অভিযোগ পত্রে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, তিনি অন্য স্টুডেন্টদের সঙ্গে ইউনিয়ন রুমেই বসেছিলেন৷ এমন সময় তিন অভিযুক্তের একজন তাঁকে ইউনিয়ন রুমের বাইরে ডেকে নিয়ে যায়৷ কথায় কথায় বিয়ের প্রস্তাব দেয়৷ তখন নির্যাতিতা তা প্রত্যাখ্যান করে জানায়, সে আগে থেকেই সম্পর্কে রয়েছে ও আবার ইউনিয়ন রুমে ফিরে আসে৷
নির্যাতিতার অভিযোগ এর খানিকক্ষণ পরে যখন বাকিদের সঙ্গে সে-ও বেরিয়ে যেতে যাচ্ছিল, তখন ওই ছেলেটি (J)বাকি দুই ছেলে (M এবং P) কে চোখের ইশারায় ইউনিয়ন রুম বাইরে থেকে বন্ধ করে দিতে বলে৷ তারা ইউনিয়ন রুম বন্ধ করে দেয়৷ সেই সময় ইউনিয়ন রুমের ভিতরে থাকা একটি ওয়াশরুমের কাছে জোর করে তাঁকে নিয়ে যায় J এবং জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করার চেষ্টা করে৷ তখন গায়ের জোরে J-কে প্রাণপণে আটকাতে থাকেন নির্যাতিতা৷ একটা সময় প্যানিক অ্যাটাক হয়৷ অসুস্থ হয়ে পড়েন৷ তখন ভয় পেয়ে J ঘরের বাইরে থাকা M এবং P-কে ডাকেন৷
advertisement
অভিযোগ পত্রে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, তিনি বারবার তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও অভিযুক্তেরা শোনেনি৷ তারপর তিনি ব্যাগ গুছিয়ে বেরতে গেলে তিনি দেখেন কলেজের মেইন গেট টাও বন্ধ করে দিয়েছেন M এবং P৷ অভিযোগ, নিরাপত্তারক্ষীকে সেই সময় সাহায্যের জন্য বলেও নাকি কোনও সাড়া পাননি নির্যাতিতা৷
বাকি তিনজনও তাঁর কথা শোনেনি, এর পরে ‘J’ এর নির্দেশে তাকে ফের জোর করে ইউনিয়ন রুমের মধ্যে নিয়ে যায় অভিযুক্ত M এবং P৷ তার পরে সেখান থেকে গার্ড রুমে৷ গার্ড অর্থাৎ, নিরাপত্তারক্ষীকে ঘরের বাইরে বসতে বলা হয়৷ তারপরে ভিতরে তাঁর উপরে চলে নির্যাতন৷
নির্যাতিতার অভিযোগ তিনি বাধা দিতে গেলে তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়৷ বলা হয় অভিযুক্তের নাকি এত ক্ষমতা সে তার বাবা-মাকে গ্রেফতারও করিয়ে দিতে পারে৷ এরপরে ধর্ষণের সময়ের নির্যাতিতার আপত্তিকর ভিডিও-ও তাকে দেখায় অভিযুক্ত J৷ হুমকি দেওয়া হয়, যদি এই ঘটনার কথা নির্যাতিতা কারওকে জানায়, বা যখন সে যেখানে তাকে ডাকছে, যদি না যায়, তাহলে সেই ভিডিও সকলকে দেখিয়ে দেওয়া হবে৷
আরও পড়ুন: কলেজে গণধর্ষণে মূল অভিযুক্ত..কে এই মনোজিৎ জানেন? নামেই ফৌজদারি আইনজীবী, আছে আরও পরিচয়
নির্যাতিতার বয়ান অনুযায়ী, প্রথমে ইউনিয়ন রুমে তাঁর উপরে জোর করার চেষ্টা এবং তারপরে গার্ড রুমে অত্যাচার, এই গোটা ঘটনা ঘটেছে গত ২৫ জুন সন্ধে সাড়ে ৭ টা থেকে রাত ১০টা ৫০ পর্যন্ত৷ এত রাত পর্যন্ত কোনও কলেজে কী ভাবে কোনও ছাত্র বা প্রাক্তন ছাত্র থাকতে পারে এবং নিরাপত্তারক্ষীর এই ঘটনায় কী ভূমিকা ছিল? তিনি কি সত্যিই কোনও সাহায্য করেননি? গার্ড রুমের সামনে বসে ছিলেন ছাত্রনেতাদের ‘নির্দেশে’? পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায় কি কারওকে আড়াল করার চেষ্টা করছে, এই সব জানতে চাইছেন তদন্তকারীরা৷