজায় রাখা বাধ্যতামূলক। ভারতীয়দের ক্ষেত্রে আদর্শ বিএমআই হওয়া উচিত ২৩-এর কম। পুরুষদের ক্ষেত্রে ভুঁড়ি কমিয়ে কোমরের আদর্শ মাপ রাখা উচিত ১০২ সেন্টিমিটারের কম। আর মহিলাদের ক্ষেত্রে তা হওয়া উচিত ৮৯ সেন্টামিটারের নীচে।
এছাড়া ইনসমনিয়া বা অনিদ্রা, অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার মতো ঘুম সংক্রান্ত সমস্যাও হার্টের রোগ, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই প্রতিদিন প্রায় ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমোনো আবশ্যক। সেই সঙ্গে মানসিক চাপও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত। আসলে মানসিক চাপের কারণে কর্টিসল এবং অন্যান্য হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।