ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, ধান চুরি তদন্তে চঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে ইডির হাতে। ধান কেনার ক্ষেত্রে ‘শ্যাডো’ অফিসার এবং কো-অপেরেটিভ সোসাইটি যোগসাজোশে চক্র চলত বলে অভিযোগ ইডির। ধান কেনার ক্ষেত্রে ভুয়ো শিবির করা হত। সেখানে খাদ্য দফতরের ও কো-অপারেটিভ সোসাইটির সিল ব্যবহার করে জালিয়াতি করা হত। অর্থাৎ, না হত কোনও ধান কেনা শিবির। না সেখানে থাকত কোনও অফিসার বা কো অপারেটিভ সোসাইটির প্রতিনিধি।
advertisement
আরও পড়ুন: ধর্মতলার সমাবেশের জন্য স্পেশাল ‘থিম সং’ লঞ্চ করে ফেলল বিজেপি, বদলে গেল শুভেন্দুদের ‘ডিপি’
যেহেতু, কোনও অফিসার থাকত না তাই বিষয়টাকে ‘শ্যাডো’ অফিসার বলে উল্লেখ করা হচ্ছে ইডি-র ভাষায়। সবকিছু কাগজে কলমে দেখানো হত। আর সরকার নির্ধারিত টাকা পেত ভুয়ো কো অপারেটিভ সোসাইটি ও ভুয়ো চাষি। দিনের পর দিন এভাবে ভুয়ো শিবির বসিয়ে গরিব চাষিদের ঠকানো হয়েছে। এক্ষেত্রে নিয়ম কো-অপারেটিভ সোসাইটি শিবির বসাবে। কিন্তু এক্ষেত্রে এই কো অপারেটিভ সোসাইটি টাকা পেয়েও শিবির করত না। সবটাই নিয়ন্ত্রণ করত বাকিবুরের মতো মিলমালিকেরা।
গমের মতো ধান চুরি চক্রতেও মিল মালিক একই ভাবে যুক্ত ছিল বলে অনুমান। ইডি সূত্রের খবর, বেশিরভাগ চালকল মালিকের আটা কল রয়েছে, আবার আটা কল মালিকদের বেশিরভাগেরও চালকল রয়েছে। গম থেকে আটা ভাঙিয়ে রেশন ডিস্ট্রিবিউটর ও ডিলারদের কাছে সরবরাহ করা হত৷ আবার, এই অনিয়মের পাশাপাশি চালকল মালিকদের একটা বড় অংশ সরকারি সমবায় সমিতিগুলির সঙ্গে যোগসাজশ করেও কৃষকদের থেকে ধান কেনা সংক্রান্ত দুর্নীতিতেও যুক্ত ছিল বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন: শীতের শুরুতেই সাগরে ঘনাচ্ছে জোড়া ঘূর্ণি! তুমুল বৃষ্টি আসছে বলে.. জানুন আপডেট
ইডি সূত্রের দাবি, এখনও পর্যন্ত তদন্তে যা পেয়েছেন, একটা নির্দিষ্ট মোডাস অপারেন্ডি অনুসরণ করে ধান কেনার দুর্নীতি হয়েছে বলে অনুমান তাদের। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সমবায় সমিতিগুলির সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার কথা ছিল৷ তারপর যাঁদের থেকে ধান কেনা হত, সেই সব কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ধান কেনার পরিমাণ অনুযায়ী সরকারি ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাবদ টাকা জমা পড়ার কথা ছিল।
কিন্তু, বাকিবুর জেরায় স্বীকার করেছেন যে, মিল মালিকদের একটা বড় অংশ গোপনে সরাসরি এজেন্ট মারফত কম দামে কৃষকদের থেকে ধান কিনে নিত। তারপর বিভিন্ন কৃষকদের নামে সেগুলি সমবায় সমিতিতে জমা করত।
ধান জমা পরার পর মিল মালিকদের দেওয়া ভুয়ো কৃষকদের নাম এবং অ্যাকাউন্ট নম্বরে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাবদ টাকা জমা পড়ে যেত। সেইসব অ্যাকাউন্ট থেকে তারপরে হয় নগদ টাকা তুলে নেওয়া হত নয়ত ওইসব অ্যাকাউন্ট থেকে মিল মালিকদের অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার হয়ে যেত। ইডি সূত্রের খবর, বাকিবুর স্বীকার করেছে যে তিনি তাঁর অনেক কর্মী এবং তাঁর আত্মীয় পরিবার-পরিজনদের নামে থাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলোকে এই ধান কেনার কালো টাকা কামানোর জন্য ব্যবহার করেছেন।
ARPITA HAZRA