হারানো জমি ফিরে পেতেই মাঠে আরাবুল
গাছের গুঁড়িতে টাঙানো পুলিশের ছেঁড়া উর্দি। বড় বড় পুলিশের গাড়ি এখনও মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে পুকুরে। রাস্তার পাশে পড়ে রয়েছে কাঁদানে গ্যাসের তাজা শেল। উদ্ধার করার কেউ নেই। কয়েক ফুট অন্তর গুঁড়ি ফেলে আটকানো হয়েছে রাস্তা।
advertisement
তাণ্ডবের ২৪ ঘণ্টা পরে, বুধবারের ভাঙড় যেন পুরোপুরি এক মুক্তাঞ্চল! যেখানে পোস্টার পড়েছে, ‘পুলিশ নয়। শান্তি চাই’। যেখানে এক আন্দোলনকারী সরাসরিই বলছেন, ‘‘আমরা পুলিশকে সরিয়ে দিয়েছি। পুলিশকে ঢুকতে দেব না।’’
আন্দোলনে অনিশ্চিত বিদ্যুৎ-ভবিষ্যৎ
হাইটেনশন লাইন টানা থেকে সাবস্টেশনের নির্মাণ কাজ— বলতে গেলে ৯০ শতাংশই শেষ হয়ে গিয়েছে। ঠিক ছিল আর ক’মাসের মধ্যেই সাবস্টেশনটির সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ করে ফেলা হবে। কিন্তু মঙ্গলবারের ঘটনার পর রাজ্যের দীর্ঘতম এই গ্রিড প্রকল্পের ভবিষ্যৎ কার্যত অনিশ্চিত হয়ে পড়ল। আর তার জেরে ভবিষ্যতে উন্নত মানের বিদ্যুৎ পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে পারেন উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার কয়েক লক্ষ মানুষ।
প্রাণে বাঁচতে গ্রামবাসীদের থেকে পোশাক ধার করেছিল মহিলা পুলিশ
ঘন ঘন বোমার শব্দ, রে রে করে চিৎকার, লাঠি হাতে কখনও জনতার দিকে তে়ড়ে যাচ্ছে পুলিশ-র্যাফ-কমব্যাট ফোর্সের জওয়ানেরা, কখনও জনতার ছোড়া ইটের থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ব্যস্ত তারা। এই যখন পরিস্থিতি, তখন প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে ভয়ে জড়োসড়ো ছয় মহিলা কনস্টেবল। গুলি-বন্দুক-কাঁদানে গ্যাসের সেল তো দূরের কথা, একখানা লাঠিও নেই হাতে।
মুক্তি পেলেই দেনা মিটিয়ে নতুন ব্যবসা! জেলেই অঙ্ক কষছেন গৌতম
শূন্য থেকে শুরু করেছিলেন। সেখান থেকেই ফের শুরু করতে চান। গরাদঘরে বসে একান্তে তারই হিসেব কষে চলেছেন শ্যামলা, রোগাটে চেহারাটা। কুণাল ঘোষ যেমন তাঁর জেলজীবনের দিনলিপি লিখে রেখেছেন ডায়েরির পাতায়, সেই প্রেসিডেন্সি জেলে বসেই রোজ ভ্যালি কর্তা গৌতম কুণ্ডুও প্রতিদিন ভরে চলেছেন ডায়েরির পাতা। সেখানে অবশ্য যতটা না দিনযাপনের ইতিবৃত্ত লেখা, তার চেয়েও বেশি রয়েছে অঙ্ক।
টানা তিনমাস ধরে মাওবাদীরাই ভাঙড় তাতিয়েছে, গ্রেপ্তারের নির্দেশ মমতার
তিন মাস ধরে ঘাঁটি গেড়ে পাওয়ার গ্রিড নিয়ে গ্রামবাসীদের তাতিয়েছে বহিরাগত মাওবাদীরা। লোক খেপাতে ছোট ছোট গ্রুপ সভা করার পাশাপাশি কীভাবে গেরিলা কায়দায় চারদিক ঘিরে পুলিশকে ফাঁদে ফেলতে হবে, তার প্রশিক্ষণও দিয়েছে তারা। এমনকী পাওয়ার গ্রিড চালু হলে মানবদেহে তার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার মতো গুজবও ছড়িয়েছে মাওবাদীরা। মঙ্গলবার গোলমালের সময় নানা গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ করে তুলেছিল এই বহিরাগতরাই। ভাঙড়ের খামারআইটে পাওয়ার গ্রিড বিরোধী জনমত গড়ে তোলার এই কাজে মাওবাদীদের দোসর হয়েছিল এলাকার কিছু বড় ডেভেলপার ও প্রোমোটারি সংস্থা। যারা ওই এলাকায় বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য বিস্তর কৃষিজমি কিনে রেখেছিল। বহুতল তৈরির জন্য তারা মিউটেশনও করে রেখেছিল বামফ্রন্ট আমলেই। ওই সমস্ত ডেভেলপারের একাংশ পাওয়ার গ্রিড বিরোধী আন্দোলনকারীদের আর্থিক মদতও দিচ্ছে। পাওয়ার গ্রিড হলে লাটে উঠত তাদের মুনাফার কারবার। বুধবার ভবানীভবনে কলকাতা ও রাজ্য পুলিশ এবং সিআইডি’র শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাঙড় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার বৈঠকের মূল নির্যাস ছিল এটাই।
সরকারি পাঁচটি বিমা সংস্থার ২৫ শতাংশ শেয়ার বিক্রির সিদ্ধান্ত
