সূত্রের খবর, বিজেপি বিধায়করা সরকারের মন্ত্রী-বিধায়কদের দুর্নীতি যোগ নিয়ে তৈরি প্লাকার্ড, পোস্টার নিয়ে গোপনে অধিবেশন কক্ষে ঢুকবেন। অধিবেশন শুরু হলেই ওই পোস্টার, প্লাকার্ড নিয়ে ওয়েলে নেমে পড়ে হৈ চৈ জুড়ে দেবেন। এ বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক ও দলের অন্যতম সাধারন সম্পাদক দীপক বর্মণ বলেন, ''আমরা প্রতিবাদের জন্য সর্বোতোভাবে তৈরি হয়েই কাল বিধানসভায় যাব।" আর, রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এর মন্তব্য- ''আমাদের কৌশল আগাম বলার জন্য নয়৷ কাল যথা সময়েই আপনারা সেসব দেখতে পাবেন। "
advertisement
আরও পড়ুন- সেপ্টেম্বরের জাতকরা ঠিক কেমন স্বভাবের হন, দেখে নিন এক নজরে
এদিকে, বিজেপি যে এই সুযোগকে কাজে লাগাতে ' ফন্দি " আঁটছে, তা টের পেয়ে সতর্ক তৃণমূল। আজ দলের পরিষদীয় দলের বৈঠকে, রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির উপস্থিতিতে পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় দলের সব সদস্যকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। দলের সব বিধায়ক দের উদ্দেশ্যে শোভনদেব বলেন, "দুর্নীতি কাণ্ডকে হাতিয়ার করে, বিজেপির আক্রমণের সামনে দলের অবস্থান তুলে ধরতে হবে। বিজেপির প্ররোচনায় পা দিয়ে আসন ছেড়ে যাওয়া যাবে না৷" পর্যবেক্ষকদের মতে, বিধানসভার বিগত অধিবেশনে ওয়েলে নেমে বিক্ষোভরত বিজেপি সদস্যদের দিকে ধেয়ে গিয়ে শারীরিক নিগ্রহ করার জন্য তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল গেরুয়া শিবির। পাল্টা হামলার অভিযোগ করেছিল তৃণমূলও৷ তার জেরে বিরোধীদলনেতা, মুখ্য সচেতক সহ মোট ৭ বিধায়ককে অধিবেশন থেকে সাসপেন্ড করেন স্পীকার। তাতে আখেরে শাসকের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে। এবার, যাতে সেই পরিস্থিতি আর তৈরি না হয়, তার জন্যই তৃণমূলের সদস্যদের সংযত থাকার আগাম দাওয়াই দিয়ে রাখলেন মমতা।
শিক্ষা দুর্নীতি কান্ডে ইডির হাতে জেলবন্দী প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন সম্পত্তি বৃদ্ধির তদন্তে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, অরূপ রায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও মলয় ঘটকদের লাগাতার ই ডি, সিবিআই তলব করেছে। শিক্ষা দুর্নীতি তদন্তে বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে আদালতের লুক আউট নোটিশ - এসবই শাসক দলকে চরম অস্বস্তির মধ্যে রেখেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের তরফে বিধানসভার অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্তে প্রথমে রীতিমত হকচকিয়ে গিয়েছিল বিজেপি। এ বিষয়ে বিজেপির এক বিধায়ক বলেন, "আমরা তো ভাবিই নি এমন একটা সুযোগ আমরা পাব। হ'তে পারে, এর পেছনেও তৃণমূলের কোনও কৌশল আছে। তবে, নবান্ন অভিযানে জনতার আদালতে আমরা মানুষের যে সাড়া পেয়েছি, তাতে আমরা উজ্জীবিত। এখন তৃণমূলের আস্তিনে কী তাস লুকানো আছে, তা নিয়ে আমাদের কোন চিন্তা নেই। নবান্ন অভিযানের পর বিধানসভার ফ্লোরকে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করে আন্দোলনকে আমরা সর্বোচ্চ মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করব।"
রাজনৈতিক মহলের মতে, বিরোধীদল হিসাবে নিঃসন্দেহে বিজেপির এটাই করা উচিত। কিন্তু, পরিষদীয় রণনীতিকে কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে শুভেন্দু অধিকারীর বিজেপি কিন্তু এখনও তার প্রমাণ দিতে পারেন নি। ফলে, বিধানসভায় দুর্নীতি ইস্যুতে বিজেপির আন্দোলন শেষপর্যন্ত কতটা সফল হবে, সেটা নিশ্চিত নয়।