বুধবার ডিভিশন বেঞ্চে সাময়িক স্বস্তি পেয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। গ্রুপ ডি অনিয়মের নিয়োগে সিবিআই তদন্তে ৩ সপ্তাহের স্থগিতাদেশ পায় তারা। আর ২৪ ঘন্টা কাটতে না কাটতেই আবারও চাপে SSC। শিক্ষা দফতরের পর এবার রাজ্যের অর্থ দফতরের ভূমিকা নিয়েও সরব মামলাকারীরা।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়-এর একক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার স্কুল সার্ভিস কমিশনের হাতে ৫৪২ ভুয়ো নিয়োগ সংক্রান্ত নথি তুলে দেয়। নথি খতিয়ে দেখে বেতন বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে এসএসসিকে নির্দেশ হাইকোর্টের একক বেঞ্চের।
advertisement
আরও পড়ুন- ৫৪২ জনের বেতন বন্ধের নির্দেশ, গ্রুপ ডি নিয়োগে ফের মহা সমস্যায় SSC
বেতনের প্রশ্নেই মামলাকারীরা হাইকোর্টের গ্রুপ ডি নিয়োগে অনিয়ম মামলায় রাজ্যের অর্থ দফতরকে অন্তর্ভুক্ত করার আবেদন করেন। রাজ্যে গ্রুপ ডি নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয় ৪ মে ২০১৯-এ। নিয়ম মেনে এর পর আর কোনও নিয়োগ সুপারিশ পত্র কাউকেই পাঠানো যায় না। ৫৪২ গ্রুপ ডি নিয়োগ এই সময়ের পরেই হয়েছে বলে আদালতের কাছে অভিযোগ
সুপারিশ ছাড়া মধ্যশিক্ষা পর্ষদ কোনও নিয়োগপত্র দেয়নি বলে পাল্টা হলফনামা দিয়ে অবস্থান স্পষ্ট করে বোর্ড। শিক্ষা দফতরের এই দুই সংস্থা দোষারোপের নেপথ্যে কোনও অদৃশ্য হাত রয়েছে বলে সিঙ্গেল বেঞ্চ মনে করে। তাই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আগেই ২৫ ভুয়ো নিয়োগের প্রাথমিক সত্যতা খুঁজে পাওয়ার পর তাদের বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। অতিরিক্ত ৫৪২ গ্রুপ ডি বেআইনি নিয়োগের নথি যাচাই (স্ক্রুটিনি) করার পর তাদের বেতন বন্ধ করতে এসএসসি-কে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট।
এজলাসে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ডিভিশন বেঞ্চ তাঁর একক বেঞ্চের মামলার প্রক্রিয়ার ওপর কোনও স্থগিতাদেশ দেয়নি। শুধু সিবিআই তদন্তে ৩ সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছে। এই মামলায় কোনও অতিরিক্ত হলফনামা কোনও পক্ষেরই আর প্রয়োজনীয়তা নেই।ঘটনা যা ঘটেছে তা ঘটনাই থেকে যাবে।
স্পিড পোস্টে বেতন বন্ধের নোটিশ পাঠাবে কমিশন। স্পিড পোস্টের ট্রাক রেকর্ড কমিশনকে রাখতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চের শুনানির পর ৯ ডিসেম্বর ফের মামলার শুনানি করবে একক বেঞ্চ। মামলাকারীদের তরফে বৃহস্পতিবার একক বেঞ্চে আইনজীবী সুদীপ্ত দাশগুপ্ত ও বিক্রম বন্দোপাধ্যায় আদালতকে বোঝান অর্থ দফতরের প্রাসঙ্গিকতা।
ভুয়ো নিয়োগে সরকারি কোষাগারের টাকায় দীর্ঘদিন বেতন দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের অর্থ দফতরের এই প্রসঙ্গে অবস্থান জানা গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে মামলায়।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আবেদনের প্রেক্ষিতে জানান, অর্থ দফতরকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আবেদন করলে আদালত তা বিবেচনায় রাখবে। আইনজীবীদের অনেকের মতে, কমিশন ভুল করেছে এটা কার্যত মধ্যশিক্ষা পর্ষদের হলফনামাতেই স্পষ্ট। এর পর কমিশন ভুয়া নিয়োগ দেখে বেতন বন্ধ করলে, দুর্নীতির বিষয়টি আরও আদালতগ্রাহ্য হবে। আপাতত গ্রুপ ডি নিয়োগ মামলার সোমবার ডিভিশন বেঞ্চের ফলাফলের দিকে তাকিয়ে সবপক্ষ।