১৯৭২ সালে ব্যাংক ও বিমার জাতীয়করণ করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। ঠিক ৪৫ বছর পর নরেন্দ্র মোদি সেইসব রাষ্ট্রীয় বিমা সংস্থাকে আংশিক বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেওয়ার প্রথম পদক্ষেপটি নিলেন আজ। সরকারের দখলে ১০০ শতাংশ শেয়ার থাকা পাঁচটি বিমা সংস্থার শেয়ার বাজারে ছাড়া হচ্ছে। সেগুলিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, ধাপে ধাপে এইসব বিমা সংস্থার ২৫ শতাংশ শেয়ার ছেড়ে দেওয়া হবে বেসরকারি হাতে। আপাতত সরকার স্থির করেছে ৭৫ শতাংশ শেয়ার রাখা হবে সরকারের হাতে। আগামীদিনে প্রক্রিয়াটির গতিপ্রকৃতি দেখেই ভবিষ্যৎ স্থির হবে। প্রসঙ্গত নোট বাতিলের পর অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা ও আর্থিক বৃদ্ধির হার হ্রাস পাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হওয়ার পর থেকেই আরও বেশি করে সংস্কারমুখী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেছে সরকার। শিল্পমহল থেকেও চাপ এসেছে সাহসী একঝাঁক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য।
৪ গুণ দামে জমি কিনেছি, দাবি পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের
ভাঙড়ে বিদ্যুতের সাবস্টেশন তৈরির কাজ নিয়ে রণক্ষেত্রের জেরে কাজ বন্ধ রাখলেও প্রকল্পের রূপায়ণ নিয়ে আশাবাদী কেন্দ্র। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে, তার সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। কারণ বছর তিনেক আগে বাজারদরের চেয়ে চারগুণ দামে সরাসরি জমির মালিকদের থেকে জমি কিনেছিল পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন। একইসঙ্গে ওই প্রকল্প নিয়ে যে বিতর্ক বেঁধেছে, তা সামাল দিতে রাজ্য সরকার উপযুক্ত সহযোগিতা করছে বলেও আজ মন্তব্য করেছে পাওয়ার গ্রিড সংস্থা। জমি অধিগ্রহণ নিয়ে ওখানে কোনও সমস্যা নেই। কেবল কিছু ভুল ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকা উত্তাল হয়েছে বলেই মনে করছে এই রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা।
ফের রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ, এখনও উত্তপ্ত ভাঙড়
পোলেরহাট বাজার ছাড়িয়ে দেড় কিলোমিটার যাওয়ার পর রাস্তায় হাত দেখিয়ে এক যুবক গাড়ি থামালেন। বললেন, সামনে যেতে পারবেন না। শ্যামনগর মোড়ে গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা আটকে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি ভালো নয়। মঙ্গলবার স্বরূপনগর ও বকুলতলার দু’জন নিরীহ যুবক পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়ায় গ্রামের পর গ্রাম উত্তপ্ত হয়ে আছে। গাড়ি ভাঙচুর করে দিতে পারে। তাঁর সতর্কবার্তা শোনার পরও খানিকটা পথ যাওয়ার পর দেখা গেল, সামনে রাস্তা জুড়ে বড় বড় মোটা গাছের গুঁড়ি ফেলা। পথের উভয়দিকে দোকানপাট সবই বন্ধ। চারপাশ শুনশান, থমথমে পরিবেশ। কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে জটলা আর গুঞ্জন চলছে। শ্যামনগর মোড়ে পৌঁছে ফের দাঁড়াতে হল। বড় গাছের গুঁড়ি দিয়ে হাড়োয়া রোড বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গুঁড়ির গায়ে হেলান দেওয়া একটা প্ল্যাকার্ড।
নীরব মিছিলে সরব ভাঙড়
বুধবার সকাল ১১টা ৷ লাউহাটি হয়ে ভাঙড়ে ঢোকার মুখে প্রথমবার চোখে পড়ল একটি পুলিশের গাড়ি দাঁড়িয়ে ৷ ভিতরে জনা চারেক পুলিশকর্মী ৷ মঙ্গলবার ভাঙড় দেখেছিল পুলিশের মিছিল, লাঠি, বোমা, গ্যাস, গুলি ৷
গ্রামবাসীর সন্দেহ বহিরাগতদেরই
২৪ ঘণ্টা আগে নবান্ন থেকে রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা ঘোষণা করেছিলেন, ভাঙড়ের গ্রামবাসীদের বিক্ষোভে পুলিশে গুলি চালায়নি ৷ বহিরাগত ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে গোলমালে গুলি চলেছে ৷
রেজ্জাকের বুলি কিন্তু থামছে না, অসন্তষ্ট মমতা
ভাঙড়ে রেজ্জাক মোল্লার ভূমিকায় অসন্তষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পর পর দু’দিন দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কথায় এর প্রতিফলনও ধরা পড়েছে ৷ দল ও দলনেত্রীর সেই ক্ষোভের কথা জেনেও রেজ্জাক কিন্তু বুধবার ভাঙড় নিয়ে দলীয় অবস্থানের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেছেন ৷
পথ অবরোধে তপ্ত বিষ্ণুপুর, ধৃত কালু
নন্দীগ্রামের ছায়া ভাঙড়ে ৷ আবার ভাঙড়ের ছায়া বিষ্ণুপুরে ৷ গ্রামবাসীদের লাগাতার অবরোধ-বিক্ষোভের জেরে মূল অভিযুক্ত এসইউভি গাড়ির চালক কালু ওরফে ফিরোজ হোসেন মোল্লাকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