অ্যালো ভেরার ওষধি গুণ এককথায় লাজবাব। প্রাচীন গ্রিক, রোমান, ব্যাবিলনীয়রা তো বটেই, ভারতীয় এবং চিনারা আজও অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীকে ওষধি ভেষজ হিসেবে ব্যবহার করেন। বিভিন্ন সভ্যতায় একে ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয়েছে যেমন পটেড ফিজিশিয়ান, ওয়ান্ড অফ হেভেন, ওয়ান্ডার প্ল্যান্ট, হেভেনস ব্লেসিং এবং প্ল্যান্ট অফ লাইফ।
প্রাকৃতিক নিরাময়কারী হিসেবে বহু শতাব্দী ধরে অ্যালোভেরা ব্যবহার করে আসছেন ভারতীয়রা। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ অ্যালোভেরার পাতায় ৭৫টির বেশি পুষ্টি উপাদান এবং ২০০টি অন্যান্য যৌগ রয়েছে। যার মধ্যে ২০টি খনিজ, ১৮টি অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ১২টি ভিটামিন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের সমস্যা নিরাময় তো বটেই, স্বাস্থ্যের জন্যও অ্যালোভেরার বিকল্প নেই। ঘৃতকুমারী হজমশক্তি বাড়ায়, স্বাস্থ্যকর ইমিউন সিস্টেম তৈরি করে। খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণ করতেও শরীরকে সাহায্য করে অ্যালোভেরা। পাশাপাশি এনার্জি বাড়ায়। বাইরে, অ্যালোভেরা ত্বককে ময়শ্চারাইজ করে, যে কোনও ক্ষত এবং জ্বালা নিরাময়ে সাহায্য করে।
advertisement
আরও পড়ুন : ২ সপ্তাহ চায়ের সঙ্গে ব্যবহার করুন এই ফুলের নির্যাস, পুজোয় পাবেন প্রাকৃতিক উজ্জ্বল ত্বক
অ্যালোভেরা সাধারণভাবে ৩টি পর্যায়ে কাজ করে যেমন ক্লেনজিং স্টেজ, নিউট্রিশন স্টেজ এবং থেরাপিউটিক স্টেজ। দেখে নেওয়া যাক ত্বকে বাহ্যিকভাবে অ্যালোভেরার কাজের ধরন। এর উপাদান লিগনিন ত্বকে প্রবেশ করতে সহায়তা করে। প্রাকৃতিক ক্লিনজার স্যাপোনিন সুইপিং অ্যাকশন দিয়ে পরিষ্কার করে। অ্যালোর ত্বকের মতো একই রকম পিএইচ ভারসাম্য রয়েছে।
আরও পড়ুন : রাঁধলেই হল না, থালিতে খাবার সাজানো ও খাওয়ার নিয়ম না মানলে সব অসম্পূর্ণ
ত্বকে মেলানিনের অতিরিক্ত উৎপাদনের ফলে হাইপার পিগমেন্টেশন হয়। কালো ছোপ বা দাগে ভর্তি হয়ে যায় গা-হাত। অতিরিক্ত সূর্যালোক, বার্ধক্যজনিত কারণ এবং হরমোনের তারতম্যের কারণে মূলত এমনটা হয়। এছাড়া হাইপারপিগমেন্টেশন ফ্রেকলস, বয়সের দাগ, মেলাসমা, প্রদাহজনিত হাইপারপিগমেন্টেশন এবং ব্রণের দাগের আকারেও ঘটতে দেখা যায়। অ্যালোভেরা গাছের দুটি রাসায়নিক, অ্যালোইন এবং অ্যালোসিন, ত্বকের পিগমেন্টেশনকে হালকা করে দেয়। অ্যালোইনকে ত্বকের মেলানিন ভেঙে দেয়। অ্যালোসিন মেলানিন তৈরির জন্য দায়ী টাইরোসিনেজের কার্যকলাপকে রুখে দেয়। ফলে মেলানিন উৎপাদনই বন্ধ হয়ে যায়। অ্যালোভেরার আণবিক গঠনের কারণে এটা ত্বকের বিভিন্ন স্তর তো বটেই শরীরের পেশিতেও দ্রুত প্রবেশ করতে পারে। তাই এটা অ্যান্টিরিঙ্কল এবং ত্বকের পুনরুজ্জীবনকারী উপাদান হিসাবে কাজ করে। তবে অ্যালোভেরা থেকে অ্যালার্জিও হয় ৷ তাই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্ছনীয় ৷