ডিসেম্বরে পুরসভার অধিবেশনে নস্কর হাটের বাসিন্দাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিপিকা মান্না। মেয়র ফিরহাদ হাকিম অবশ্য সময় নিয়েছেন। কেএমডি এ, কলকাতা পুরসভা এবং ভারতীয় ডাকঘরের আধিকারিকদের নিয়ে তৈরি হবে কমিটি। সেই কমিটি আগামী এক বছরের মধ্যে বাইপাস সংলগ্ন এই ধরনের ঠিকানাহীন বাসিন্দাদের নিজের বাড়ির ঠিকানা দেবেন।
advertisement
সত্যিই নস্করহাটের বাসিন্দাদের ঠিকানা না থাকায় কতটা অসুবিধা
দক্ষিণ নস্করহাটে পৌঁছতেই এক অনলাইন ফুড ডেলিভারি বয়ের নাজেহাল অবস্থার ছবি। ঠিকানা খুঁজতে তিনি হয়রান। শেষ পর্যন্ত বার বার ফোন করে মুদি দোকান থেকে নাম ঠিকানা জেনে পৌঁছতে হল ডেলিভারি বয়কে। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাসের ধারে কেএমডি-এর জমিতে বাড়ি তৈরি করেছেন, কিন্তু নিজের ঠিকানা পাননি। অনেকেই ঠিকানা পেয়েছেন কিন্তু সেটাও এলোমেলো। ব্লক ধরে গেলে কোথাও পৌঁছানো যায় তবে তাও বহু জনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর। কিন্তু নস্করহাটে সেই সুবিধাও নেই। কারণ কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের নস্করহাটে নেই কোনও ব্লক।
আরও পড়ুন : কলকাতায় আজ মরশুমের শীতলতম দিন, আগামী ক’দিন কি হাড়কাঁপানো ঠান্ডা, জানুন পূর্বাভাস
নস্করহাটের বাসিন্দা চিরঞ্জিত দাস বলেন, এই ওয়ার্ডের অন্য জায়গায় ব্লক আছে, কিন্তু নস্করহাটে সেটাও নেই, তাই চিঠি আসুক বা প্যান কার্ড-অনেকেই সময় মতো হাতে পান না। দক্ষিণ নস্করহাট হোক বা উত্তর নক্ষত্র নস্করহাট কিংবা পশ্চিম নস্করহাটের একই দশা। বাড়ির ঠিকানা খুঁজতে কার্যত হয়রান। খুঁজতে খুঁজতে বাড়ি না পেলে অনেকেই শরণাপন্ন হন পাড়ার মুদির দোকানি লক্ষ্মণ দাসের। তিনি জানান, "এখন বাড়িঘর হয়েছে নতুন নতুন। পুরনো বাসিন্দাদের চিনলেও নতুন বাসিন্দাদের নাম জানি না। তবু যতটুকু পারি, ততটুকু লোকজনকে সাহায্য করি। প্রতিদিনই বেশ কয়েকজনকে বাড়ির ঠিকানা বলে দিতে হয় দোকানদারির পাশাপাশি।"
সমস্যা আরও অনেক রয়েছে। চাকরির ইন্টারভিউর চিঠি কিংবা প্যান কার্ড বা অন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট অফিসের মাধ্যমে হলেও ঠিকানা খুঁজে না পেয়ে ফেরত চলে যায় সেই ডকুমেন্ট বা চিঠি। বাসিন্দাদের আরও সমস্যার কারণ হল একই জায়গার দুটি নাম আগে ব্যবহার করা হত। লস্করহাট এখন নস্করহাট-সেটা নিয়েও অফিশিয়াল সমস্যা হয় অনেক ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন : এই পরিবারের সদস্যরা রাঁধেন তেলেঙ্গানায়, স্নান করেন মহারাষ্ট্রে
ওই জায়গার নাম লস্করহাট নাকি নস্করহাট, তা নিয়েও বিস্তর গোল রয়েছে। এক এক জায়গায় এক এক রকম বানান, সেটা নিয়েও বিতর্ক। কলকাতা পুরসভার ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর লিপিকা মান্না জানালেন নামের বানান কিংবা এলাকার ঠিকানা কোনটাই ঠিকঠাক নেই। তবে অধিবেশনে কলকাতা পুরসভার মেয়র আশ্বাস দিয়েছেন এক বছরের মধ্যে ঠিকানা পাবেন নস্কর হাটের বাসিন্দারা। আপাতত সেই আশ্বাসেই আশার আলো দেখছেন তাঁরা সকলে।
