ফোনে দুই মেয়ের মা রেখা জানিয়েছেন, প্রথম সন্তান কাশভি এক বছর বয়স থেকেই হামাগুড়ি দিত ও টলমল পায়ে উঠে দাঁড়াত। কিছুদিন পর তাঁরা লক্ষ করেন কাশভি দাঁড়ালেই তার গোড়ালি বেঁকে যাচ্ছে। দেরি না করে শিশুকে অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে নিয়ে যান। চিকিৎসক ফ্ল্যাট ফুটের চিকিৎসা শুরু করেন এবং ২০ ঘণ্টা বিশেষ জুতো পরে পরার পরামর্শ দেন। কিন্তু চিকিৎসায় শিশুটি সাড়া না দেওয়ায় ডাক্তার বদলান কেশব ও রেখা।
advertisement
আরেক চিরিৎসকের কথায় কাশভির অকুপেশনাল থেরাপি শুরু হয়। তার ফলে দেওয়ার ধরে ধরে চলতে পারলেও বসা থেকে দাঁড়ানোর জোর পাচ্ছে না মেয়ে। তৃতীয় ডাক্তারের চিকিৎসাতেও কাজ না হওয়ায় তাঁরা স্নায়ুরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ততদিনে দম্পতির কোলে দ্বিতীয় সন্তান আসার খবর এসেছে। কাশভির চিকিৎসা শুরু হওয়ার প্রায় দেড় বছর পর রোগের নাম জানতে পারেন বাবা-মা।
রেখা ও কেশবের কোলে দুই সন্তান
আরও পড়ুন: ‘NRC হবে, বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেবে!’, ডিটেনশন ক্যাম্পে যাওয়ার আতঙ্কে চরম সিদ্ধান্ত কলকাতার বাসিন্দার!
কেশব জানিয়েছেন, গত জুনে মেয়ের বিশেষ রক্তপরীক্ষা হয়। তার ২০ দিন পর রিপোর্ট এলে জানা যায়, কাশভির স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি (এসএমএ) টাইপ টু রয়েছে। রোগ নিয়ে পড়াশোনা করে তাঁরা জানতে পারেন, এটি অত্যন্ত বিরল রোগ ও অসম্ভব ব্যয়বহুল। শুরু হয় লড়াই। বেঙ্গালুরুর ব্যাপটিস্ট হাসপাতাল থেকে দিল্লির এইমস– সব জায়গাতেই ছুটছেন দম্পতি। জানা গিয়েছে, এই রোগের আধুনিক চিকিৎসা জিন থেরাপির ইঞ্জেকশন নিলে রোগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তার জন্য বয়স ও ওজনের বিশেষ শর্ত রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে বিরাট খরচ, যা তাঁদের সামর্থের বাইরে। তাঁদের প্রয়োজন প্রায় ৯ কোটি টাকা।
এরপর দ্বিতীয় মেয়ে আরোভীরও তাঁরা রক্তপরীক্ষা করান। সপ্তাহ তিনেক পর জানা যায়, আরোভীও একই রোগে আক্রান্ত। তার রোগের প্রভাব আরও ভয়াবহ। এসএমএ টাইপ ওয়ান-এ আক্রান্ত সে। বিনা চিকিৎসায় সাধারণত এই ধরনের রোগীর আয়ু দু’বছরেরও কম। এইমস জানিয়েছে, দুই বোন কাশভি ও আরোভীর জিন থেরাপি প্রয়োজন। একদিকে শ্বাসকষ্ট সঙ্গে ঘুমের মধ্যে বমি করা। এমন রোগের লক্ষণ নিয়ে লড়াই করছে দুই বোন।
আরও পড়ুন: ক্লাস ওয়ান থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত পরিবর্তন স্কলারশিপ, বার্ষিক বৃত্তি ৭৫০০০ টাকা, জেনে নিন
কেশব ও রেখার দুই মেয়ের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন মোট ১৮ কোটি টাকা। এই বিপুল খরচ তুলতে সব মানুষের সাহায্য চেয়েছেন তাঁরা। দুটি অনলাইন ক্রাউড ফান্ডিং সংস্থার মাধ্যমে চিকিৎসার খরচ তুলছেন তাঁরা। সেখানেই দেওয়া রয়েছে চিকিৎসার সব নথি। যোগাযোগের নম্বর– 7501496545 (কেশব কুণ্ডু)