বুধবার রাজভবনের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘‘গণমাধ্যমের একাংশে প্রকাশিত একটি ভ্রান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, কিছু বিল রাজভবনে অনিষ্পন্ন অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এ বিষয়ে রাজভবন বারবার রাজ্য সরকার, পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা এবং সংবাদমাধ্যমকে প্রকৃত অবস্থা জানিয়ে এসেছে। তথাকথিত ‘বিল অনিষ্পন্ন’ সংক্রান্ত বর্তমান আপডেট নীচে তুলে ধরা হলো। মাননীয় রাজ্যপাল সব সময় সংবিধান অনুযায়ী শিষ্টাচার মেনে চলেছেন, বিশেষ করে বিল পাশের বিষয়ে।’’
advertisement
২০২৩ সালে রাজভবনকে জানানো হয়েছিল যে, মোট ২২টি বিল নাকি রাজভবনে অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে। এই খবর প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মাননীয় রাজ্যপাল বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন। উক্ত বিলগুলির মধ্যে পাঁচটি বিলে তিনি সম্মতি (Assent) দিয়েছেন। দুইটি বিল রাজ্য সরকারের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে, প্রয়োজনীয় তথ্যের অভাবে।
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেছেন, সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকদের ডেকে পাঠানো বা তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করার অধিকার সংবিধান রাজ্যপালকে দেয়নি। তিনি আরও জানিয়েছেন,”সংবিধানে পরিষ্কার করে লেখা রয়েছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য কোনও বিল আটকে রেখে দেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যপালের নেই।” মন্ত্রীর কথায়,”বিল সংক্রান্ত আইনগত বিষয় থাকলে রাজ্যপাল চিঠি লিখে সরকারকে জানিয়ে দেবেন। তিনি ডেকে পাঠাবেন, আলোচনা করবেন এ রকম কথা বলা নেই। আমি অনেক বার সংবিধান পড়েছি। কিন্তু বিল পাশ করে দিতে বাধ্য থাকবেন। একান্ত না হলে রাষ্ট্রপতিকে পাঠাতে পারেন।”
শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ক্ষোভপ্রকাশ করে জানান, রাজ্যপাল ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করছেন। রাজ্যপালের কাছে একের পর এক বিল আটকে রয়েছে। রাজ্যপালের পদ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। জানিয়েছেন, “বিভিন্ন বিধানসভায় একাধিকবার কথা উঠছে, এই রাজ্যপাল পদটির দরকার নেই। সুপ্রিম কোর্ট সঠিক রায় দিয়েছে। সব রাজ্যপালের তা মানা উচিত। এই রাজ্যপালের কোনও প্রতিক্রিয়া দেখিনি।”
২০১৬ থেকে ২০২৫ সালে বিধানসভায় পাশ হওয়া বিলের মধ্যে এমন ২৩টি বিল রয়েছে, যেগুলিতে সম্মতি দেননি রাজ্যপাল। এগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিল যেমন, অপরাজিতা বিল, গণপিটুনি বিলও রয়েছে।
রাজভবনের দাবি, ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে মাননীয় রাজ্যপাল মোট ১১টি বিল সম্মানীয় রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষিত রেখেছেন। এই বিলগুলির মধ্যে ১০টি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত এবং একটি হলো ‘অপরাজিতা বিল’, যা রাজ্য সরকারের সুপারিশ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বিবেচনার জন্য সংরক্ষণ করা হয়েছে।