ধুলিয়ান জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো ‘বাইশ পুতুলের পুজো’ বলেই পরিচিত। এখানে দেবীর মাথার উপর শিব বিরাজমান। তাঁর উপরে থাকেন দেবী গঙ্গা। দেবীর বামদিকে থাকেন বিজয়া, নরসিংহ। শিবের ডানদিকে ভিরিঙ্গি, বামে নন্দী। একপাশে থাকেন রাম, লক্ষ্ণণ ও মকরবাহন। অন্যদিকে বিষবাহণ। সঙ্গে অসুর, সিংহ, গণেশ, কার্তিক, লক্ষ্মী ও সরস্বতী। রথের দিন প্রাচীন রীতি মেনে জমিদার রায়বাড়িতে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ।
advertisement
বর্তমানে মুর্শিদাবাদে পুজো হলেও এই পুজোর শুরু মালদহ জেলার দেওনাপুরে। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগে রাঘবেন্দ্র রায় ছিলেন জমিদার। পরবর্তীকালে বারবার গঙ্গা ভাঙন ও বন্যায় বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয় জমিদার পরিবারকে। বাধ্য হয়ে ১৮২৫ সালে কাঞ্চনতলা বা ধুলিয়ানে জমিদার বাড়ি নির্মাণ করা হয়। এই রায় বাড়ির পুজো এখনও পূর্ব পূরুষের রীতি অনুযায়ী চলে আসছে। ১১ দেবী ও ১১ দেবতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করে হয় পুজো। কৃষ্ণ নবমীতে ঘট ভরে পুজো শুরু হয়। দশমীর দিন রীতি মেনে বাড়ির মূল দরজা বহিরাগতদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জমিদার বাড়ির পুরুষেরা ঢাক বাজান। মহিলারা দেবীকে বরণ করে সিঁদুর খেলায় মাতেন। দেবীকে কাঁধে করে আজও নিয়ে যাওয়া হয় গঙ্গার ঘাটে। এখনও আয়োজন করা হয় বাইচ প্রতিযোগিতা। এক সময় ধুলিয়ান জমিদার বাড়ির বাইশ পুতুলের পুজো দেখতে ঝাড়খণ্ড থেকে গরুর গাড়িতে মানুষ আসতেন। উল্লেখ্য, সত্যজিৎ রায়ের বিখ্যাত ছবি ‘জলসাঘর’ ও ‘দেবী’ সিনেমার শুটিং হয়েছিল ধুলিয়ান জমিদার বাড়িতে।