কনজাংটিভাইটিসকে আবার ‘পিঙ্ক আই’ নামেও ডাকা হয়। তবে ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ ডাক্তাররা এই সংক্রমণের নাম মাদ্রাজ আই দিয়েছিলেন। আসলে ওই সময় গরম আর আর্দ্র আবহাওয়ায় এই সংক্রমণের দাপট বেড়েছিল। মূলত অ্যাডিনোভাইরাসই এর জন্য দায়ী। কনজাংটিভাইটিসের সঙ্গে ঠান্ডা লাগা এবং গলা ব্যথার মতো উপসর্গও দেখা দিতে পারে। আর একজনের দেহ থেকে অন্যের দেহে এই সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
advertisement
এর মূল উপসর্গগুলির মধ্যে অন্যতম হল চোখ দিয়ে ক্রমাগত জল পড়া, অস্বস্তি-চুলকানি, চোখের পিচুটি এবং লাল হয়ে যাওয়া প্রভৃতি। রোগ তীব্র আকার ধারণ করলে চোখের পাতা ফুলতে পারে এবং চোখে ব্যথাও হতে পারে। এই ব্যথা কিন্তু কান পর্যন্তও ছড়িয়ে পড়তে পারে। কারণ এই সংক্রমণের জেরে লিম্ফ নোড বেড়ে যায়। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে কর্নিয়া পর্যন্ত এই সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে (কেরাটাইটিস)। এর ফলে চোখের দৃষ্টিও ঝাপসা হয়ে যায়।
মোটামুটি এক-দুই সপ্তাহের মধ্যেই সেরে যায় সংক্রমণ। তবে বিরল কিছু ক্ষেত্রে কেরাটাইটিসের সমস্যা মাসের পর মাস কিংবা বছরের পর বছর ধরেও থাকতে পারে। আসলে এই ভাইরাসের বিভিন্ন উপ-প্রকারও রয়েছে। ফলে তা একাধিক বার সংক্রমণ ঘটাতে পারে। আর এই সংক্রমণ ঠেকাতে বারবার চোখে হাত দেওয়া উচিত নয়। আর যদি হাত দিতেও হয়, তাহলে হাত বারবার পরিষ্কার কিংবা স্যানিটাইজ করতে হবে।
আরও পড়ুন- জবাফুলের মতো লাল চোখ নিয়ে ভিড় ডাক্তারখানায়; রইল কনজাংটিভাইটিস প্রতিরোধের বেশ কিছু উপায়
রোগীর ব্যবহৃত কোনও জিনিস ব্যবহার করা যাবে না। এই সময় তাই রোগীকে আইসোলেশনে রেখে তাঁর জন্য আলাদা বাসন, সাবান, তোয়ালে, বালিশ ইত্যাদির ব্যবস্থা করা উচিত। যদিও এর কোনও কার্যকরী চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। তবে তীব্র উপসর্গের ক্ষেত্রে স্টেরয়েড আইড্রপ ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয়। নাহলে কেরাটাইটিসের ঝুঁকি বাড়ে এমনকী রোগও সারতে দেরি হয়। আবার ডায়াবেটিসের রোগীদের ইমিউনিটি কম থাকার কারণেও রোগ জটিল হয়ে উঠতে পারে।
কী করণীয় নয়?
১. জনবহুল স্থান এড়িয়ে চলা শ্রেয়।
২. হাত পরিষ্কার না করে চোখ রগড়ানো উচিত নয়।
৩. রোগীর ব্যবহৃত জিনিস ব্যবহার করা থেকে নিজেকে বিরত রাখতে হবে।
৪. সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য স্টেরয়েড আইড্রপ নৈব নৈব চ।
কী করণীয়?
১. বারবার হাত পরিষ্কার করা উচিত।
২. জলের কল, ফ্লাশ, দরজার হাত ইত্যাদিতে হাত দেওয়ার পরে স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে হবে।
৩. বারবার চোখে হাত দেওয়া এড়ানোর জন্য সুরক্ষামূলক আই গিয়ার ব্যবহার করা আবশ্যক।
৪. ডায়াবেটিস রোগীদের সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৫. হাইজিন বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।