কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কলকাতা বিমানবন্দর ছাড়ার পর পরই শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে শোনা গেল, "অমিত শাহজির সঙ্গে বৈঠক করে আমরা সন্তুষ্ট। যে ভোকাল টনিক এবং বীজমন্ত্র উনি আমাদের দিয়ে গেলেন, আমরা তা গ্রহণ করলাম। আগামী দিনে তাঁর দেখানো পথেই এগবে বঙ্গ বিজেপি।" রাজ্যের বিরোধী দলনেতার দুপাশে তখন দাঁড়িয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার ও সংগঠনের অন্যতম দুই সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও অগ্নিমিত্রা পাল।
advertisement
আরও পড়ুন, নরেন্দ্রপুরে উদ্ধার বিবস্ত্র, বেহুঁশ তরুণী! গণধর্ষণে অভিযুক্ত হবু স্বামী, দেওর
অমিত শাহ রাজ্য সফরে এলে তার সঙ্গে আলাদা করে সাক্ষাতের জন্য সময় চেয়েছিল রাজ্য বিজেপি। শাহের দফতর থেকে তখনও পর্যন্ত কোনও আশ্বাস মেলেনি। কিন্তু, রাজ্য সফরে কলকাতায় পৌঁছনোর দিন সকালে শাহের দফতর থেকে আচমকা ফোন পান বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। জানানো হয়, শুক্রবার রাতে কলকাতায় পৌঁছে শাহ নিজেই বিজেপির রাজ্য দফতরে গিয়ে দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর, এয়ারপোর্ট থেকে বিজেপি রাজ্য দফতরে গিয়ে বৈঠক করেন শাহ।
আরও পড়ুন, হাইকোর্টে এসে যোগ্য়তা প্রমাণ তৃণমূল নেতার, মামলাকারীকেই জরিমানা করলেন বিচারপতি
এরপরে পূর্বাঞ্চলীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের বৈঠকের পরে নবান্নের ১৪ তলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নিজের অফিসেও একান্তে বৈঠক করেন শাহ-মমতা। যদিও সেই বৈঠককে নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ নাম দিচ্ছে বিজেপি। নবান্নে মমতা- শাহ একান্তে বৈঠক প্রসঙ্গে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "দুজনের বৈঠক নিয়ে কোনও রাজনৈতিক তাৎপর্য বা মানে খোঁজার কারণ নেই। অমিত শাহজি যে বার্তা আমাদের দিয়েছেন, তাতে বড় বড় চোর-ডাকাত, পরিবার ও তোষণবাদ, অত্যাচারীদের বিরুদ্ধে আইন মেনে, সংবিধান মেনে যা যা ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রয়োজন, তা করা হবে। শুক্রবার অমিত শাহর উপস্থিতিতে রাজ্য দফতরের বৈঠকে যে আলোচনা হয়েছে সেখানে আমরা এই প্রতিশ্রুতি পেয়ে উৎসাহিত।"
এরপরেও মমতার বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু বলেন, "নবান্নের ১৪ তলায় যে বৈঠক হয়েছে, সেখানে শুধুমাত্র সীমান্ত সমস্যা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বিএসএফের নজরদারির জন্য ৭২ টা চৌকি করার প্রয়োজন রাজ্যে। কিন্তু, রাজ্য সরকার জমি দিচ্ছে না। গোটা ভারতবর্ষের সর্বত্র বর্ডার এলাকায় কাঁটাতার দেওয়ার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। কাশ্মীর সীমান্ত এলাকাও সম্পূর্ণ। অথচ রাজ্য সরকার এ ব্যাপারে টালবাহানা করছে।"
সব মিলিয়ে অমিত শাহর কলকাতা সফরের পর রীতিমতো উজ্জীবিত বঙ্গ পদ্ম শিবির। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিলেন। বছর ঘুরলেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। শাহী বার্তার পরে বাংলার মাটি থেকে বিজেপি শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক ফসল ফলাতে পারে কি না, তার উত্তর সময়ই দেবে।