অক্যুপেশনাল এবং রিক্রিয়েশনাল হিয়ারিং লস:
বাগান তৈরি অথবা কাঠের কাজের ক্ষেত্রে মানুষ ৮৫ ডেসিবেলের কাছাকাছি শব্দের সংস্পর্শ আসে। কোনও রকম সুরক্ষা ছাড়া যদি কম করে ২ ঘণ্টা এই মাত্রার শব্দ শোনা হয়, তাহলে শ্রবণশক্তির ক্ষতি হতে বাধ্য। তবে রিক্রিয়েশনাল লিসেনিং আবার নিরাপদ। তবে ব্যক্তিগত শ্রবণ সংক্রান্ত যন্ত্রে শব্দের মাত্রা পৌঁছয় ১০৫ থেকে ১১০ ডেসিবেলে। এই মাত্রার শব্দ ৫ মিনিটের মধ্যেই শ্রবণশক্তি নষ্ট করে দিতে সক্ষম।
advertisement
শ্রবণশক্তি নষ্টের প্রভাব:
সিডিসি-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ৩৬০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ আজ শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সমস্যার সম্মুখীন। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সমস্যা দীর্ঘ দিন পর্যন্ত যদি অবহেলা করা হয়, তাহলে তা রোগী এবং তাঁদের পরিবারের এইচআরকিউওএল (স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জীবনের মান)-এর উপর প্রভাব ফেলে। শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার ফলে রোগী বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারেন। এতে ডিপ্রেশন, উত্তেজনার মতো সমস্যা বাড়ে এবং কাজের ক্ষমতা হ্রাস পেতে থাকে। বয়স্কদের ক্ষেত্রে টেম্পোরাল লোবে জ্ঞান লোপ এবং বিশ্বব্যাপী ব্রেন অ্যাট্রফির সঙ্গে যুক্ত।
আরও পড়ুন : ১০ জনের মধ্যে ৭ জন ভারতীয়ের দেহে রয়েছে এই বিশেষ উপাদানের ঘাটতি, দেখা দিচ্ছে ঘোর বিপদ
কিন্তু শিশুদের ক্ষেত্রেও শ্রবণশক্তি হ্রাসের ফলাফল গুরুতর হতে পারে। জন্ম থেকে কিংবা শৈশব থেকেই যারা শ্রবণশক্তি লোপ পাওয়ার সমস্যায় ভোগে, তাদের কথা বলার শক্তি, ভাষা এবং ব্যবহারগত সমস্যাও তৈরি হয়। এর প্রভাব গিয়ে পড়ে শিক্ষাক্ষেত্রের পারফরমেন্সের উপরেও। আর এ ক্ষেত্রে সমস্যা অবহেলা করার হার গোটা বিশ্বেই অথ্যন্ত বেশি। তবে ভাল বিষয় হল, প্রথমেই রোগ ধরা পড়লে তার চিকিৎসাও দ্রুত শুরু করা সম্ভব হয়। এতে সমস্যা গুরুতর হওয়ার আগেই তা নাগালের মধ্যে চলে আসে।
শ্রবণশক্তি হ্রাসের ক্ষেত্রে কী করণীয়?
শ্রবণশক্তির কারণ হিসেবে দায়ী বিষয়গুলি বুঝে তবেই পদক্ষেপের ধরন ঠিক করা জরুরি। যেমন – কানের ময়লার কারণে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে। সেক্ষেত্রে ময়লা পরিষ্কার করলেই বিষয়টা আয়ত্তে চলে আসবে। তবে কানের সংক্রমণের ক্ষেত্রে হয়তো সার্জারি করার অবস্থা তৈরি হতে পারে। কানের ভিতরের অংশের ক্ষতি থেকে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেলে সেটা ফিরে পাওয়া সম্ভব নয় বলা চলে। সেক্ষেত্রে ডাক্তাররা শ্রবণ যন্ত্র ব্যবহার কিংবা ককলিয়ার প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। মৃদু শ্রবণশক্তি হ্রাসের ক্ষেত্রে ওটিসি শ্রবণ যন্ত্র ব্যবহার করা যায় ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে। তবে মাঝারি থেকে গভীর সমস্যার ক্ষেত্রে প্রেসক্রিপশন স্টাইল শ্রবণ যন্ত্র ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করার আগে অবশ্যই ইএনটি স্পেশালিস্টের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।