কিশোর কুমার। প্রবাদপ্রতিম বাঙালি এই শিল্পীর ৯৩ তম জন্মদিন উদযাপনকে উপলক্ষ্য করে এবার ঝাঁপাল বিজেপি। দলের গা থেকে বহিরাগত, অবাঙালিদের পার্টি - এই তকমা ঘষে মেজে তুলতে সল্টলেকের পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্রে সান্ধ্য অনুষ্ঠানের আসর বসেছিল। উদ্যোক্তা বিজেপি সাংস্কৃতিক সেলের নব নির্বাচিত আহ্বায়ক রুদ্রনীল ঘোষ।
আরও পড়ুন - রবির টানে : ২২ শে শ্রাবণের বিশেষ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তড়িঘড়ি লন্ডন থেকে দেশে ফিরলেন ডোনা
advertisement
ঘড়ির কাঁটায় তখন সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা। প্রেক্ষাগৃহে আসেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তার সঙ্গে ছিলেন বিজেপির পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাত, মনোজ টিগ্গা, অগ্নিমিত্রা পাল সহ বেশ কয়েকজন বিধায়ক। প্রথমে মঞ্চের নিচে দর্শকাসনে বসে কিছু উপস্থাপনা দেখার পর, সাতটা নাগাদ স্বাগত ভাষণ দেওয়ার জন্য তাকে মঞ্চে আহ্বান করেন রুদ্রনীল। স্বাগত ভাষণের পর ৭ টা ২৫ মিনিটে প্রেক্ষাগৃহ ছেড়ে বেরিয়ে যান সুকান্ত। একই সঙ্গে হল ছাড়েন জ্যোতির্ময় সিং মাহাত ও কয়েকজন বিধায়ক এবং কেন্দ্রীয় নেত্রী ভারতী ঘোষ।
আরও পড়ুন - India's medal in Commonwealth Games 2022: তৈরি ইতিহাস, প্যারা পাওয়ার লিফটিংয়ে সোনা, লং জাম্পে এল রুপো
সুকান্ত মজুমদার, ভারতী ঘোষ, জ্যোতির্ময় সিং মাহাতরা বেরিয়ে যাওয়ার ঠিক ১০ মিনিটের মধ্যে অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারি। দর্শকাসনে বসে থাকার সময়েই তার সঙ্গে সৌজন্য বিনিময় করতে দেখা যায় বৈশালী ডালমিয়াকে। এরপর মঞ্চে কিশোর কুমারকে শ্রদ্ধা জানানো থেকে শুরু করে ছত্তিসগড়ে নকশাল নিধনযজ্ঞের এক বাঙালি সেনা জওয়ানকে উত্তরীয় পরিয়ে সম্মান জ্ঞাপন আর, মোদির হর ঘর তেরঙ্গা যাত্রার সমর্থনে মুক্তিপ্রাপ্ত গান শোনা নিয়ে সাকুল্যে ১৮ মিনিট কাটিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান শুভেন্দুরা।
এরপর, বিজেপির কিশোর কুমার স্মরণ অনুষ্ঠান তার আপন নিয়মে চলতে থাকে ঠিকই, কিন্তু, উপস্থিত দলের নেতা, কর্মীদের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে এই সময়ের ব্যবধানটুকু।
দর্শকাসনে বসেই দলের এক নেতাকে বলতে শোনা গেল, এ যেন নাটকের দুই অঙ্কের মত। প্রথম দৃশ্যে রাজ্য সভাপতি সুকান্তর প্রস্থানের পরের দৃশ্যে মঞ্চে শুভেন্দুর আগমন।
খানিকটা আক্ষেপের সুরে বিজেপির প্রবীন এক নেতাকে বলতে শোনা গেল, '' আমাদের হচ্ছে টা কি? একটা সাংস্কৃতিক বিনোদন অনুষ্ঠানের মঞ্চেও আমরা একসঙ্গে দাঁড়াতে পারব না। সেখানেও, মঞ্চ ভাগ করতে হবে? এই মানসিকতার বদল না হলে কীভাবে আমরা রাজনৈতিক লড়াইটা লড়ব কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে? শুধু কেন্দ্রীয় নেতাদের দিকে আঙুল তুলে সেটিং সেটিং করে দুষলে তো হবে না। আগে নিজেদের এই ইগো ছেড়ে সবাইকে একমঞ্চে আসতে হবে। কে বড়, কে ছোট, সেই হিসেব মানুষ করবে।’’
আমরা যদি নিজেরাই প্রতি পদে সেই হিসেব কষতে যাই, তাহলে দিনের শেষে অঙ্কটা মিলবে না। "
যদিও, এই সমালোচনাও সবটা সঠিক নয় বলে দাবি সঙ্গে থাকা আরেক নেতার। তার মতে, সবাই নিজের মত করে ভাবতেই পারেন। কিন্তু, ভাবনাটা সত্যি নাও হতে পারে। তবে, ঐ রাজ্য নেতা একথা মানলেন, যে কোথাও হয়তো একটা ভুল বোঝাবোঝি রয়ে যাচ্ছে।
কাকতালীয় হলেও, শিক্ষা দূর্নীতি কান্ডে মমতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে রানী রাসমনির পর গতকাল থেকে ধর্মতলার ওয়াই চ্যানেলে শুরু হয়েছে বিজেপির ধর্ণা। বুধবার সেই ধর্ণামঞ্চে যোগ দিয়েছিলেন শুভেন্দু। বৃহস্পতিবার বিকালে ধর্ণা মঞ্চে গিয়েছিলেন সুকান্ত , দেখা মেলেনি শুভেন্দুর।
ARUP DUTTA