ওঁরা সকলেই বিশেষ ভাবে সক্ষম ছেলে মেয়ে। কারোর হাতে দেশের পতাকা, কারও হাতে বিশেষ বার্তা। আর একজনের হাতে দেখা যাচ্ছিল একটি ছবি। সেই ছবি বিভূতিভূষণ বন্দ্যােপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস (পথের পাঁচালি) অবলম্বনে তৈরি কিংবদন্তি পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ‘পথের পাঁচালি’ সিনেমার মুহূর্ত থেকে তৈরি করা একটি বিশেষ ছবি। কী ছিল সেই ছবিতে?
advertisement
ছবিটি অপু-দুর্গার রেল লাইন দেখতে যাওয়ার একটি ছবি। যেখামে মিশে আছে একরাশ কৌতূহল। যে কৌতূহল প্রতিদিন মনের কোনায় সঞ্চয় করছে এই বিশেষভাবে সক্ষম শিশুরা।
এই শহরের একটি স্ব-শাসিত প্রাইভেট স্কুলের স্টুডেন্ট এরা।
শিক্ষিকা নিরুপমা রায় ওদের ট্রেনার, সর্বপরি ওদের মাতৃসমা। শুধু ট্রেনার বললে কম বলা হবে, কারণ শিক্ষিকা নিরুপমা রায়ের কথায়, “এটাই আমার সেকেন্ড হোম। এদের মানুষ করতে পারা, অল্প শেখাতে পারায় আমাদের প্রাপ্তি, আমাদের চ্যালেঞ্জ৷”
কিন্তু অপু-দুর্গার রেল লাইন দেখতে যাওয়ার ছবি কেন তুলে দেওয়া হল রাজ্যপালের হাতে? উত্তরে নিরুপমা দেবী জানালেন, সামনেই দুর্গাপুজো। কাশফুল রয়েছে। সেই আমেজ আর অপেক্ষা তুলে দিলাম রাজ্যপালকে। তবে তার চেয়েও বড় বিষয় হল, ওই ছবির মধ্যে রয়েছে আকাঙ্খা, স্বপ্নপূরণের মতো বিষয়গুলি। যেগুলি আমাদের সমাজে পিছিয়ে পড়া এই শিশুগুলোর কাছে বিশেষভাবে সঞ্চিত। এই ছবির মধ্যে আমি তাদেরই খুঁজে পেয়েছি। এটা এঁকেছে আমাদের স্কুলেরই একজন স্পেশাল চাইল্ড৷’
“এই সমস্ত শিশুদের শেখানো খুব চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে শিশু মন সব বোঝে। ভালোবেসে বোঝালে এরা সব পারে ৷ এরা বড় হয় ঠিকই কিন্তু মনের বয়স শিশুর মতোই থাকে। রেললাইনে রেল দেখার কৌতূহল, খুব সহজ, সাধারণ ইচ্ছে নিয়েই ওদের মন, ওদের মানুষ করতে গিয়ে চ্যালেঞ্জ যেমন আছে সাফল্য এলে তার আনন্দও অনেক। বলতে বলতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লেন নিরুপমা দেবী।