কোভিড অতিমারির আতঙ্ক আমরা ভুলে যাইনি। তার মধ্যে হাজির অ্যাডিনোভাইরাস। ফের কি আতঙ্কের পালা হাজির?
দেখুন, অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণ কিন্তু সারা বছরই কমবেশি চলতে থাকে। তবে প্রতি বারই শীতের শেষে বা বসন্তের শুরুতে সংক্রমণ বৃদ্ধি পায়। এ বছর অবশ্য অনেক বেশি অ্যাডিনোভাইরাস আক্রান্ত রোগী দেখা যাচ্ছে। সংক্রমণের হার এ বছর বেশি।
advertisement
এই সংক্রমণ ছড়ায় কীভাবে?
ড্রপলেট ইনফেকশন থেকে ছড়াতে পারে। মানে, আক্রান্তের হাঁচি-কাশি-সর্দি থেকে জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। কনট্যাক্ট বা স্পর্শ থেকেও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাচ্চাদের ডায়াপার পরিবর্তনের সময়েও সতর্ক থাকবেন। কারণ মল থেকেও ছড়িয়ে পড়তে পারে এই জীবাণু।
অ্যাডিনোভাইরাসে আক্রান্ত হলে উপসর্গ কী দেখা দেবে?
এই রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে বাচ্চারা । তাই বাবা মায়েদের একটু সতর্ক থাকতে হবে। বাচ্চার খাওয়ার পরিমাণ আচমকা কমে যাওয়া, প্রসাব কম হওয়া, বমি হওয়া, খিঁচুনি হওয়া , শ্বাসকষ্ট -- এই উপসর্গগুলি দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে যোগাযোগ করতে হবে। তাছাড়া বেশির ভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গ কিন্তু সাধারণ জ্বরের মতোই। জ্বরের সঙ্গে সর্দিকাশি, গলাব্যথা তো আছেই। সেইসঙ্গে দেখা দিতে পারে পেটের গণ্ডগোলও। পাশাপাশি বমি, ডায়রিয়াও হতে পারে। তুলনামূলকভাবে কম হলেও এই সংক্রমণে দেখা দিতে পারে ইউটিআই বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে কিন্তু ডায়রিয়া এবং ইউটিআই সংক্রমণ পেয়েছি। সংক্রমণ জটিল হলে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়ার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে।
এই উপসর্গগুলি কি ছোট বড় বয়স নির্বিশেষে দেখা যাচ্ছে?
হ্যাঁ, উপসর্গ একইরকম। তবে একটা কথা বলব। Flu-এর মতো মাইল্ড উপসর্গ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উপসর্গ মৃদুই থাকছে। কিছু ক্ষেত্রে জটিল আকার ধারণ করছে। যদি আক্রান্ত ব্যক্তির কোনও জটিল ক্রনিক ও জটিল অসুখ থাকে তাহলে কিন্তু অ্যাডিনো ভাইরাস জটিল হয়ে যেতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি পাওয়ারও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এই জীবাণু থেকে মৃত্যুর আশঙ্কাও কিন্তু সাঙ্ঘাতিক বেশি নয় একেবারেই। তাই অযথা আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। তবে বার বার বলব, আগে থেকেই কোনও জটিল অসুখ থাকলে সতর্কতা নিন।
অ্যাডিনো ভাইরাস সংক্রমণ এড়াতে হলে কী করতে হবে?
-বেসিক হাইজিন বজায় রাখতে হবে। কোভিডের সময় যে স্বাস্থ্যরীতি মানতে হত, সেগুলি অনুসরণ করতে হবে। মাস্ক পরা, নিয়মিত হাত ধোওয়া-এ অভ্যাস বন্ধ করলে চলবে না। বাইরে থেকে এসে ভাল করে হাত ধোওয়া, খাওয়ার আগে ও পরে হাত ধুয়ে নেওয়া-এই কাজগুলি করতেই হবে।
জ্বর হলেই কি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে?
জ্বর হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। তাঁর পরামর্শমতো চলুন। আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। ডাক্তার যা বলেন, সেগুলি মেনে চলুন।
অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বিশেষ কোনও ডায়েট আছে কি?
স্পেশাল কোনও ডায়েট নেই। যে কোনও ভাইরাল ইনফেকশনে শরীরে জলের পরিমাণ অত্যন্ত কমে যায়। সেটা এই অসুখেও প্রযোজ্য। তাই প্রথম থেকেই বেশি করে জলপান করতে হবে, যে কোনও ফর্মে। দেখতে হবে শরীরে যেন fluid-এর অভাব না হয়। সেইসঙ্গে প্রোটিন খান। শাকসব্জি, ফল ডায়েটে রাখুন। বাড়িতে তৈরি সাধারণ, স্বাস্থ্যকর খাবার খান। সঙ্গে দরকার পর্যাপ্ত বিশ্রাম।