শুক্রবার বেলা তিনটে নাগাদ হঠাৎই মেডিক্যাল স্টোরের ভিতরে এক কর্মী দেখতে পান একটা সাপ টেবিলের তলা থেকে বেরিয়ে ঘুরছে। চিৎকার করলে বাকি কর্মীরা ছুটে আসেন। জানা যায়, সাপটি বিষধর চন্দ্রবোড়া প্রজাতির। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে গোটা হাসপাতাল জুড়ে। এরই মধ্যে এক অসম সাহসী কর্মী তড়িঘড়ি সেই চন্দ্রবোড়া সাপ টিকে ধরে বোতলের মধ্যে ঢুকিয়ে সরাসরি হাসপাতাল সুপারের অফিস এ নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে খবর দেওয়া হয় বনদফতর। সন্ধ্যায় বন দফতরের হাতে চন্দ্রবোড়া সাপটি তুলে দেওয়া হয়।
advertisement
হাসপাতাল কর্মী থেকে শুরু করে অনেক রোগীর আত্মীয়দের অভিযোগ, গত বেশ কিছুদিন ধরেই হাসপাতালের বিভিন্ন জায়গা থেকে এই বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপ বেরোচ্ছে। বারবার করেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও নির্বিকার তাঁরা। গত বেশ কিছুদিন ধরেই বৃষ্টি হয়েছে, তারপরে হাসপাতালের মধ্যে যে বিশাল পুকুর রয়েছে, তার আশপাশ থেকে এই বিষাক্ত চন্দ্রবোড়া সাপ বেরোচ্ছে। মূলত পুকুরের পাশে বিভিন্ন জায়গাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীর আত্মীয়রা বিশ্রাম নেয়, রাতে ঘুমায়। এমনকি পাশেই রোগীর আত্মীয়দের জন্য রাত্রিকালীন আবাস সেখানে পর্যন্ত এই চন্দ্রবোড়া সাপ দেখতে পাওয়া গিয়েছিল।
রোগীর আত্মীয়দের দাবি, "যে কোনওদিন বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।সাপ মারা ঠিক নয় কিন্তু যেভাবে এই বিষাক্ত চন্দ্রবোড়া সাপ মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে দেখা যায় তাতে আমরা প্রত্যেকেই রাতে ভয়ে সিঁটিয়ে থাকি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত বন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে তার মাধ্যমে সাপগুলি উদ্ধার করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়া। যদি কোনদিন কোন রোগীর ওয়ার্ডে এই চন্দ্রবোড়া সাপ ঢুকে যায় তবে তো মারাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে।"
প্রসঙ্গত, ১৮৬৪ সালে তৎকালীন বৃটিশ সরকার রাজ্যজুড়ে মহামারীর জন্য, সিপাহী বিদ্রোহ পরবর্তী চূড়ান্ত রাজনৈতিক এবং সমাজের চাপে একটি হাসপাতাল তৈরীর পরিকল্পনা নেয়। সেই অনুযায়ী শিয়ালদহ মার্কেট বিল্ডিংয়ে করে তোলা হয় শিয়ালদহ মিউনিসিপ্যাল হাসপাতাল। ১৮৭৩ সালে যা পরিণত হয় শিয়ালদহ মেডিক্যাল স্কুলে। ১৮৮৪ সালে আবার নাম পরিবর্তন হয়ে ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুল এবং ১৮৯৪ সালে তা ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল কলেজ নামে পরিচিত হয়। স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৫০ সালে স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা এই মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তনী নীলরতন সরকারের নামে এই মেডিক্যাল কলেজের নাম হয় নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ।
ABHIJIT CHANDA