দীর্ঘ সময় ধরে ঘাড় নিচু করে মোবাইল দেখার ফলে তাঁর ভয়ানক অবস্থা হয়েছে। তাঁর গলা ও ঘাড় বয়স্কদের মতো হয়ে গেছে। এই কেস দেখে ডাক্তাররাও অবাক হয়ে গেছেন। তাইওয়ানের ঘটনা। ২০ বছর বয়সী ছাত্রী মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ। তাঁর গলা ৬০ বছরের বৃদ্ধের মতো হয়ে গেছে। ওই তরুণী মাথাব্যথার সমস্যায় ভুগছিলেন। নিউরোলজিস্ট ড. ইয়ে ত্সুং-হসুন (Yeh Tsung-Hsun) এর কাছে যান ওই তরুণী। তার পরই ডাক্তার তাঁর ঘাড়ের অবস্থা দেখে থ।
advertisement
পরীক্ষার সময় এক্স-রেতে দেখা যায়, তাঁর সারভাইক্যাল স্পাইন (ঘাড়ের হাড়) স্বাভাবিক ভাঁজ হারিয়ে ফেলেছে। কিছু জায়গায় কশেরুকার (vertebrae) মধ্যে স্লিপ সরে গেছে। এই অবস্থা সাধারণত “টেক্সট নেক” (Text Neck) নামে পরিচিত, যা অকালেই সারভাইক্যাল ডিজেনারেশন (ঘাড়ের হাড়ের ক্ষয়) এর লক্ষণ হতে পারে।
ড. ইয়ে জানিয়েছেন, আজকাল তরুণ-তরুণীরা ঘন্টার পর ঘন্টা মোবাইলের সামনে ঝুঁকে থাকেন। সিরিজ দেখেন, গেম খেলেন ও চ্যাটিং করেন। এই অভ্যাসগুলো ধীরে ধীরে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠছে। মানব মস্তিষ্কের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বেশি হয়, যদি গলা ৬০ ডিগ্রির কোণে নিচু করা হয়। এতে সারভাইক্যাল স্পাইনে প্রায় ২৭ কেজি চাপ পড়ে। দীর্ঘ সময় ধরে আপনার গলায় একটি ৭-৮ বছরের একটি শিশু ঝুলে থাকার মতো ব্যাপার হতে পারে।
আরও পড়ুন- ফের বিসিসিআইতে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়! ক্রিকেট প্রশাসনে ‘দাদাগিরি’! বড় আপডেট!
ধীরে ধীরে ঘাড়ের পেশি ও লিগামেন্টগুলি এই ভার সইতে পারে না। এর ফলে ডিস্কে চাপ পড়ে এবং সম্পূর্ণ গঠন (structure) বিকৃত হতে শুরু করে। এই কারণেই এখন তরুণদের মধ্যেও বয়স্কদের মতো সারভাইক্যাল সমস্যা সময়ের আগেই দেখা দিচ্ছে।
ড. ইয়ে সতর্ক করে বলেন, “টেক্সট নেক” (Text Neck) কেবল ঘাড়ের সীমিত সমস্যা নয়। এটি মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহকেও প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে প্রচণ্ড মাথাব্যথা হতে পারে। এটি ব্রেকিয়াল নার্ভস (Brachial Nerves)-এর ওপর চাপ সৃষ্টি করে কাঁধ, বাহু ও আঙুলে অসাড়তা, ঝিনঝিনি অনুভূতি বা ব্যথা তৈরি করতে পারে।
এই সমস্যা যদি দীর্ঘ সময় ধরে উপেক্ষা করা হলে এটি ডিস্ক হার্নিয়েশন এবং হাড়ে স্পার (spur) গঠনের মতো গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারে — যা সাধারণত ৫০-৬০ বছরের বয়সে দেখা যায়। ডাক্তাররা বলছেন, আই-লেভেল স্ক্রিন (Eye-Level Screen) করতে হবে। অর্থাৎ মোবাইল বা স্ক্রিন সবসময় চোখের সমতলে রাখুন। গলা না ঝুঁকিয়ে, বরং হাত একটু ওপরে তুলুন। প্রতি ৩০ মিনিট পর ৫ মিনিট বিরতি নিন। উঠে দাঁড়ান, দূরে তাকান ও কাঁধ ঘোরান।