রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের দামামা বেজে গিয়েছে। নতুন বছরের গোড়ার দিকেই রাজ্য পঞ্চায়েত ভোট সেরে ফেলতে চাইছে বলে সূত্রের খবর। এদিকে, ফেব্রুয়ারিতে ভোট করতে নতুন বছরের শুরুতেই আচমকা দিনক্ষণ ঘোষণা করে দিতে পারে ধরে নিয়ে কমিশনের সংরক্ষণ তালিকা নিয়ে অভিযোগ তুলে আদালতে মামলা করেছে বিজেপি। ওই মামলার জেরে আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত পঞ্চায়েত ভোটের বিজ্ঞপ্তি জারি না করতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ করেছে আদালত। এই আবহে, বুধবার রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে স্বাক্ষাৎ করলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার।
advertisement
আরও পড়ুন: ফের চোখরাঙানি করোনার, নবান্ন থেকেই বড় নির্দেশ মমতার!
এদিন বেলা ১১ টা নাগাদ রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেন কমিশনার সৌরভ দাস। রাজভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপালের সঙ্গে কমিশনারের প্রায় ১ ঘন্টা নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। যদিও, এই বৈঠক প্রসঙ্গে কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন শান্ডিল্য বলেন, গত ২৩ নভেম্বর ২০২২, রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের উত্তরসূরী হিসাবে শপথ নেন সি ভি আনন্দ বোস। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের সাংবিধানিক নিয়োগ কর্তা রাজ্যপাল। সেই সূত্রেই, শপথ নেওয়ার পরে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসকে রাজভবনে আমন্ত্রন জানিয়ে ছিলেন বোস। কিন্তু কমিশনার তাঁর ব্যক্তিগত কাজে কলকাতার বাইরে থাকায় এতদিন তা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: 'ও আমার প্রতিদ্বন্দ্বীই নয়, অপেক্ষা করুন', 'শেষ' দিনে কেবলই আস্ফালন শুভেন্দুর! নিশানায় কে?
কমিশনের দাবি, '৭৭ এর ব্যাচের আই এ এস আনন্দ বোস, কেন্দ্র ও রাজ্যের নানা গুরুত্বপূর্ন প্রশাসনিক দায়িত্ব সামলেছেন। একই সঙ্গে তিনি শিক্ষা জগতেও একজন পরিচিত প্রশাসক। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারও একজন প্রাক্তন আই এ এস। সেই সূত্রেই সৌরভ দাসের সঙ্গে তাঁর অতীত প্রশাসনিক কাজ নিয়ে খোশ মেজাজে নানা প্রসঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে নির্দিষ্ট ভাবে কমিশনারের কাছে জানতে চাননি রাজ্যপাল। রাজ্যপালের সঙ্গে স্বাক্ষাৎকে যথেষ্ট সদর্থক বলেই নাকি মনে হয়েছে কমিশনারের। তবে প্রকাশ্যে এই বৈঠক নিয়ে কিছু বলতে চাননি কমিশনার সৌরভ দাস।
রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্যের শতাধিক পুরসভায় ভোট পরিচালনা নিয়ে কমিশনের ওপর সন্তুষ্ট হতে পারেননি ধনখড়। বালি পুরসভার ভোট নিয়ে রাজ্যের আনা বিলে সম্মতি না দিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি করেছিলেন বলে ধনখড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিল রাজ্য সরকার। বিগত পুরভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নিয়ে সুপারিশ করতে কমিশনের ওপর চাপ তৈরি করেছিলেন বলে ধনখড়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল শাসক দল।
পর্যবেক্ষকদের মতে, সব মিলিয়ে পূর্বতন রাজ্যপাল ধনকড়ের আমলে, রাজ্যে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের সঙ্গে 'সমন্বয়'-এর ঘাটতি ছিল রাজভবনের। সেদিক দিয়ে, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে, রাজভবনের সঙ্গে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কতটা তাল মিল থাকে সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজ্য-রাজনীতি।