রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা একবার বেড়ে গেলে তাকে আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা কঠিন। সবচেয়ে বড় কথা হল, কোলেস্টেরল বেড়েছে কি না সেটা প্রথম দিকে বোঝাই যায় না, যতক্ষণ না বাড়াবাড়ি হচ্ছে। তাই কোলেস্টেরলকে চোখে চোখে রাখার একমাত্র উপায় হল, নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করা।
আরও পড়ুন: মধুমেহ রোগীদের ৭ দিনের ডায়েট প্ল্যান, চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পরামর্শ পুষ্টিবিদদের
advertisement
কোন বয়স থেকে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত: আমেরিকান হার্ট অ্যা সোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০ বছর বয়স থেকেই কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিৎ। মুম্বইয়ের কার্ডিওলজিস্ট প্রবীণ কুমারের কথায়, ‘৯ বছর বয়সেই একবার রক্তে লিপিডের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। তারপর ১৭-২০ বছর বয়সে ফের একবার পরীক্ষা করে দেখার পরামর্শ দেওয়া হয়’।
চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানোটা অভ্যাসে পরিণত করতে হবে। সমীক্ষা অনুযায়ী, ভারতের শহুরে জনগোষ্ঠীর ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ এবং গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কোলেস্টেরলের সমস্যায় ভুগছেন। সমীক্ষা অনুসারে, গত ২০ বছরের মধ্যে মোট কোলেস্টেরল, এলডিএল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা শহুরে জনগোষ্ঠীর মধ্যে বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সময়ের আগেই সন্তান ধারণের কথা ভাবছেন? শরীরে এই সমস্যা থাকলে হতে পারে ভয়ঙ্কর ফল
বয়স অনুযায়ী কোলেস্টেরলের আদর্শ মাত্রা কত: ১৯ বছর বয়স পর্যন্ত, মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে ১৭০ মিলিগ্রামের নিচে থাকা উচিত। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কোলেস্টেরলের স্বাভাবিক মাত্রা ২০০-এর কম। মাত্রা ২০০ থেকে ২৩৯-এর মধ্যে ঘোরাফেরা করলে সতর্ক হতে হবে।
রক্তে কোলেস্টেরলের রিপোর্ট কীভাবে দেখতে হয়: কোলেস্টেরলের মধ্যে রয়েছে এইচডিএল বা উচ্চ ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন, এলডিএল বা কম ঘনত্বের লাইপোপ্রোটিন এবং ট্রাইগ্লিসারাইড। এলডিএলকে খারাপ কোলেস্টেরল বলা হয়, এইচডিএল হল ভাল কোলেস্টেরল এবং ট্রাইগ্লিসারাইড, যা ক্ষতিকারক হিসাবে বিবেচিত না হলেও হৃদরোগের সঙ্গে যুক্ত। রক্তে বিভিন্ন কোলেস্টেরলের মাত্রা নির্ধারণের জন্য একটি সম্পূর্ণ কোলেস্টেরল পরীক্ষা করা হয়। কোলেস্টেরলের মাত্রা প্রতি ডেসিলিটারে মিলিগ্রাম বা এমজি/ডিএল হিসেবে পরিমাপ করা হয়।
রক্তের মোট কোলেস্টেরলের মাত্রা যখন ২০০-এর নিচে থাকে, তখন এটি স্বাভাবিক বলে বিবেচিত হয়। বর্ডারলাইন কোলেস্টেরল হল যখন রিডিং ২০০ থেকে ২৩৯-এর মধ্যে হয়। ২৪০-এর উপরে কোলেস্টেরলকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করা হয়। এলডিএল-এর স্তর সবচেয়ে বড় নির্ধারক। এলডিএল-এর স্বীকৃত মাত্রা ১০০-এর নিচে এবং যাঁদের করোনারি আর্টারি ডিজিজ রয়েছে তাঁদের জন্য ডাক্তাররা এটি ৭০-এর নিচে রাখার পরামর্শ দেন। একই ভাবে, ট্রাইগ্লিসারাইড এবং এইচডিএল-এর স্বাভাবিক মাত্রা যথাক্রমে ১৪৯ এবং ৪০-এর নিচে।