পরাণের পান্তুয়া নামের নেপথ্যে রয়েছে বড় এক কারণ। অবিভক্ত বাংলাদেশ থেকে পেটের তাগিদে ফরিদপুর জেলা থেকে কাটোয়ায় গঙ্গা তীরবর্তী বারোয়ারিতলায় এসেছিলেন সুরেন্দ্রনাথ কুণ্ডু। বারোয়ারিতলায় তিনি একটি ছোট্ট মিষ্টির দোকান খুলেছিলেন। প্রথম সেখান থেকেই তিনি লম্বা সাইজের ক্ষীরের পান্তুয়া তৈরি করতে শুরু করেন। সুরেন্দ্রনাথ বাবুর তিন ছেলে। তাঁদের মধ্যে ছোট ছেলে প্রাণকৃষ্ণ কুণ্ডু বাবার কাছে পান্তুয়ার রেসিপি জেনে শুরু করেন পান্তুয়া তৈরির কাজ। পরবর্তীতে সেই প্রাণকৃষ্ণ মানুষের কাছে ‘পরাণ’ হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে পরাণের পান্তুয়া নামেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে কাটোয়ার এই দোকান। তপন কুণ্ডু বলেন, “এই মিষ্টি কীভাবে তৈরি হয় সেই রেসিপি আমরা জানাইনা। আমাদের কোনও কারিগর নেই। নিজেরাই তৈরি করি এই মিষ্টি। এটাই আমাদের সম্পদ। একবার যে এই মিষ্টির স্বাদ নেবে, তাকে বারবার আসতে হবে।”
advertisement
দোকানের কর্ণধারের কথায় বর্তমানে দৈনিক প্রায় দু হাজার পিস পান্তুয়া বিক্রি হয়। তবে শুধু পান্তুয়া নয়, রয়েছে আরও বিভিন্ন ধরনের মিষ্টি। দূর-দূরান্ত থেকে এই পান্তুয়ার স্বাদ নিতে ছুটে আসেন বহু মানুষ। চাঁদু হাজরা নামের এক ক্রেতা জানিয়েছেন, “এই মিষ্টির স্বাদ সত্যিই অসাধারণ।”
বিভিন্ন নেতা, মন্ত্রী থেকে শুরু করে অনেকেই এই পান্তুয়ার স্বাদ উপভোগ করেছেন। দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও গিয়েছে পূর্ব বর্ধমানের এই জনপ্রিয় মিষ্টি। আমেরিকা , জাপান-সহ বিভিন্ন দেশে পাড়ি দিয়েছে কাটোয়ার পরাণের পান্তুয়া। বর্তমানে সর্বনিম্ন ১০ টাকায় পাওয়া যায় এই মিষ্টি। আজও স্বাদ ও ঐতিহ্যের জোরে নিজের জায়গা ধরে রেখেছে পূর্ব বর্ধমানের এই মিষ্টি।
বনোয়ারীলাল চৌধুরী