শুভেন্দু অধিকারী এদিন আরও বলেন, ‘‘এই বিধানসভায় অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে শাসকদল, কেউই কোনও রীতিনীতি মানে না। ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় অলংকার আমাদের সংবিধান। অথচ অধ্যক্ষ ও শাসকদলের বিধায়করা পর্যন্ত সংবিধান মানেন না। বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদানকারী বেশ কয়েকজন বিধায়ক বিধানসভার বাইরে দলীয় পতাকা-সহ তৃণমূলের বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ দিচ্ছেন। অথচ বিধানসভায় তাঁদেরকে জিজ্ঞাসা করা হলে বলা হয়, তাঁরা বিজেপির বিধায়ক। এই তো অধ্যক্ষের ভূমিকা। তাই আমার বিরুদ্ধে আনা স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস নিয়ে আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত নই।’’
advertisement
আরও পড়ুন- ১৯ নম্বর আর এন মুখার্জি রোডের একটি বহুতলে আগুন ! ঘটনাস্থলে দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু
প্রসঙ্গত, সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে জেলে ভরে দেওয়ার হুঁশিয়ারি! তাও আবার বিধানসভায় অধিবেশনের মধ্যে? বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হুঁশিয়ারির জেরে অধ্যক্ষের কাছে নিরাপত্তা চাইলেন পার্থ ভৌমিক। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে জমা পড়ল স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিসও। শুক্রবার বিধানসভায় পঞ্চায়েত দফতরের বাজেট ডিমান্ড আলোচনায় বক্তব্য রাখছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলকে কেন্দ্র করে ওঠা বিতর্ককে হাতিয়ার করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনারা বাইরে একরকম বলেন, ভিতরে আরেক রকম। এর পরেই কৌশলে টেনে আনেন দল-বদল বিতর্ক। বিরোধী বেঞ্চে বসে থাকা বিশ্বজিৎ দাস ও কৃষ্ণ কল্যাণীর দিকে দেখিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘বলুন না এরা কোন দলে? বলতে পারবেন এরা বিজেপিতে নেই? কিন্তু, বিধানসভার বাইরে এরা তৃণমূলে।’’ শুভেন্দুর এই ‘দল বদলু’ খোঁচা হজম করতে না পেরে হৈ হৈ জুড়ে দেন কৃষ্ণ কল্যাণী ও বিশ্বজিৎ দাসরা। ঠিক সেই সময় শুভেন্দুর আচমকা পার্থ ভৌমিককে উদ্দেশ্য করে বক্তব্য কিছুটা খেই হরিয়ে ফেলা তৃণমূলকে পাল্টা আক্রমণে ফেরান সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। বিরোধী দলনেতার ঠিক মুখোমুখি ট্রেজারি বেঞ্চ থেকে, শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিক বলেন, ‘‘আপনিই বলুন না শিশিরবাবু কোন দলে?’’ পার্থর এই আক্রমণে কার্যত তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু।
অভিযোগ, পার্থকে নিশানা করে এরপরই শুভেন্দু বলেন, ‘‘এক মাসের মধ্যে জেলে ভরে দেব।’’ আর, শুভেন্দুর মুখে এ কথা শুনেই রে রে করে ওঠেন পার্থ-সহ শাসক দলের মন্ত্রী ও বিধায়করা। পার্থ ভৌমিক-সহ শাসক দলের বিধায়কদের সঙ্গে সহমত হয়ে বিরোধী দলনেতাকে সতর্ক করে স্পিকারও বলেন, ‘‘আমিও শুনেছি। এভাবে জেলে ভরে দেওয়ার কথা বলে আপনি ঠিক কাজ করেননি।’’ যদিও অধিবেশন কক্ষের বাইরে এসে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বিধানসভার অন্দরের কথাবার্তার পুনরাবৃত্তি করতে চাননি শুভেন্দু। কেবল ঠারে ঠোরে বুঝিয়ে দেন, সেচমন্ত্রী তাঁর প্রতিপক্ষ নন। একমাত্র মুখ্যমন্ত্রীকেই তিনি তাঁর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বলে মনে করেন। আর এবার স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস প্রসঙ্গে শুভেন্দু বললেন, ‘‘যিনি আমার বিরুদ্ধে নোটিস এনেছেন তাঁকেই আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রমাণ করতে হবে।’’