রানাঘাটে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারীর চাঞ্চল্যকর দাবি, ‘‘এফআইআর লিখেছেন রঞ্জিত গঙ্গোপাধ্যায়। আসানসোলে জেল হেফাজতে থাকাকালীন লালন শেখের স্ত্রীর বয়ানের ডিক্টেশন দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। তাঁকে সাহায্য করেছেন সিউড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার মহম্মদ আলি। গোটা এফআইআর প্রক্রিয়াটাই তৃণমূলের শীর্ষ স্তরের নির্দেশে তৃণমূল আর পুলিশ সম্পন্ন করেছে। লালন শেখের স্ত্রীকে দিয়ে শুধু সই করানো হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ জনৈক একজন আইপিএস, যার মামলা শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন গত সপ্তাহে তিনি সল্টলেক বিধাননগরে লালন শেখের স্ত্রীকে নিয়ে গিয়েছিলেন একজন আইনজীবীর বাড়িতে। কী কী বলতে হবে তার ট্রেনিং দিতে। আমার কাছে সব ছবি আছে। সন্ধ্যা সাতটায় গিয়েছিলেন, রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত ছিলেন সেই সিনিয়র আইনজীবীর বাড়িতে। আমাদের কাছে যথাযথ তথ্য প্রমাণ রয়েছে। ঠিক সময় সঠিক জায়গায় পৌঁছে দেব।’’
advertisement
আরও পড়ুন- 'টাইম হো গ্যায়া', ফের সুর চড়ালেন শুভেন্দু অধিকারী! কীসের ইঙ্গিত দিলেন?
পাশাপাশি শুভেন্দু অধিকারী এও বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার একজন তদন্তকারী অফিসার যিনি অনুব্রত মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছেন তাঁর নামও ইচ্ছাকৃতভাবে এফআইআর-এ দেওয়া হয়েছে। এই ষড়যন্ত্র করে লাভ হবে না।’’ প্রসঙ্গত, লালন শেখের রহস্য মৃত্যুকাণ্ডে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন লালনের স্ত্রী। সংবাদমাধ্যমের সামনে লালন শেখের স্ত্রী অভিযোগ করেন যে, ‘‘তাঁর কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছিল। সেই টাকা না দিতে পারায় হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। লালনকে প্রচুর মারধরও করা হত। এমনকী তাদের বাড়িও তছনছ করে দিয়েছে সিবিআই।’’
লালন শেখের স্ত্রীর এও অভিযোগ ছিল, ‘‘সিবিআই বলেছিল হার্ড ডিস্ক দাও, না হলে ৫০ লাখ টাকা দাও। আমি তখন বললাম, স্যার আমি ৫০ লাখ টাকা কোথায় পাব? আপনারা আমার বাড়ি সিল করে দিয়েছেন। বাড়ির সব চুরি হয়ে গিয়েছে। কিছুই নেই। আমি বলেছিলাম ৫০ লাখ টাকা কোথায় পাব। তখন সেই উত্তরে অফিসার বললেন, টাকা দিলি না তো! ১২টার পর থেকে আমরা খেল শুরু করে দিচ্ছি।’’
এই এফআইআরের বিরুদ্ধে দায়ের করা এক মামলার শুনানিতে আদালতে সিবিআই দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এফআইআর-এ সাত আধিকারিকের নাম রাখা হয়েছে। লালন শেখের মৃত্যুতে সিবিআইয়ের ৭ আধিকারিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। এর পিছনে রাজ্যের হাত দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এই এফআইআরের বিরুদ্ধে দায়ের করা এক মামলার শুনানিতে আদালতে সিবিআই-এর দাবি, ‘‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এফআইআর-এ সাত আধিকারিকের নাম রাখা হয়েছে।’’ আর এ প্রসঙ্গেই গোটা এফআইআর-টি সাজানো বলে এবার বড় অভিযোগের বোমা ফাটালেন শুভেন্দু অধিকারী।