রাজ্যপালের ভাষণ নিয়ে সোমবারও তোলপাড় হয় বিধানসভার অধিবেশন। নিজের বক্তব্যের শুরুতেই রাজ্যপালের বিবৃতিকে 'অসত্য, অর্ধসত্য' বলে দাবি করেন শুভেন্দু। তিনি জানান, রাজ্যপালের বিবৃতিতে উপাচার্য নিয়োগ, আচার্য বিল এবং হিংসার পরিসংখ্যান সংক্রান্ত যে তথ্য পাঠ করা হয়েছে, তা অসত্য। বিরোধী দলনেতার তোপ, রাজ্যপালকে দিয়ে 'অসত্য' তথ্য পাঠ করিয়েছে রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে বোঝাপড়া করেছিলেন শুভেন্দু? বিধানসভায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করলেন মমতা
advertisement
এখানেই শেষ নয়, এরপর শুভেন্দু সরাসরি অভিযোগ আনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ তোলেন, বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থ নয়ছয় করছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব সহ আমলাদের একাংশ।
বিরোধী দলনেতা যখন বিধানসভা কক্ষে দাঁড়িয়ে এই সমস্ত দাবি উত্থাপন করছেন, তখনই তাঁকে বাধা দেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়। জানান, রাজ্যপাল বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে পরামর্শ দিতে পারেন, কিন্তু তাঁর বিবৃতি নিয়ে অধিবেশনে আলোচনা নিয়মবিরুদ্ধ। একই ভাবে প্রমাণ ছাড়া, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও বিধানসভায় অভিযোগ করা যায় না বলে জানান বিমান।
এরপরেই , স্পিকারের সঙ্গে তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন শুভেন্দু। এক সময় কথা বলতে না দেওয়ার অভিযোগ তুলে অন্য বিজেপি বিধায়কদের নিয়ে বিধানসভা কক্ষ ত্যাগ করেন। ওঠে একের পর এক স্লোগান।
এদিনের ঘটনার পরে, বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারীর আচরণ এবং স্পিকারের সঙ্গে 'দুর্ব্যবহার'-এর অভিযোগ তুলে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস আনার প্রস্তাব দেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়।
আরও পড়ুন:পঞ্চায়েতের আগে মাস্টারস্ট্রোক দিতে চলেছে সরকার, তবু এই এক কারণে প্রবল ক্ষুব্ধ নবান্ন
যদিও, এরপরেই বিধানসভায় বক্তৃতা করতে উঠে, বিরোধী বিধায়কদের হয়ে ক্ষমা চান মুখ্যমন্ত্রী। আবেদন জানান, এ জন্য যাতে বিধানসভায় কোনও স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব না আনা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কথাকে মান্যতা দিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায় জানান, বিরোধী দলনেতার এদিনের আচরণের জন্য, তাঁর বিরুদ্ধে স্বাধিকারভঙ্গের প্রস্তাব আনাই উচিত ছিল। কিন্তু মুখ্য়মন্ত্রীর আবেদনের কথা মাথায় রেখে তিনি তা করতে পারছেন না। এ প্রসঙ্গে তাপস রায়কে প্রস্তাব ফিরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
পরে অবশ্য শুভেন্দু জানান, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের বিরুদ্ধে 'অনাস্থা' প্রস্তাব আনার কথা ভাবছে বিজেপি। আগামী বুধবার নিয়ম মেনে এই প্রস্তাব আনা হবে বলে জানিয়েছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।