পুজোর অনুদান নিয়ে গতকাল দ্বিতীয় জনস্বার্থ মামলা দাযের হয়েছে৷ রাজ্যের ৪৩ হাজার দুর্গাপুজো কমিটিকে ৬০ হাজার টাকা করে সরকারি অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই নিয়েই পরপর দুটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল কলকাতা হাইকোর্টে। বুধবার প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজেশ ভরদ্বাজের এজলাসে এই মামলা দায়ের হয়েছে। একই বিষয়ে আরও একটি মামলা দায়ের হয় বুধবার৷ এবার কি তিন মামলার জাঁতাকলে সরকার? প্রশ্ন তুলছে রাজনৈতিক মহল৷
advertisement
আরও পড়ুন: এসএসসি কাণ্ডে সুবীরেশের ফ্ল্যাট সিল করল সিবিআই, বড় কোনও প্রমাণ এল হাতে?
রাজ্য রাজনীতির ডামাডোল অব্যাহত৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারের পর বাংলার পরিস্থিতি টালমাটাল৷ তবে রাজনৈতিক পরিস্থিতি যতই খারাপ হোক না কেন,তার প্রভাব যে পুজোয় পড়বে না, তা আরও একবার প্রমাণ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে, বিধির বেড়াজালও নেই৷ তার সঙ্গে বাড়তি সুখবর ৫০,০০০ নয়, বরং আরও ১০ হাজার বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে পুজো কমিটিগুলোকে৷ সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো উদ্য়োক্তাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মুখ্য়মন্ত্রী। সেখানেই নেওয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত৷
আরও পড়ুন: 'বীরভূমে ঢুকব না, দরকারে..', থাকার জন্য যে জায়গার কথা বললেন অনুব্রত, চমকে উঠল কোর্টরুম
গত কয়েক বছর ধরে কলকাতা-সহ জেলার পুজো কমিটিগুলিকে ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দিচ্ছে রাজ্য সরকার। তাই সোমবারের বৈঠকেও সে দিকেই তাকিয়ে ছিল পুজো কমিটিগুলি। এ বারের পুজো একটু আলাদা ছিলই৷ ইউনেস্কো দুর্গাপুজোকে ঐতিহ্যের তালিকায় স্থান দিয়েছে। তবে একেবারে যে ১০ হাজার বেড়ে যাবে এমনটা বোধহয় সবাই ভাবেনি৷
দ্বিতীয মামলাকারী সুবীরকুমার ঘোষের আবেদন, সরকারের এই অনুদানের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে নির্দেশ দিক আদালত। আদালতের নির্দেশ মেনে সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা না দিয়ে কেন পুজোয় অনুদান দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন এ'বছরের পুজোয় বিদ্যুৎ বিলেও মিলবে ছাড়। কলকাতা এবং স্টেট ইলেক্ট্রিসিটি বোর্ডকে অনুরোধ করা হয়েছে, পুজো কমিটিগুলিকে বিদ্যুৎ বিলে যেন ৬০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়। এই প্রসঙ্গে মামলাকারীর প্রশ্ন, কেন ছাড় বিদ্যুতের বিলে? যেখানে অনেক মানুষ এখনও খাবার, পরিষ্কার জল, বিদ্যুৎ, ওষুধ পাচ্ছেন না, সেখানে কেন এই অনুদান? অনেকের স্কুলে যাওয়ার সঙ্গতি নেই, সেখানে রাজ্য অনুদান দিচ্ছেন পুজোয়? এই অনুদান কোন বৃহত্তর জনস্বার্থে লাগবে? প্রশ্ন তুলেছেন মামলাকারী। শুনানির নির্দিষ্ট দিন এখনও জানা যায়নি৷
অনুদানের পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা করায় অনুদানের মোট অঙ্ক গিয়ে ঠেকছে প্রায় ২৫৮ কোটি টাকায়। আর এই ঘোষণার পর তাই নিয়েই সমালোচনা শুরু করেছে বিরোধীরা। সমালোচনা করেছে সরকারি কর্মচারী সংগঠনগুলিও।