রায় ঘোষণা হওয়ার পরেই এ নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে আক্রমণ করতে শুরু করেছেন বিরোধীরা৷ বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার বলেন, ‘‘এর জন্য দায়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল। যদি তাঁর সরকার যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করতে পারত, তাহলে আজ যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের চাকরি হারাতে হত না’’ সুকান্ত জানান, আগামিদিনে চাকরি বাতিল নিয়ে পথে নামবে বঙ্গ বিজেপি। সুকান্ত মজুমদার জানিয়ে দিলেন, রামনবমী পার হলেই পূর্ণ শক্তি দিয়ে তাঁরা পথে নামবেন৷
advertisement
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বলেন, ‘‘এক বছর হয়ে গেল, সরকার চিহ্নিত করতে পারল না কারা যোগ্য কারা অযোগ্য? কত টাকা খেয়েছে? কিছু অযোগ্য-অপদার্থ যাদের টাকা দিয়ে চাকরিতে ঢুকিয়েছে রাজ্য সরকার এবং শাসকদল, তাদেরকে রক্ষা করার জন্য যাঁরা যোগ্য তাঁদেরকে খারিজ করতে হল? সরকার দাঁড়াল অযোগ্যদের পাশে? সরকার যোগ্যদের পাশে দাঁড়াল না?’’
সেপ্টেম্বর, ২০২১৷ হাইকোর্টে সেই প্রথম সামনে আসে পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির৷ ৮১৬৩ কারচুপির সুপারিশের অভিযোগ ওঠে। সিবিআই রিপোর্ট সাবমিট করেছিলেন সিবিআই-এর প্রাক্তন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল বিল্বদল ভট্টাচার্য।
প্রসঙ্গত, এসএসসির শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। গত বছর এপ্রিল মাসে কলকাতা হাই কোর্ট ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ার পুরো প্যানেল বাতিল করে দেয়। এর ফলে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি যায়। চাকরিহারা হন একাদশ-দ্বাদশ, নবম-দশমের শিক্ষক এবং গ্রুপ ডি ও গ্রুপ-সির কর্মীরা। হাই কোর্টের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য-সহ একাধিক পক্ষ যায়৷ ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামা৷ সেই মামলারই রায়পর্ব ছিল আজ, বৃহস্পতিবার৷
রায়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানায়, কারা যোগ্য, কারা অযোগ্য এটা বাছাই করা সম্ভব নয়৷ তাই ২০১৬ সালের এসএসসি-র গোটা প্যানেলই বাতিল করার হাইকোর্টের নির্দেশ বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট৷ পাশাপাশি এসেছে একগুচ্ছ অন্য নির্দেশও৷ সুপ্রিম রায়ে জানানো হয়েছে, কাদের গত বছরের বেতন সুদসহ ফেরত দিতে হবে, কাদের নয়৷ জানানো হয়েছে, চাকরি বাতির হওয়া প্রায় ২৫, ৩০০ জন রাজ্য সরকারেরই অন্যান্য দফতরে আবেদন জানাতে পারবেন৷ সেক্ষেত্রে, তাঁদের বয়ঃসীমায় ছাড় দেওয়া হবে৷ যে সমস্ত চাকুরিজীবীরা নিজেদের পূর্বতন চাকরি ছেড়ে এই চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন তাঁরা তাঁদের পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ার আবেদন করতে পারবেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে তাঁদের পূর্বতন কাজে ফেরত পাঠাতে হবে বলে রায় সুপ্রিম কোর্টের৷