আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত জানান, "বেআইনি নিয়োগ করে আদালতে সমালোচনার মুখে পড়ে পর্ষদ। এর আগে প্রশ্ন ভুল মামলায় ভৎসনার মুখে পড়ে বোর্ড।"
আইনজীবী ফিরদৌস সামিম জানান, রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ আইন ১৯৭৩ এর ১৯ নং ধারায় বলা আছে, পর্ষদের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য সম্পূর্ণ দায়বদ্ধ সভাপতি।
advertisement
দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা নিয়ে পর্ষদের রিপোর্ট চায় হাইকোর্ট। আদালতে পেশ করা পর্ষদের রিপোর্টে তাতে জানানো হয়, ২৬৯ নয়, বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়া হয়েছিল ২৭৩ জনকে।
আদালতে পেশ করা রিপোর্টে আরও জানায়, টেটের (২০১৪) প্রশ্নপত্রে ভুল রয়েছে, তাই নম্বর বাড়ানো হোক। - এই মর্মে পর্ষদের কাছে মোট ২৭৮৭ টি আবেদনপত্র জমা পড়ে। এদের মধ্যে ২৭৩ জন প্রশিক্ষিত প্রার্থী ছিল যাদের বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়া হয়েছিল।
টেট ২০১৪ অফলাইনে হয়েছিল। তাই অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা পর্ষদের কাছে ছিল না। তাই ১৮ লাখের বেশি অসফল প্রার্থীদের মধ্যে থেকে প্রশিক্ষিত এবং ১ নম্বরের জন্য অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের খুঁজে বের করে ১ নম্বর বাড়তি দেওয়া পর্ষদের পক্ষে সম্ভব হয়নি।
রিপোর্টে বোর্ডের সিদ্ধান্ত পত্রের কাগজ এবং কলমের লেখার কালি দেখেও সন্দেহ হয়। শুধু বোর্ড সভাপতি সই সেখানে ছিল। ৫ বছরের পুরনো বোর্ডের সিদ্ধান্ত পত্রে কেন কোনও ধুলো ময়লা থাকবে না। পর্ষদের দেওয়া সব নথি CFSL পরীক্ষার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। এ ছাড়া, বোর্ড সদস্যদের বয়ান বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি আদালতের।
আরও পড়ুন- বারবার কনভয়ে ট্রাকের ধাক্কা! শুভেন্দুকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ নিয়ে আদালতে বিজেপি
২০/১১/২০১৭ মিটিং এ উপস্থিতি অথচ সই না করা বোর্ড সদস্যদের বিশ্বাস যোগ্য নয়। কাজেই দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা নিয়ে প্রাথমিক পর্ষদের দেওয়া যুক্তি বানানো। বোর্ড আর এক সদস্য ৮৫ বছরের সিস্টার এমিলিয়া বলেছেন, একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সিদ্ধান্ত সমস্ত টেট ২০১৪ পরীক্ষার্থীর জন্য। সমস্ত পরীক্ষার্থীর জন্য এই বাড়তি ১ নং দেওয়া সিদ্ধান্ত হয়।
বোর্ড সদস্যদের মধ্যে পরস্পর বিরোধীতা তাদের বয়ানে স্পষ্ট হচ্ছে।প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই দ্বিতীয় নিয়োগ তালিকা প্রস্তুত করে বোর্ড। ২৭৩ জনের নিয়োগ তালিকা প্রকাশ হয়। যেখান থেকে ২৬৫ জনের চাকরি হয়। এই ২৬৫ জনের চাকরি বাতিলও করে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একাধিক বেআইনি কাজ পর্ষদের সভাপতি হিসেবে দায় এড়াতে পারেন না মানিক ভট্টাচার্য। তাই তাঁকে পদ থেকে সরায় হাই কোর্ট।
ডিভিশন বেঞ্চে যান মানিক ভট্টাচার্য। সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চান তিনি। ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি শেষ হলেও, মানিক ভট্টাচার্য আবেদন মেনে অপসারণের সিদ্ধান্তে কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের ২ মাস পর নতুন পর্ষদ সভাপতি ঘোষণা করল রাজ্য। ১১ বছর পর বদল হল পর্ষদ সভাপতি।