এই খিঁচুনি আসলে এক ধরনের অনিচ্ছাকৃত পেশি সঞ্চালন। অনেক সময় দেখা যায় রোগী অস্বাভাবিক নড়াচড়া করে, বা কাঁপতে থাকে। আবার অনেক সময় স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। সাধারণত ২০ সেকেন্ড থেকে মিনিট দুয়েকের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু যদি দেখা যায় মিনিট পাঁচেক এমন খিঁচুনিতে ভুগছে রোগী, তবে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।
advertisement
আচমকা কেউ এমন খিঁচুনিতে আক্রান্ত হলে ঠিক কী করা উচিত জেনে নেওয়া যাক অ্যাস্টর সিএমআই হাসপাতাল বেঙ্গালুরুর নিউরোলজি ও এপিলেপ্টোলজি বিভাগের কনসালট্যান্ট চিকিৎসক কেনি রবীশ রাজীবের কাছ থেকে—
রবীশের মতে, এধরনের সমস্যা খুব সাধারণ হলেও কখনও কখনও তা মারাত্মক হতে পারে। সেক্ষেত্রে রোগীর ক্ষতি কম করতে চিকিৎসকের পরামর্শ যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি চিকিৎসাও প্রয়োজন।
কী ভাবে খিঁচুনি আক্রান্তকে সাহায্য করা যায়:
কোনও বড় ক্ষতি হয়ে যাওয়ার আগেই আশপাশে থাকা মানুষকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে।
১. রোগীর পাশে ভিড় জমতে দেওয়া যাবে না, যাতে তিনি খোলা হাওয়ায় শ্বাস নিতে পারেন।
২. আঁটসাঁট জামা থাকলে যতটা সম্ভব তা ঢিলে করে দিতে হবে। বিশেষত ঘাড়ের কাছে।
৩. কাছে কোনও ধারালো বস্তু যেমন কাচ, আয়না, লোহার পাত থাকলে তা সরিয়ে ফেলাই ভাল।
আরও পড়ুন: এই ৪ উপাদানেই সুস্থ থাকবে লিভার! এই নিয়ম মানলে চিরকালের মতো বিদায় নেবে যকৃতের সমস্যা
৪. রোগীর পাশে থাকতে হবে। সঙ্গে একটা বালিশ রাখা যেতে পারে।
৫. কতক্ষণ খিঁচুনি হচ্ছে তা খেয়াল রাখতে হবে।
৬. অচেনা মানুষের এমন হলে তাঁর ব্যাগে বা হাতে কোনও জরুরি নম্বর রয়েছে কিনা তা খুঁজে দেখতে হবে।
৭. রোগীর মুখে কোনও কিছু ঢোকানো যাবে না। জল খাওয়ানোর প্রয়োজন নেই যতক্ষণ না তিনি সুস্থ হচ্ছেন।
৮. খিঁচুনি থেমে গেলে রোগীকে একপাশে কাত করে দিতে হবে, চোয়াল সামনে দিকে রাখতে হবে। যাতে তিনি শ্বাস প্রশ্বাস নিতে পারেন। আসলে খিঁচুনির সময় রোগীর জিহ্বা গোল হয়ে পিছন দিকে চলে যেতে পারে। সেসময় শ্বাস কার্য বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
চিকিৎসকের পরামর্শ:
পাঁচ মিনিটের বেশি খিঁচুনি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাছাড়া,
১. যদি দ্বিতীয় বার খিঁচুনিতে আক্রান্ত হন রোগী,
২. খিঁচুনি থেমে যাওয়ার পর সাড়া না দেন,
৩. খিঁচুনির পর জ্বর এলেও চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে হবে।
যে সমস্ত মানুষের অন্য কোনও রকম স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, যেমন, ডায়াবেটিস বা অন্তঃস্বত্ত্বা মহিলাদের ক্ষেত্রে আরও বেশি সতর্কতা প্রয়োজন।