কলকাতা হাইকোর্টে সর্বশেষ হলফনামা দিয়ে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এই মুহূর্তে সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দিতে গেলে অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে৷ হলফনামাতেই রাজ্য সরকার বুঝিয়ে দিয়েছে,বকেয়া ডিএ দেওয়ার জন্য যে পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন, তা এখন রাজ্য সরকারের হাতে নেই৷
আরও পড়ুন: সত্যিই কি লটারি জিতে কোটি টাকা পেয়েছিলেন অনুব্রত? রহস্য ফাঁস করতে আসানসোল জেলে সিবিআই
advertisement
এই পরিপ্রেক্ষিতেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'আর্থিক প্রকল্পগুলির মাধ্যমে মানুষকে স্বাবলম্বী করে তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী, সেগুলি বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না৷ মনে রাখতে হবে সরকারি কর্মীরা সংগঠিত কর্মচারী৷ তাঁদের মাইনে যথেষ্ট৷ রাজ্যের দশ কোটি মানুষের মধ্যে কত লক্ষ সরকারি কর্মচারী আছেন? গরিব মানুষের জন্য মমতা কাজ করছেন বলেই অর্থে টান পড়ছে৷'
কৃষিমন্ত্রীর আরও সংযোজন, 'কোনটা আগে, কীসে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন সেটা বুঝতে হবে৷ একজন হয়তো সপ্তাহে একদিন কী দু' দিন মাছ কিনে খেতে পারছেন৷ আর একজন মানুষ যে প্রতিদিন হয়তো খেতেই পান না৷ তাহলে তাঁর কথা আগে ভাবতে হবে৷ এটা সবারই বোঝা উচিত৷ মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই ডিএ মিটিয়ে দেবেন৷'
আরও পড়ুন: চোখ কেন ঢাকা? ভিড়ের মধ্যেও ছোট্ট মেয়েকে দেখেই এগিয়ে গেলেন অভিষেক, মিলল চিকিৎসার আশ্বাস
যদিও শোভনদেব চট্টোপাধ্যাায়ের এই যুক্তিকে মানতে রাজি হননি রাজ্যের বিরোধী দলের নেতারা৷ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর অভিযোগ, রাজ্য সরকার আদালতে যা বলছে এবং মন্ত্রী যা বলছেন তা পরস্পর বিরোধী৷ তাঁর কটাক্ষ, 'প্রায়োরিটি ঠিক করতে এগারো বছর চলে গেল? আর কত বছর লাগবে?' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেন, 'রাজ্য সরকারের কর্মচারীদের ঘরেও তো অভাব, অভিযোগ৷ ডিএ টা তাদের প্রাপ্য৷ পরিষেবার বিনিময়ে এটা তাঁদের প্রাপ্য৷ মুখ্যমন্ত্রী বা সরকারের বোঝা উচিত সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য রাখতে হবে৷ কেন আর্থিক বিপর্যয় সেটা তো সরকারকে জানাতে হবে৷ সরকারের মাথার উপরে ঋণের বোঝা ৬ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছে গেছে৷
'
রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ গভার্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, 'শোভনদেববাবু ট্রেড ইউনিয়নের নেতা ছিলেন৷ উনি সব জেনেও এই কথা কীভাবে বলেন! কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ দেওয়ার মতো অর্থ যে সরকারের কাছে আছে, তা আমরা আদালতে প্রমাণ করে দিয়েছি৷ রাজ্য সরকারের শূন্যপদ বাড়তে বাড়তে সাড়ে চার লক্ষে পৌঁছে গিয়েছে৷ চুক্তি ভিত্তিক কর্মী, সিভিক ভলেন্টিয়ার দিয়ে কাজ করিয়ে আর পুনর্নিয়োগের মাধ্যমে এই শূন্যপদগুলি ভরানো হচ্ছে৷'