অবশেষে সাড়ে ন' ঘ'ণ্টা পর ওই কোভিড রোগীকে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করেন চারু মার্কেট থানার সাব ইন্সপেক্টর পীযূষ কুমার বল।
চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে চারু মার্কেট থানা এলাকায় চারু অ্যাভিনিউতে।রবিবার সন্ধ্যে ৬ টা। চারু মার্কেট থানার সাব ইন্সপেক্টর পীযূষ কুমার বল তিনি শহরে টহল দিচ্ছিলেন। তিনি দেখেন চারু অ্যাভিনিউতে ফুটপাথে এক ৭৫ বয়সি বৃদ্ধ পড়ে রয়েছেন। প্রশ্ন করা হলে ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে ওই বৃদ্ধ নিজের নাম রাম রাও বলে জানান। তিনি গঙ্গাসাগর মেলা যাওয়ার জন্য এসেছিলেন। সুরাটের বাসিন্দা তিনি।
advertisement
আরও পড়ুন: কলকাতার কোন ওয়ার্ডে করোনা সংক্রমণ প্রায় ঘরে ঘরে! তালিকা দিল রাজ্য সরকার
এর পর চারু মার্কেট থানার আধিকারিকরা ও ওই সাব ইন্সপেক্টর ফোন করেন এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। ওই বৃদ্ধের কোভিড টেস্ট করানো হয় তাতে কোভিড পজিটিভ রেজাল্ট আসে। এর পর চারু মার্কেট থানার এসআই ওই বৃদ্ধকে নিয়ে যান অ্যাম্বুল্যান্স করে বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে যান রাত ৯ টা নাগাদ। কারণ ওই বৃদ্ধ কোভিড টেস্ট, অ্যাম্বুলেন্স রেডি করতে ও তাঁর পরিচয় জানা এসব করতে রাত ৯ টা বেজে যায়। এর পর বাঙুর হাসপাতাল ওই বৃদ্ধকে ভর্তি নেয়নি। অপেক্ষা করতে করতে রাত ১১ টা বেজে যায়।
এর পর প্রগতি ময়দান এলাকায় সেফ হাউজে ওই কোভিড পজিটিভ বৃদ্ধকে নিয়ে আসেন চারুমার্কেট থানার এসআই। কিন্তু ওই বৃদ্ধ একা সেরকম চলাফেরা করতে পারেন না। বাড়ির লোকও সঙ্গে নেই। এই অজুহাতে সেফ হাউসেও তাঁর ঠাঁই হয়নি। তখন রাত দেড়টা বাজে প্রায়। এর পর ওই বৃদ্ধকে রাত দুটো নাগাদ চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেও তাঁকে ভর্তি নেয়নি।
আরও পড়ুন: করোনা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে? এই নম্বরে যোগাযোগ করলেই খাবার পাঠাবে সরকার! জানুন বিস্তারিত...
এর মাঝেই পুলিশ কর্মীরা বাইপাসের একাধিক নামজাদা বেসরকারি হাসপাতালেও খোঁজ লাগান, যোগাযোগ করেন। কিন্তু কোথাও ওই রোগীকে ভর্তি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত ওই সাব ইন্সপেক্টরের পূর্ব পরিচিত এক চিকিৎসকের মাধ্যমে কোনওমতে এনআরএস হাসপাতালে ভর্তি করেন ওই সাব ইন্সপেক্টর। তখন ঘড়িতে প্রায় রাত তিনটে চল্লিশ বাজে। রাম রাওকে ভর্তি করে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। আপাতত তিনি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
চারু মার্কেট থানার পক্ষ থেকে কলকাতার বাবুঘাটে গঙ্গা সাগর মেলার ট্রানজিট ক্যাম্পে ওই বৃদ্ধর নাম ঘোষণা করে তাঁর কোনও পরিচিত বা আত্মীয়ের খোঁজ করা হয়৷ প্রশ্ন উঠছে কোভিড রোগীকে ভর্তি করতে যদি খোদ পুলিশকেই রোগী নিয়ে সাড়ে ন' ঘন্টা ধরে তিন হাসপাতাল সহ সেফ হাউজে ঘুরতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ যাবেন কোথায়?