সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, ‘‘একই বিল্ডিংয়ে তিনটি বিধানসভার গণনা হয়েছিল। মহিষাদল, হলদিয়া এবং নন্দীগ্রাম। যদি লোডশেডিং করে জেতার বিষয়টি সামনে আসে তাহলে মহিষাদলে তৃণমূল প্রার্থী জিতলেন কী করে?’’ ‘কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী’ বলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে শুভেন্দু অধিকারী এই প্রশ্নও তোলেন যে, ‘‘নন্দীগ্রাম নিয়ে আপনি আদালতে গিয়েছেন। কিন্তু একটি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কিভাবে বিধানসভার অধিবেশন চলাকালীন এই ধরনের মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী?’’
advertisement
আরও পড়ুন-ওয়েবেল এবং ডব্লুটিএল নিয়ে আজ বড় দুর্নীতির পর্দাফাঁস শুভেন্দুর ?
পাশাপাশি সাংবাদিক সম্মেলনে অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও এদিন সরব হন শুভেন্দু। বলেন, ‘‘মাননীয় অধ্যক্ষের একটি চোখ বন্ধ। উনি একদিক দিয়ে দেখেন। অধিবেশনে বিরোধী দলনেতার বলার সময় সবুজ কিংবা লাল বাতি জ্বালানো হচ্ছে এটা আমি কখনও দেখিনি ৷’’
শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘আমার বক্তব্য পেশ করার সময় আজ তিনি সেই আলো জ্বালিয়ে দিয়েছেন। কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন কক্ষে থাকলে শাসকদলের সবাই চাপে থাকেন। কারণ তৃণমূলের একটাই পোস্ট। বাকি সব ল্যাম্পপোস্ট। তৃণমূলের দু’জনই মালিক, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তরাধিকারী সূত্রে তাঁর ভাইপো। বাকি সবাই বিভিন্ন স্তরের কর্মচারী। মালিকের সামনে কর্মচারীরা এমন কোনও কাজ করতে পারেন না যাতে তারা ক্ষেপে যান। তাই প্রতি পদে পদে সরকার পক্ষ বিরোধীদের কণ্ঠ রোধের চেষ্টা করে চলেছেন। কিন্তু বিজেপিকে এভাবে দমিয়ে রাখা যাবে না। নন্দীগ্রাম ফলাফলের বিষয়টি বিচারাধীন। আমি নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই মামলা করেছেন।’’
আরও পড়ুন- বিদেশে চাকরি করতে চাইছেন? পাসপোর্ট-মার্কশিট থাকলেই হল! এই ৮ দেশ দিচ্ছে দুর্দান্ত সুযোগ!
তাহলে কিভাবে বিচারাধীন বিষয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধিবেশন কক্ষে অভিযোগ করার সময় বাধা না দিয়ে অনুমতি দিলেন অধ্যক্ষ? শাসকের পক্ষে এক নিয়ম, আর বিরোধীদের জন্য আলাদা নিয়ম, তা হতে পারে না বলেও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিঁধলেন বিরোধী দলনেতা। বলা বাহুল্য, পঞ্চায়েত ভোটে অশান্তি প্রসঙ্গে বিজেপির আনা মুলতুবি প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বক্তব্য দিতে গিয়ে ফের নন্দীগ্রাম নিয়ে সুর চড়ান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরেই বিজেপির প্রতিবাদ বিক্ষোভে উত্তাল হয় বিধানসভার অধিবেশন। মুখ্যমন্ত্রীকে কালো কাপড় দেখিয়ে ওয়াক আউট করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপির বিধায়করা। মমতার ‘রামধনু’ বক্তব্যে কার্যত তোলপাড় হয় অধিবেশন কক্ষ। এরপরেই নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘ঘটনা ভুলে গেছেন? আলো বন্ধ করা হয়েছিল। দু’ঘন্টা আলো বন্ধ হয়ে গেল কেন?” এরপরেই শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপি বিধায়করা দাঁড়িয়ে তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন। উত্তরে মমতা বলেন, “গণনা কেন্দ্র নিয়ে আমার বলার অধিকার আছে। লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরপরই রেজাল্ট বদলে গেল নন্দীগ্রামে।’’