TRENDING:

Anti biotics: ডাক্তার না দেখিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন? শরীরের ক্ষতি করবেন না, বলছেন বিশেষজ্ঞ

Last Updated:

anti biotics: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে যে, অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং অপব্যবহারের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধের কারণে সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১.২৭ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটে।

impactshort
ইমপ্যাক্ট শর্টসলেটেস্ট খবরের জন্য
advertisement
দেখতে গেলে ভারতে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার নির্বিচার বললেও কম বলা হয়। সামান্য সর্দি-কাশি থেকে গায়ে ব্যথা, অ্যান্টিবায়োটিক নেওয়া হয় মুড়ি-মুড়কির মতো। আসলে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার সম্পর্কে সচেতনতার ঘর অভাব রয়েছে।
অ্যান্টিবায়োটিক
অ্যান্টিবায়োটিক
advertisement

তবে এর দোষ সম্পূর্ণভাবে ডাক্তারদের উপর চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। এটা ঠিক যে অনেক ডাক্তার ব্যাপকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশনে লিখে থাকেন। কিন্তু আরও বেশি সংখ্যক মানুষ কিন্তু শুধুমাত্র একটি পুরনো প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে বা অন্য কারও থেকে অ্যান্টিবায়োটিক ধার নিয়ে বা ডাক্তার না দেখিয়েই ওষুধের দোকান থেকে কিনে ঠাণ্ডা লাগার মতো সাধারণ সমস্যা থেকে অবিলম্বে উপশম চান। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, ভারত হল অ্যান্টিবায়োটিকের সবচেয়ে বড় উৎপাদক এবং উপভোক্তা।

advertisement

এমনিতেই ভারতীয়দের ফ্লুরোকুইনোলোনস, সেফালোস্পোরিন এবং কার্বাপেনেমসের প্রতিরোধের মাত্রা যথেষ্ট উচ্চ। গোদের উপর বিষফোড়ার মতো অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধেরও অনেক উদাহরণ নানা রিপোর্টে উঠে আসছে। আর সেটাই একটা হুমকির মতো মাথা তুলে ধরছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানাচ্ছে যে, অ্যান্টিবায়োটিকের অতিরিক্ত ব্যবহার এবং অপব্যবহারের ফলে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবায়োটিকের প্রতিরোধের কারণে সারা বিশ্বে প্রতি বছর ১.২৭ মিলিয়ন লোকের মৃত্যু ঘটে।

advertisement

অ্যান্টিবায়োটিকের ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম কী? গুরুগ্রামের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. নেহা গুপ্তা ব্যাখ্যা করে বলেন, "আমাদের শরীর বিভিন্ন কারণে সংক্রমিত হয়। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের বিরুদ্ধে কাজ করে এমন ওষুধগুলিকে বলা হয় অ্যান্টিবায়োটিক। এগুলো ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি দমন করে। অ্যান্টিবায়োটিকগুলি জীবন রক্ষাকারী এবং তাই অনেক সময় একে ‘ম্যাজিক বুলেট’ বলা হয়ে থাকে৷ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়ম হল ‘যথাযথ রোগ নির্ণয় ছাড়া সেগুলি না নেওয়া’। এটি শুধুমাত্র একজন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে নেওয়া উচিত।" তিনি যোগ করেন, "অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার সংক্রমণের কারণ এবং এর জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়ার উপর নির্ভর করে। তাই রোগ নির্ণয় ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারে লাগাম টানা খুব জরুরি।”

advertisement

উদাহরণস্বরূপ, যদি একজন ব্যক্তির ত্বকে সংক্রমণ হয় তবে সংক্রমণের বিস্তার প্রতিরোধ করার জন্য সেই ব্যক্তিকে অবিলম্বে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। মস্তিষ্কের সংক্রমণ বা মূত্রনালীর সংক্রমণের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে যেখানে অবিলম্বে অ্যান্টিবায়োটিক দিতেই হয়। বর্তমানে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় কাশি এবং সর্দির প্রচুর উদাহরণ দেখতে পাওয়া যাচ্ছে। আর এটি ভাইরাল সংক্রমণে হয়েছে না কি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ, তা পার্থক্য করা খুব কঠিন। যদি একজন ব্যক্তি জ্বর, কাশি এবং সর্দি নিয়ে ডাক্তারের কাছে আসেন এবং নাক দিয়ে জল পড়ে আর শরীরে ব্যথা থাকে, তবে সেটা ভাইরাল সংক্রমণ নির্দেশ করে। ভাইরাল সংক্রমণ সাধারনত প্রথম দু’ দিনের মধ্যে শীর্ষে ওঠে এবং তারপরে ধীরে ধীরে সংক্রমণ হ্রাস পেতে শুরু করে।

