ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ জেলার ভাগীরথী নদীর পশ্চিম পাড়ের ভূখণ্ড অনেক প্রাচীন, যা রাঢ় অঞ্চল নামে পরিচিত এবং পূর্ব পাড়ের ভূখণ্ড, বাগরি অঞ্চল নামে পরিচিত যা তুলনায় অনেক নবীন। অতীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নৃপতির বিজিত রাজ্যের রাজধানী হবার সুবাদে অসংখ্য স্থাপত্য গড়ে উঠেছিল এই জেলায়। সেই সকল অতি প্রাচীন স্থাপত্য অধিক সমৃদ্ধ করেছে এই রাঢ় অঞ্চলকে।
advertisement
মৌর্য, গুপ্ত, সেন, পাল ইত্যাদি রাজাদের রাজত্বকালে নির্মিত বিভিন্ন স্থাপত্য আজ কালের গর্ভে। আবার ক্ষীণ হলেও কিছু স্থাপত্য আজও অতীত গৌরবের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদীঘির কাছে চন্দনবাটিতে অবস্থিত চন্দনবাটি শিব মন্দির আজও সেই গর্বিত অতীত অধ্যায়ের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মন্দিরটি তুলনায় নবীন হলেও অধিষ্ঠিত শিবলিঙ্গটি অনেক প্রাচীন। সম্ভবত পাল আমলের। পাল ও সেন আমলে চন্দনবাটি শিব মন্দির সংলগ্ন এই অঞ্চলটি মৃত্যুঞ্জয়পুর নামে পরিচিত ছিল।
আরও পড়ুন : সঙ্গীকে ঠকান না, পরকীয়া করেন না! বিয়ে বা প্রেমের জন্য নিরাপদ ৫ রাশি
কিন্তু কালের বিবর্তনে এই প্রাচীন ইতিহাস মাটির নীচে চাপা পড়ে যায়। বিষয়টি সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে আসে বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে। বাংলা ১৩৩৪ সাল নাগাদ প্রাচীন এই মৃত্যুঞ্জয়পুর, জিয়াগঞ্জের নেহালিয়া রাজবংশের উত্তর পুরুষ সুরেন্দ্র নারায়ণ সিংহের জমিদারির অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেই সময় এই জেলার প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক পুরাসম্পদ সংগ্রহে সুরেন্দ্র নারায়ণ সিংহ অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন। সেই সূত্রে রায়বাহাদুর সুরেন্দ্র নারায়ণ সিংহ, তাঁর বন্ধু আজিমগঞ্জ নিবাসী জমিদার নির্মল কুমার সিংহ নওলক্ষাকে চন্দনবাটি সংলগ্ন এই অঞ্চলে খননের কাজ করবার অনুরোধ করেন ।
জমিদার নির্মল কুমার সিংহ নওলক্ষা সশরীরে সেই খননকার্য পরিচালনা করেন। এই খননের ফলে নব কলেবরে উদ্ভাসিত হয় এক প্রাচীন ইতিহাস। তাই শিবরাত্রিতে এই মন্দিরে ভক্তদের ভিড় থাকে চোখে পড়ার মতো। পুণ্যতিথির আগে সেজে উঠছে মন্দির চত্বর।