খাওয়াদাওয়ার বিধি নিষেধ যেমন খানিকটা মেনে চলা উচিত। তেমনই প্রয়োজন থেকে নিয়মিত শরীরচর্চা। আজকাল বহু মানুষই জিমে গিয়ে ঘাম ঝরাতে ভালবাসেন। কিন্তু অনেকেই আবার সেই একঘেয়ে নিয়ম মাফিক শরীরচর্চা করতে পছন্দ করেন না। অথচ, ওজন কমানো হোক বা ঝরঝরে থাকার চেষ্টা, কিছু দৈনন্দিন চর্চাতেও সম্ভব। তার জন্য না জিমে যেতে হবে, না কোনও রকম কসরত করতে হবে। আর জিমের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু খরচও বাঁচিয়ে ফেলা সম্ভব হবে।
advertisement
কিন্তু জিমের ওয়ার্কআউটের ঝামেলা এড়িয়ে কী ভাবে সক্রিয় রাখা যায় শরীরকে? কিছু সহজ উপায় রয়েছে, যা আসলে খুবই মজার। দেখে নেওয়া যাক এক নজরে—
সিঁড়ি ভাঙা
আজ কাল মানুষের জীবন বেশ খানিকটা যন্ত্র নির্ভর হয়ে উঠেছে। বহুতল বাড়িতে এলিভেটর থাকেই। রেল স্টেশন, এয়ারপোর্টেও রয়েছে এসকেলটর। ফলে সিঁড়ি ভাঙার মতো কাজ আজকাল আর প্রায় কোথাও করতেই হয় না। অথচ, সিঁড়ি ভেঙে উপরে ওঠা এবং সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামার সময় মানুষের পায়ের পেশির কাজ হয়। তাতে শরীরের নিম্নাংশের পেশিগুলি সুগঠিত হতে পারে, সুস্থ হাড় এবং হাড়ের জোড় মজবুত হয়। মাংস পেশি সবল যেমন হয়, তেমনই কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যের উন্নতিও হতে পারে। যা সুস্থ শরীর, পর্যাপ্ত ওজন অর্জন এবং বজায় রাখতে সাহায্য করতে পারে, বলা যায় এটি একটি সেরা উপায়।
লাফ-দড়ি
স্কিপিং রোপ বা লাফ-দড়ি নিয়ে কত খেলাই তো ছোটবেলায় খেলা হয়েছে। বড় হয়ে কি সেখানা ব্রাত্য হয়ে গিয়েছে! আর একবার ছোটবেলায় ফিরে যেতে পারলে আর কিছু না হোক স্বাস্থ্যের উন্নতি কিন্তু হতেই পারে। মনও ভাল থাকবে।
দড়ি নিয়ে ছোট ছোট লাফ দিলে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি হতে পারে। এতে সর্বাধিক ক্যালোরি পোড়ানো সম্ভব, যা ওজন কমাতে সহায়তা করতে পারে। পাশাপাশি হাড়ের ঘনত্ব তৈরি হয় এবং তা বজায় রাখতে সাহায্য করে। দড়ি টপকে টপকে লাফানোর মাধ্যমে কোর এবং পায়ের পেশি শক্তিশালী করা সম্ভব।
হাইকিং
হাইকিং ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে। আসলে এ হল বেড়ানোরই একটি পর্যায। যাকে বলা যেতে পারে পদব্রজে ভ্রমণ। নিঃসন্দেহে এটি একটি কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম। যে কোনও পছন্দের জায়গায় বিশেষত প্রকৃতির মাঝখানে হেঁটে এলে শুধু হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যের উপকার হতে পারে তা নয়, বরং মানসিক চাপ ও উদ্বেগও কেটে যেতে পারে নিমেষে। সাধ্যে কুলোলে সামান্য চড়াই বেয়ে ওঠা যেতে পারে। সাধারণ ওয়ার্কআউটের চেয়ে একটি অনেক বেশি আকর্ষণীয় কারণ, এতে অবসর যাপনের আনন্দ উপভোগ করা যেতে পারে। যদি কেউ ক্যালোরি ক্ষয় করতে চান, নিজের কোর পেশিকে শক্তিশালী করতে চান অথবা, ওজন কমাতে চান তা হলে হাইকিং সেরা উপায় হতেই পারে।
আরও পড়ুন: কোলেস্টেরল বাড়ছে? ওজন কমাতে চান? এই ফলের পাতা এভাবে ব্যবহার করুন, চমকপ্রদ উপকার
দেওয়ালে তুলে রাখা পা
খুব সহজ এবং আরামদায়ক একটি পথ হতে পারে দেওয়ালে পা তুলে দিয়ে খানিকটা সময় কাটানো। অবসর সময়ে দেওয়ালের পাশে শুয়ে ৯০ ডিগ্রি কোণে পা উপরের দিকে তুলে রাখলে পিঠের নিচের, কোমরের ব্যথা উপশম হয়, থাইরয়েডের কার্যকারিতা বাড়ে, মাংস পেশির শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। মানসিক আরামও পাওয়া যায়, যার ফলে মন ভাল হতে পারে।
গানের তালে
সব থেকে ছন্দোময় ব্যায়াম হতে পারে নাচ। নাচের মাধ্যমে শরীর সক্রিয় রাখা সব থেকে ভাল উপায় হতে পারে। এমন হতেই পারে কেউ হয় তো নাচ শেখেননি কখনও। তিনি মনে করতে পারেন, কী ভাবে নাচবেন! সেটা কোনও বিষয় নয়। নিজের পছন্দের কোনও গান চালিয়ে দিয়ে একান্তে নিজের মতো করে নাচা যেতে পারে। আবার বন্ধু বা পরিবারের সঙ্গেও উপভোগ করা যেতে পারে এই বিষয়টি। দারুন মজাদার হতে পারে ওজন কমানোর এই বিশেষ চর্চা। সেই সঙ্গে উন্নত হতে পারে হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্যও। আর মনপসন্দ গানের সুর, নাচের বিভঙ্গ মানসিক চাপ এবং বিষণ্নতার ঝুঁকিও কমিয়ে দিতে পারে।
হাঁটার সময় থাক ঝোঁক
হাঁটার সময় খানিকটা ঝোঁক নিয়ে হাঁটলে তাতে আরও একটু কার্যকারিতা বাড়তে পারে। বেশ খানিকটা স্বাভাবিক হাঁটার পর হাঁটু ঝুঁকিয়ে কয়েকটা ঝোঁক নিয়ে নেওয়া যেতে পারে। এতে পেশির কার্যক্ষমতা বাড়বে। কার্ডিও দিকটিও রক্ষা করা যাবে।
(Disclaimer: এই প্রতিবেদনটি কেবলমাত্র সাধারণ তথ্যের জন্য, তাই বিস্তারিত জানতে হলে সর্বদা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।)