জানা গিয়েছিল, সন্ধে সাড়ে আটটার বিমানে ত্রিপুরায় পৌঁছবেন অভিষেক। কিন্তু তার আগেই যাওয়া নিয়ে তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। কেন? কারণ, অভিষেকের বিমানকে অবতরণের অনুমতি দিল না ত্রিপুরা প্রশাসন। শিলচর বিমানবন্দরে অবতরণ বন্ধ হয় সন্ধে ৭.৩০ টায়। এদিন রাতে শিলচর বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে আগরতলা যাওয়ার কথা অভিষেকের। কিন্তু বিমান অবতরণের অনুমতি না মিললে তাঁর রবিবার ত্রিপুরা পৌঁছনো একপ্রকার অনিশ্চিত।
advertisement
এদিন সকালেই সায়নীকে পূর্ব আগরতলা মহিলা থানায় ডেকে পাঠানো হয়। দীর্ঘ জেরার পর বিকেলে গ্রেফতার করা হয়েছে সায়নী ঘোষকে (Saayoni Ghosh Arrested in Tripura)। রবিবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে না। ফলে জামিনের আবেদন করা যাবে না৷ তৃণমূলের নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, "খেলা হবে" এটি বলেই গ্রেফতার হলেন সায়নী (Saayoni Ghosh Arrested in Tripura)। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩, ১৫৩ এ, ৫০৬, ৩০৭ ও ১২০বি-তে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে।
রাজ্যে পুরভোটের আগে অভিষেকের এই মিছিল থেকে তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে আরও সুর চড়াবে বলে মত রাজনৈতিক মহলের। তৃণমূলের অভিযোগ, রাজ্যে বলবৎ রয়েছে নির্বাচনী আইন তাই সভার অনুমতি বাতিল করতে না পারলেও নানা রকম উপায়ে সভা নিয়ে সমস্যা তৈরি করছে ত্রিপুরা রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ জানিয়েছেন, "বহু জায়গায় বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে গিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। প্রশাসন সভায় আসার জন্যে যাতে কেউ গাড়ি না পায় সেদিকেও হুশিয়ারি দিয়েছে। আজকেও আগরতলায় যে পরিস্থিতি তৈরি হল, তার মাধ্যমে অভিষেকের কর্মসূচী আটকানো হচ্ছে।"
আরও পড়ুন: 'খেলা হবে' স্লোগান দিতেই ত্রিপুয়ায় গ্রেফতার সায়নী ঘোষ, জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা!
ত্রিপুরার শাসক দল বিজেপি অবশ্য সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। তাদের দাবি, যে দলের সংগঠন নেই, তারা শাক ঢাকতে মিথ্যা কথা বলছে। আগরতলা রবীন্দ্র ভবনের সামনে হবে মিছিল। রবীন্দ্র ভবন থেকে ওরিয়েন্ট চৌমহনী অবধি মিছিলের প্রস্তুতি সেরে রাখছে তৃণমূল। বিমানবন্দর থেকে আগরতলা শহর অবধি আসার রাস্তায় একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর পোস্টার, ব্যানার, কাট আউট।
আরও পড়ুন: ভারতী ঘোষকে বড় দায়িত্ব দিল BJP! প্রাক্তন IPS-কে ঘিরে গেরুয়া শিবিরে জারি গুঞ্জন
এছাড়া অভিষেকের সভা ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই ভিডিও বার্তায় সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার সেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। ত্রিপুরায় বাড়ছে এনার্জি, আসছেন অভিষেক ব্যানার্জি। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের সফরের আগে এটাই এখন ত্রিপুরায় দলের ক্যাচলাইন। তাই এদিনও জোড়া ফুল শিবিরের সমস্ত পক্ষকে সাথে নিয়েই মিটিং করেছেন সুবল ভৌমিক ও সুস্মিতা দেব। যেখানে হাজির ছিলেন আশিষ লাল সিংহ, বাপ্টু চক্রবর্তী-সহ অনেকেই। পাহাড় থেকে সংখ্যালঘু সমস্ত পক্ষের নেতাদের সাথে নিয়েই অভিষেকের সফর সফল করতে উঠেপড়ে নেমেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
ইতিমধ্যেই সকলকে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, সকলকে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এর মাধ্যমে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস একটা সংঘবদ্ধ দল। এভাবেই ২০২৩ এর লক্ষ্যে তারা সাংগঠনিক শক্তিকে একজোট করে রেখে এগোবে। আগামী কাল দুপুরেই ত্রিপুরায় আসছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দুপুর দেড়টায় রয়েছে অভিষেকের সভা। রবীন্দ্রভবন থেকে ওরিয়েন্ট চৌমহনী অবধি হবে এই সভার অনুষ্ঠান। এই সভায় বক্তব্য রাখবেন তিনি৷ ইতিমধ্যেই সভার জন্যে প্রয়োজনীয় অনুমতি চেয়ে প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই অনুমোদন মিলেছে বলেই দাবি তৃণমূলের। রাজ্য জুড়ে সন্ত্রাস, অপশাসন, বেকারত্ব, মিডিয়া সন্ত্রাসের মতো ইস্যুকে সামনে রেখেই ত্রিপুরার তৃণমূল সংগঠন এই সভার ডাক দিয়েছে। এদিন এই সভার প্রস্তুতি নিয়েই একযোগে তৃণমূলের সব নেতাদের সাথে নিয়েই বৈঠক হয়।