advertisement

এখন, এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে, বোঝা দরকার ফ্লু না কোভিড- অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার আগে। শ্বাসতন্ত্রের সমস্ত রোগের মধ্যে জ্বর একটি সাধারণ লক্ষণ। যাই হোক, জ্বর মানে এই নয় যে অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে। কাশি, সর্দি, কনজাংটিভাইটিস, ডায়রিয়া এবং আলসারের ক্ষতের উপস্থিতি ভাইরাল সংক্রমণের ইঙ্গিত দেয়। হঠাৎ শুরু হওয়া গুরুতর গলা ব্যথা, ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি জ্বর, মাথা ব্যথা, টনসিল ফুলে যাওয়া বা জরায়ুর লিম্ফ নোড ফুলে যাওয়া, কফ সহ কাশি ইঙ্গিত দেয় ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের। তেমনই তিন থেকে চার দিনে জ্বর ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকা, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের দিকেই আঙুল তোলে, যদিও প্রাথমিকভাবে এমন অবস্থা ভাইরাল সংক্রমণের পরে ঘটে। সুতরাং বুঝতে হবে যে, উপরের শ্বাস নালীর সংক্রমণ ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস উভয়ের দ্বারাই হতে পারে। ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা একমাত্র সেটি সঠিকভাবে নিশ্চিত করতে পারে।

সঠিক মাত্রার গুরুত্ব সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, ডা. নেহা গুপ্তা বলেন, "অ্যান্টিবায়োটিক হল ম্যাজিক বুলেট। যদি প্রয়োজন হয়, তা হলে সঠিক মাত্রায় নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু কখনওই লোকেদের এটাকে ইচ্ছেমতো খাওয়া উচিত নয়। ভুল বা বেশি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক নীল, জ্বর আসতে পারে, এমনকি লিভারও খারাপ হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই প্রথমে রোগ নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে অনেক লোকের উপরের শ্বাসনালীর সংক্রমণ রয়েছে যার সঙ্গে রয়েছে সর্দি, শরীরে তীব্র ব্যথা ব্যথা, গলা ব্যথা এবং শুকনো কাশি; এগুলো ভাইরাল সংক্রমণের দিকে নির্দেশ করে। যদি জ্বর ১০২ ডিগ্রির মতো হয়, তবেই সেটা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ নির্দেশ করে৷”

আরও পড়ুন: এক চিমটে মধু, সঙ্গে এই ৩ উপাদানে ত্বকে প্রাণ ফেরান, নজরকাড়া জেল্লায় চমকে যাবেন!

বিরল বা অ্যাটিপিকাল ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের জন্যও অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন। এগুলি আনুষঙ্গিক বা সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের সঙ্গে ভাইরাল সংক্রমণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত হয়। তাই অ্যান্টিবায়োটিক নির্ধারণের জন্য ডাক্তার দ্বারা রোগ নির্ণয়ের প্রয়োজন সব থেকে বেশি। যেমন, স্ট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়ার কারণে মস্তিষ্কের সংক্রমণ বা ফুসফুসের সংক্রমণ হলে এবং অ্যান্টিবায়োটিক সঠিকভাবে শুরু না করা হলে ব্যাকটেরিয়া রক্তের মাধ্যমে অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে। একই ভাবে মূত্রনালীর সংক্রমণের ক্ষেত্রে, যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে এটি কিডনি এবং অন্যান্য অঙ্গকেও প্রভাবিত করতে পারে।

আরও পড়ুন: চেষ্টা করেও ওজন বাড়ছে না? আকর্ষণীয় শরীর পেতে ডায়েটে আনুন এই বদল

অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে ডা. নেহা গুপ্তা বলেন, "অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার সময় খাবারের বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত। মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলতে হবে কারণ এটি গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, ফ্লুরোকুইনোলন দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্যের সঙ্গে খাওয়া উচিত নয়। অ্যাজিথ্রোমাইসিন খালি পেটে নেওয়া উচিত কারণ এটি ওষুধের আরও ভাল শোষণে সাহায্য করে। কিছু অ্যান্টিবায়োটিক যেমন অ্যামোক্সিসিলিন, অ্যামোক্সিসিলিন-ক্লাভুল্যানিক অ্যাসিড, ডক্সিসাইক্লিন, সেফালোস্পোরিন যেমন সেফিক্সাইম খাওয়ার পরে দেওয়া উচিত। অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়ার সময় ডাক্তারদের রোগীর অন্যান্য ওষুধের কথা মাথায় রাখা দরকার। যেমন, যে সব ব্যক্তি অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস নেন, তাঁদের লাইনজোলিড দেওয়া উচিত নয়। কারণ এই ওষুধগুলি একসঙ্গে গ্রহণ করলে প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।"

সেরা ভিডিও

আরও দেখুন
লালগোলাতে রাজরাজেশ্বরী রূপে পূজিতা হন মা কালী! দেওয়া হয় ইলিশের ভোগ
আরও দেখুন

নিয়ম হল সঠিক মাত্রায় এবং সঠিক সময়ের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করা। অনেক ব্যক্তি ওষুধের কোর্স সম্পূর্ণ না হওয়ার আগেই বন্ধ করে দেন। সেটা উচিত নয়। ওষুধের কাউন্টার থেকে বিনা প্রেসক্রিপশনে অ্যান্টিবায়োটিক কেনাকেও উৎসাহিত করা উচিত নয়।

বাংলা খবর/ খবর/লাইফস্টাইল/
Anti biotics: ডাক্তার না দেখিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক খাচ্ছেন? শরীরের ক্ষতি করবেন না, বলছেন বিশেষজ্ঞ
Open in App
হোম
খবর
ফটো
লোকাল