বৃহস্পতিবার হেস্টিংসে প্রায় ৫ ঘন্টা ধরে দফায় দফায় বৈঠক করেন সুনীল বনশাল৷ মূলত, আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর দলের নবান্ন অভিযানের প্রস্তুতির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখেন তিনি। নিপুন সংগঠক ও ব্যবস্থাপকের মত অভিযানের প্রতিটি ধাপের দায়িত্ব বন্টন থেকে শুরু করে, সংশ্লিষ্ট নেতা ও কর্মীদের কি করনীয় তা সবিস্তারে বুঝিয়ে দেন তিনি।
বৈঠকে যোগ দেওয়া এক নেতার কথায়, বনসল মনে করেন, কোনও কর্মসূচি সফল করতে হলে, দায়িত্ব বন্টন ও সেই দায়িত্ব নিখুত ভাবে পালন করার ওপরেই নির্ভর করছে কর্মসূচির সামগ্রিক সাফল্য। সেই ফর্মুলাতেই আজ নবান্ন অভিযানের ব্লু প্রিন্ট এর খসড়া রাজ্য নেতাদের বুঝিয়ে দেন বনশাল।
advertisement
আরও পড়ুন: 'ভাইয়ের এ রকম বীরগতি হবে না তো?' অনুব্রতকে নিয়ে রহস্য বাড়ালেন দিলীপ ঘোষ!
সুনীল বনসলের নবান্ন অভিযানের ব্লু প্রিন্ট -
নবান্ন অভিযানের লক্ষ্যে বিজেপিট তিনটি মূল মিছিল হবে। সব মিছিলের অভিমুখ হবে নবান্ন।
প্রথম মিছিল - সাঁতরাগাছি বাস স্টান্ড থেকে ক্যারি রোড হয়ে নবান্ন।
দ্বিতীয় মিছিল- হাওড়া ময়দান থেকে হাওড়া ব্রিজ পেরিয়ে ব্রাবোর্ন রোড হয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরিয়ে নবান্ন।
তৃতীয় মিছিল - কলেজস্ট্রিট থেকে ওয়েলিংটন, এস এন ব্যানার্জী, চৌরঙ্গি, রানি রাসমনি ধরে দ্বিতীয় হুগলি সেতু পেরিয়ে নবান্ন ।
প্রথম মিছিলের নেতৃত্ব দেবেন শুভেন্দু অধিকারী, দ্বিতীয় মিছিলের নেতৃত্বে সুকান্ত মজুমদার এবং তৃতীয় মিছিলের নেতৃত্বে দিলীপ ঘোষ।
আরও পড়ুন: এসি ইকনমি ক্লাসে ফিরছে পুরনো দিনের সেই সুবিধা! বড় সিদ্ধান্ত রেলের
শুভেন্দুর সঙ্গী রাহুল সিনহা, লকেট চট্টোপাধ্যায়, সৌমিত্র খাঁ'রা। সুকান্তর সঙ্গে থাকবেন মন্ত্রী সুভাষ সরকার, মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর, সাংসদ এসএস আলুহলিয়া, শমীক ভট্টাচার্য, অগ্নিমিত্রা পাল ও আরও অনেকে।
দিলীপ ঘোষের সঙ্গে থাকবেন রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মন, সাংসদ জগন্নাথ সরকার, প্রিয়ঙ্কা টিব্রেওয়াল সহ অন্যান্য নেতারা।
রাজ্য বিজেপির এক সাধারণ সম্পাদকের মতে, স্বাভাবিক ভাবেই এই পরিকল্পনা থেকে স্পষ্ট বনশাল রাজ্যে দলের গুরুত্বপূর্ন আন্দোলন কর্মসূচিতে সুকান্ত, শুভেন্দু, দিলীপ -এই তিন অস্ত্রকেই ব্যবহার
করতে চান।
রাজ্যের দায়িত্বে আসার আগে বনসল যোগী রাজ্যে দলের অভ্যন্তরে নেতৃত্বের লড়াইকে সামলে উত্তরপ্রদেশের মত রাজ্যে দলকে বড় সাফল্য এনে দিয়েছেন। যদিও, উত্তরপ্রদেশে দলের অভ্যন্তরীন লড়াই আর বঙ্গ বিজেপির ঘরোয়া কোন্দলের ফারাক আছে। তা সত্বেও, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মূলত যে দুটি কারনে তার ওপর আস্থা রেখেছেন, দলের অভ্যন্তরে লড়াই বন্ধ করে ঐক্য ফেরানোই অন্যতম।
নবান্ন চলো কর্মসূচি সেই ঐক্য ফেরানোর লক্ষ্যে প্রথম পদক্ষেপ। বনসলের এই কর্মসূচিতে দলের সব সাংসদ, বিধায়ক, জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে পদাধিকারীদের যোগদান বাধ্যতামূলক হলেও, রাজু বিস্তা, নিশীথ প্রামানিক, জয়ন্ত রায়, দেবশ্রী চৌধুরী, জন বার্লাদের নাম এখনও বনসলের তালিকায় নেই।
দলের একাংশের মতে, উত্তরবঙ্গের কর্মী, সমর্থকদের এই কর্মসূচিতে যোগদান নিয়ে কোন নির্দেশ না থাকায়, উত্তরবঙ্গের সাংসদ, বিধায়করা শেষ পর্যন্ত কতটা অংশ নেবেন তা নিয়ে সংশয় রয়ছে। ফলে, নবান্ন অভিযানকে ঘিরে বনশালের রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বকে এক সুতোয় গাঁথার চেষ্টা কতটা সফল হবে তা নিশ্চিত নয়।