অর্জুন গাছ একটি মূল্যবান ঔষধি উদ্ভিদ। এটি সাধারণত রাস্তার ধারে, বনে, পার্কে এবং বাড়ির আশেপাশে পাওয়া যায়। এই গাছের প্রতিটি অংশের ঔষধি গুরুত্ব রয়েছে। এই গাছের বাকল, পাতা, ফল এবং শিকড় সবই ঔষধি গুণে পরিপূর্ণ। এই গাছ স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষভাবে উপকারী বলে মনে করা হয়। তবে অনেকেই এই গাছের গুরুত্ব এবং এর ব্যবহার সম্পর্কে খুব বেশি জানেন না। এই গাছটি ঐতিহ্যবাহী ওষুধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি অনেক স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এই গাছের বিভিন্ন অংশ আয়ুর্বেদিক ওষুধেও ব্যবহৃত হয়।
advertisement
জেলা হাসপাতাল বারাবাঁকির চিকিৎসক ডা. অমিত ভার্মা (এমডি মেডিসিন) লোকাল 18-কে বলেন যে, অর্জুন একটি ঔষধি উদ্ভিদ। এর পাতা, ফল, বাকল এবং শিকড় আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এর অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে। এতে ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের মতো অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা আমাদের অনেক রোগ থেকে রক্ষা করে।
আরও পড়ুন– আগামী ৭ জুলাই, সোমবার কি দেশ জুড়ে সরকারি ছুটি ? জেনে নিন বিশদে
দারচিনি এবং অর্জুনের ছাল উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় খুবই উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এতে ট্রাইটারপেনয়েড রাসায়নিক পাওয়া যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এই দুটিরই উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। তাই, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের অর্জুনের ছাল এবং দারচিনির একটি ক্বাথ তৈরি করে নিয়মিত পান করা উচিত।
আবহাওয়া পরিবর্তন বা সংক্রমণের কারণে প্রায়শই জ্বর হয়। এমন পরিস্থিতিতে, জ্বরের লক্ষণগুলি উপশম করতে অর্জুনের ছাল খুবই কার্যকর বলে মনে করা হয়। অর্জুনের ছালের একটি ক্বাথ তৈরি করে ২০ মিলি পরিমাণে পান করলে জ্বর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও, ১ চা চামচ অর্জুনের ছালের গুঁড়ো গুড়ের সঙ্গে খেলে জ্বরের তীব্রতাও কমে। এই প্রতিকার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায় এবং সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
কুষ্ঠরোগের মতো গুরুতর ত্বকের সমস্যায় অর্জুনের ছাল খুবই উপকারী বলে বিবেচিত হয়। এর ছালের গুঁড়ো এক চা চামচ জল বা দুধের সঙ্গে খাওয়া উপকার দেয়। এছাড়াও, জলে অর্জুনের ছাল ঘষে ত্বকে লাগালে রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও, অর্জুনের ছালের ক্বাথ পান করলে কুষ্ঠরোগেও উপকার পাওয়া যায়। এই ছাল শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য অর্জুনের ছাল খাওয়া খুবই উপকারী হতে পারে। এতে উপস্থিত বিশেষ উপাদান কিডনি এবং লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তাই, অর্জুনের ছাল এবং দারচিনির ক্বাথ পান করলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য তা খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।