বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের টানে পর্যটকেরা ছুটে আসেন এখানে। আর এই বোলপুর শান্তিনিকেতন থেকে কিছু দূরে অবস্থিত রয়েছে সুরুল রাজবাড়ি অথবা জমিদার বাড়ি। মাথা উঁচু করে আজও দাঁড়িয়ে নীল রঙা বিশাল এক অট্টালিকা। আর বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সুবিশাল নাটমন্দির থেকে শুরু করে মন্দির প্রাঙ্গণ। প্রতিবছর দুর্গাপুজোয় এখানে কয়েকশো মানুষ একসঙ্গে বসে পুজো দেখেন। উমার আরাধনায় গমগম করে রাজবাড়ি চত্বর।
advertisement
আরও পড়ুন: বোলপুর-শান্তিনিকেতন ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান! আপনার জন্য অপেক্ষা করছে দুর্দান্ত জিনিস, কী জানুন
প্রসঙ্গত পুরানো নথিপত্র ঘাটলে জানা যায় প্রায় অষ্টাদশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়। বর্ধমানের ছোট নীলপুরের ঘোষবাড়ির ছেলে ভরতচন্দ্র স্ত্রী বিমলা দেবীকে নিয়ে চলে আসেন সুরুলে। সন্তানলাভের আশায় গুরু বাসুদেব ভট্টাচার্যের বাড়িতে আশ্রয় নেন দু’জনে। সুরুল ছিল বৈষ্ণব ধর্মগুরু বাসুদেবের শ্রীপাট। গুরুদেবের নির্দেশেই ভরতচন্দ্র থেকে যান সুরুলে। আর বর্ধমানে ফিরে যাননি। তাঁর পুত্র কৃষ্ণহরি ও তাঁর ছেলেরা সেই সময়ে ফরাসি ও ইংরেজ কুঠিয়ালদের সঙ্গে ব্যবসা করে পরিবারের শ্রীবৃদ্ধি করেন। তাঁর আমলেই নির্মিত হয় পঞ্চরত্ন মন্দির। পরবর্তীকালে অবশ্য সম্পত্তি ও প্রতিপত্তির দৌড়ে তাঁকে টেক্কা দিয়েছিলেন নাতি শ্রীনিবাস।
১৭৮২ খ্রিস্টাব্দে সুরুলে ব্যবসা করেন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির প্রথম রেসিডেন্ট জন চিফ।ভরতচন্দ্র জন সাহেবের সঙ্গেই ব্যবসা শুরু করেন। সরকার পরিবারের মূল উপার্জন ছিল নীল চাষ থেকে। এছাড়াও জাহাজের পাল তৈরির কাপড়, চিনির ব্যবসাও ছিল সরকার পরিবারের।পরে এই পরিবারের আরেক কর্তা ব্রজবল্লভের পুত্র শ্রীনিবাস সরকারের আমলে সরকার পরিবার ফুলে ফেঁপে ওঠে।ওঁর আমলেই প্রাচীন এই দুর্গা পুজোর শ্রীবৃদ্ধি ঘটে।
আরও পড়ুন: ৪৫০০ টাকা কেজি উটের দুধের চা বানাচ্ছেন বীরভূমের দোকানদার! কোথায়, কত দাম? জানুন উপকারিতা
পুজোর ছুটিতে আপনি যদি বোলপুর শান্তিনিকেতন ভ্রমণে আসেন তাহলে বোলপুর শান্তিনিকেতনের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখার পর অবশ্যই একবার ঘুরে দেখতে পারেন এই সুরুল রাজবাড়ী। বাড়ির বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরে দেখার এক সেরা ডেস্টিনেশন হতে পারে এই রাজবাড়ী। তবে পৌঁছবেন কী ভাবে! আপনি বোলপুর শান্তিনিকেতন থেকে যে কোন ধরনের গাড়ি ভাড়া করে পৌঁছে যেতে পারবেন এখানে। আর আপনি চাইলে এখন বোলপুর শান্তিনিকেতনে বাইক অথবা স্কুটি ভাড়া দেওয়া হচ্ছে আপনি নিজের পছন্দমত যেকোনো ধরনের গাড়ি নিয়ে একদম একান্তে পৌঁছে যেতে পারবেন সুরুলে। একান্তে ছবি ক্যামেরা বন্দী করে আপনি ফিরতে পারবেন নিজের বাড়ি।