কলকাতা বন্দর সূত্রের খবর, জলপথে ভাগীরথীর সাথে ব্রক্ষ্মপুত্রর জুড়ে থাকার সম্পর্ক দীর্ঘ দিন ধরে। ব্রিটিশরা জাহাজে করে অসম থেকে চা নিয়ে আসত কলকাতায়। আর তার জন্যে কলকাতায় তৈরি করা হয়েছিল একাধিল টি-শেড। অন্যদিকে কলকাতা থেকেও জলপথে কয়লা, সিমেন্ট নিয়ে যাওয়া হত। ধীরে ধীরে এই জলপথ ধরে শষ্য, ভোজ্য তেল একাধিক জিনিস আমদানি-রফতানি করা হত। যদিও বাংলাদেশ যুদ্ধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় পণ্য পরিবহণ।
advertisement
আরও পড়ুন-প্রয়াত কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিক, ময়দানে শোকের ছায়া
১৯৮০-র দশক থেকে একাধিকবার চেষ্টা হয়েছিল এই জলপথ যা ন্যাশনাল ওয়াটার ওয়েজ ২ নামে অভিহিত, তাকে পুনরায় বাণিজ্যিকভাবে ফের লাভজনক ভাবে চালু করে দেওয়া হোক। নানা কারণে সেই কাজ চালু করতে বাধা আসলেও, ফের চালু হল ন্যাশনাল ওয়াটার ওয়েজ ২। এর ফলে হলদিয়া, কলকাতা থেকে ডিব্রুগড় অবধি ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার প্রটোকল মেনে পণ্যবাহী জাহাজ বা বার্জ চলাচল করতে পারবে। এই প্রকল্পের সূচনা হল ফের।
কলকাতা বন্দরের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার জানিয়েছেন, ‘‘অত্যন্ত লাভজনক একটি রুট। অনেক কম সময়ে পণ্য সরবরাহ করা যাবে। একাধিক সংস্থা আগ্রহ দেখিয়েছে এই পথে। ধীরে ধীরে ভারী যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা হবে এই পথে।’’ এছাড়া আগামীদিনে পর্যটনেও বড় ভূমিকা পালন করবে এই রুট। দেশে এই মুহূর্তে পাঁচটি অন্তর্দেশীয় জলপথ রয়েছে৷ এলাহাবাদ থেকে বিহার , ঝাড়খণ্ড হয়ে হলদিয়া পর্যন্ত ১৬২০ কিলোমিটার গঙ্গার জলপথটি জাতীয় জলপথ এক হিসেবে ঘোষিত হয় ১৯৮৬ সালে৷
অসমের ধুবড়ি থেকে শদিয়া পর্যন্ত ৮৯১ কিলোমিটার ব্রহ্মপুত্রের জলপথটি জাতীয় জলপথ দুই নামে পরিচিত ৷ ১৯৮৮ সালে এটিকে সরকারি স্বীকৃতি দেওয়া হয়৷ দু-টি অন্তর্দেশীয় জলপথ রয়েছে দক্ষিণ ভারতে ৷ একটি কেরালায়৷ অন্যটি অন্ধ্রপ্রদেশ-তামিলনাড়ু-পুদুচেরিতে ৷ পঞ্চমটি বাংলা -ওড়িশার মধ্যে ব্রাহ্মণী-মহানদীর নদীপথ ঘিরে। ভারত-বাংলাদেশ, দু’দেশের জলপথ খুলে যাওয়ায় এলাহাবাদ থেকে সরাসরি বাংলাদেশের নদীপথ হয়ে অরুণাচল প্রদেশ লাগোয়া শদিয়া, বরাক উপত্যকার লখিপুরে দিব্যি পৌঁছে যাবে পণ্যবাহী ভেসেল৷ এতে উত্তর -পূর্বের যেমন সুবিধা হবে , তেমনি বাংলাদেশেরও লাভ হবে ৷ এখন হলদিয়া থেকে জলপথে বছরে ২০ -২২ লক্ষ টন ফ্ল্যাই অ্যাশ নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের ভেসেল৷ তারা চাইছে ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে স্টোনচিপস, বোল্ডার ফরাক্কা হয়ে জলপথে বাংলাদেশে পাঠাতে ৷
আরও পড়ুন-বিরাটকে শো-কজের কোনও পরিকল্পনাই ছিল না... সম্পূর্ণ ভুল খবর ! মুখ খুললেন সৌরভ
অন্যদিকে, ফরাক্কা থেকে ধূলিয়ান -রাজশাহী রুট খুলে দেওয়া সম্ভব হলে আশুগঞ্জ বন্দরের দূরত্ব আরও কমে যাবে৷ সেক্ষেত্রে খরচ এবং সময় দুই-ই কমে আসবে৷ কলকাতা থেকে ডিব্রুগড় পর্যন্ত যে পণ্য সরবরাহ করা হয়েছে, তা চিন থেকে কলকাতা বন্দরে এসেছে। সেখান থেকে বার্জে করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ডিব্রুগড় পর্যন্ত। আট দিন যেতে লাগবে এই পণ্যবাহী বার্জের। আর ফিরতে লাগবে তিন দিন।
আবীর ঘোষাল