বাঁকুড়ার রাইপুরের জনসভায় কয়লা দুর্নীতি প্রসঙ্গে হাটে হাড়ি ভাঙার চ্যালেঞ্জ করেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী৷ কথাছিল বুধবার তিনি এ নিয়ে বড়সড় ' বোমা ' ফাটাবেন। স্বাভাবিকভাবেই কয়লা দুর্নীতি নিয়ে শুভেন্দু ঠিক কী বলেন, সে দিকেই তাকিয়ে ছিল রাজ্যের গণমাধ্যম।
বুধবার শুভেন্দু ট্যুইট করে জানান, তিনি বিষয়টি নিয়ে শুক্রবার বিধানসভায় সাংবাদিক সম্মেলন করবেন। সেই প্রতিশ্রুতি মতোই আজ বিকেল ৪টায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন শুভেন্দু।
advertisement
আরও পড়ুন: ভালবাসেন রসগোল্লা, রাজভবন- নবান্নের তিক্ততা মেটাতে চান নতুন রাজ্যপাল
আর, সেখানেই ইডির দেওয়া চার্জশিটের প্রিন্ট আউট বলে দাবি করা কিছু কাগজ দেখিয়ে শুভেন্দু বলেন, 'কয়লা দূ্র্নুতির সঙ্গে একটা বড় চক্র যুক্ত। তাতে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরাও যুক্ত আছে। আয়কর হানায় ২৪০০ কোটি টাকার যে দুর্নীতির হদিশ মিলেছে, তার মধ্যে ১ হাজার কোটি গিয়েছে এক রাজনৈতিক প্রভাবশালীর কাছে। যিনি পুলিশ ও প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করেন।' ওয়াকিবহাল মহলের মতে, শুভেন্দুর এই দাবি রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
শুভেন্দু তাঁর দাবির সমর্থনে এই মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত গুরুপদ মাজিকে দেওয়া ইডির ২০০ পাতার চার্জশিটের কয়েকটি পাতার নম্বর উল্লেখ করে বলেন, এই চার্জশিটের কপি এখন জনসমক্ষে রয়ছে। আপনারা একটু কষ্ট করে দেখে নিন। শুভেন্দুর ঘোষণায় সাংবাদিক সম্মলনে কয়লা দুর্নীতিতে ''কূমিরের পিঠে ভাগের" হিসাব এ দিন খুল্লাম খুল্লা করে বলে দেবেন এমনটা অনেকেই ভেবেছিলেন। কিন্তু, বাস্তবে তা হয়নি।
যদিও, এ বিষয়ে আজ শুভেন্দুর সাফাই , তিনি রাইপুরে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে এমন ঘোষণা করে ফেলেছিলেন, কিন্তু, বিষয়টি বর্তমানে শীর্ষ আদালতে বিচারাধীন থাকায় 'প্রকাশ্যে 'এ নিয়ে এখনই বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন: হিন্দু নিপীড়ণে উদ্বিগ্ন ভারত, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বার্তা অমিত শাহের
তবে, বলব না বলব না করেও কিছুটা ঘুরপথে 'লিপস অ্যান্ড বাউন্স'-র মতো বিতর্কিত সংস্থার নাম চার্জশিটে রয়ছে বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু। রাজনৈতিক মহলের মতে, কয়লা দুর্নীতি চক্রে অন্যতম অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রের সঙ্গে সরাসরি ফোনে কথা বলেছিলেন শুভেন্দু, এমনটাই অভিযোগ করেছিলেন অভিষেক বন্দোপাধ্যায়।
শুভেন্দু - বিনয়ের ফোনের সেই কল রেকর্ড নিয়ে সরসরি শুভেন্দুকে চ্যালেঞ্জ করেছিলেন অভিষেক। যদিও, অভিষেকের দাবিকে উড়িয়ে শুভেন্দু পাল্টা দাবি করেন, তাঁর ফোন থেকে যে এই কথোপকথন হয়েছিল, তার প্রমাণ কোথায়? বিনয় মিশ্রের সঙ্গে তাঁর ফোনে কথোপকথন নিয়ে তোলা অভিযোগকে আজও কার্যত চক্রান্ত বলে দাবি করে শুভেন্দু বলেন, '' কুড়ি হাজার টাকা দিলে এমন মিমিক্রি ( কণ্ঠস্বর নকল করা) করা যায়। সে জন্যই আমি বলেছি, আমার ফোন থেকে কথা বলেছি তার প্রমাণ দিক৷ "
শুভেন্দুর মতে, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কয়লা দূর্নীতি কাণ্ডের জাল প্রায় গুটিয়ে এনেছে। ১২ ডিসেম্বর মমলার পরবর্তী শুনানি রয়ছে। খুব শিগগিরই দূ্র্নীতি কাণ্ডের পর্দা ফাঁস হলে অনেক রাঘব বোয়ালকেই ইডি, সিবিআই- এর হাতে গ্রেফতার হবে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, বেশ কিছুদিন ধরেই বিজেপি ডিসেম্বরে বড় কিছু ঘটতে চলেছে বলে জল্পনা ভাসিয়ে চলেছে। সেদিক থেকে আজ শুভেন্দুর ইঙ্গিতে কি বিজেপি-র সেই ডিসেম্বর বার্তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেল?